Posts

Showing posts from March, 2014

অভিধানভুক্ত শব্দের শুদ্ধাশুদ্ধতা ও ব্যাকরণ / ড. মোহাম্মদ আমীন

অভিধানভুক্ত শব্দের শুদ্ধাশুদ্ধতা ও ব্যাকরণ অনেকে মনে করেন, অভিধানে কোনো একটি শব্দের যে কয়টি বিকল্প বানান থাকে সবগুলো শুদ্ধ। এ ধারণা ঠিক নয়। যে সকল শব্দ অতীতে ব্যবহৃত হতো কিন্তু এখন হচ্ছে না, বর্তমানে ব্যবহৃত হচ্ছে তবে শুদ্ধ নয় এবং শুদ্ধ- সবগুলো অভিধানে দেওয়া হয়। অভিধান ব্যাকরণ নয়, প্রমিত রীতিও নয়। যাঁরা অভিধান রচনা করেন তাঁরা বৈয়াকরণ হিসাবে অভিধান রচনা করেন না, আভিধানিক হিসাবে অভিধান রচনা করেন। যে সকল শব্দ প্রচলিত ছিল বা আছে সবগুলো অভিধানে না-দিলে বিভিন্ন বানানে লেখা শব্দের অর্থ-উদ্ধারে জটিলতা সৃষ্টি হতে পারে। তাই কোনো শব্দের যতগুলো বানান প্রচলিত ছিল বা আছে তা শুদ্ধাশুদ্ধ বিবেচনা না করে অভিধানে উল্লেখ করা হয়। ব্যাকরণ কী?  ব্যাকরণের অনেক সংজ্ঞা রয়েছে, অনেক বিখ্যাত লোক ব্যাকরণের সংজ্ঞা দিয়েছেন। আমি সেসব সংজ্ঞার প্রতি যথাশ্রদ্ধা পোষণ করে বলছি, ব্যাকরণ হচ্ছে ভাষা সম্পর্কে ভাষাভাষীর উপর নির্দেশিত একটি রীতি, যা তাদের স্বেচ্ছাচারিতা ও যথেচ্ছাচার হতে ভাষাকে রক্ষা করে। অভিধান দোকানের মতো। ক্রেতা সাধারণের চাহিদা অনুযায়ী দোকানকে পণ্যসজ্জিত করা দোকানির কাজ। পণ্যের ভালোমন্দ বিব

শুবাচ আমার উন্মুক্ত পাঠশালা / Ebrahim Khalilcht - শুবাচ

শুবাচ: উন্মুক্ত পাঠশালা শুদ্ধ ভাষা ও শুদ্ধ বানান চর্চার যে কোন আয়োজনে আমিও থাকতে চাই । কারণ ফেসবুকে সাধারণত এমন ভিন্ন আয়োজন কমই চোখে পড়ে যেখানে কিছু একটা ঠিক ও শুদ্ধভাবে শেখা ও লেখার জন্য নিঃস্বার্থভাবে বিনা পারিশ্রমিকে কেউ সময় ব্যয় করেন । তাই এই গ্রুপের প্রতিষ্ঠা থেকে শুরু করে আজ অবধি সংশ্লিষ্ট সকল এক্টিভিস্টদের প্রতি এবং পাশাপাশি আমাকে এমন একটি মুক্ত পাঠশালায় যুক্ত করার জন্য ওয়াদুদ স্যারের প্রতিও রইল অশেষ কৃতজ্ঞতা । আমি এই গ্রুপটিকে একটি উন্মুক্ত পাঠশালা হিসেবে গ্রহণ করলাম এবং আজ থেকে আমি এই গ্রুপের একজন নিয়মিত শিক্ষার্থী ।

শুবাচ ফোল্ডার / রাশিদুল হক - শুবাচ

শুবাচ ফোল্ডার ছোট্ট বেলায় জমাতাম দেশ - বিদেশের ডাক টিকেট আর মুদ্রা । আমার সংগ্রহশালায় - বলা ভালো , সংগ্রহ দেরাজে জমানো টিকেট এবং মুদ্রাগুলো দেখে পুলকিত হই এতদিন পরেও । কম্পিউটারে একটা নতুন ফোল্ডার করেছি । নাম দিয়েছি ‘ শুবাচ ’ । শুবাচের নির্বাচিত পোস্টগুলো ওখানে জমা রাখি । ওটা আমার শুদ্ধবানান সংগ্রহফোল্ডার । সংগ্রহ বাড়বে , সমৃদ্ধ হবে । ভবিষ্যতে ওই ফোল্ডারটিও পুলকিত করবে আমাকে এবং আরো পরে ; আমার অবর্তমানে আনন্দ দেবে আমারই কোনো আপনজনকে । শুধু আনন্দ দেবে কেন , উপকারও করবে ।

শর্ত-বিহীন ণ-ত্ব বিধান / অনিন্দ্য বড়ুয়া - শুবাচ

শর্ত-বিহীন ণ-ত্ব বিধান অণিমা আপণ খুলে ডাকে কণিকারে কণিকা গণিকা তাই সরে থাকে দূরে, কল্যাণ শুনিয়া ছিল চাণক্যের বাণী- নিপুণ বণিক পাবে অণিমার পাণি, বাণিজ্য বিপণী তার মণি-মাণিক্যের শাণিত শোণিতধারী বংশ গরবের, গৌণ হয় পণ্য যত কল্যাণের কাছে কঙ্কণে নিক্কণ তুলে কণা যবে নাচে; লাবণ্যতে শ্রেষ্ঠা তন্বী বীণা যবে যায় বেণীদ্বয় ফণী হয়ে আজানু গড়ায়, যতগুণীগণ কহে করিয়া গণনা- তুণে থাক প্রেম-বাণ হৃদয়ে ছুঁড়োনা, রক্ত অণুতে যার বেজে ওঠে বেণু ঘাঁটিতে চিক্কণ ঘুণ হয়ে থাকে স্থাণু লবণ জমাট বাধে দু’আঁখির কোণে; ফণাতোলা সর্প তারে ছাড়ে পূর্ব পূণ্যে। ভবিষ্য ভাবিয়া কল্যাণ করে তাই পণ সব ছেড়ে বাণ্যিজেই দিবে তার মন। ণ-ই হবে, লিখ যদি- শণ,কাণ,শোণ। (ণ-ত্ব বিধানের শর্ত ছাড়াও যেসব বানানে ‘ণ’ হবে তা কবিতায় ধরতে চেষ্টা করেছি।কাব্য সৌন্দর্য্ খুঁজতে গেলে আমি ফেল)। Unlike · · Share · January 15 at 12:24am near Dhaka

শিক্ষকতা ও ভিক্ষাবৃত্তি / Naeema Sehely- শুবাচ

     শিক্ষকতা ও ভিক্ষাবৃত্তি 'শুবাচ' বন্ধু Mon Shad H - এর শিক্ষকদের exam paper পরীক্ষণের ব্যাপারে তাঁর প্রশ্নের পরিপ্রেক্ষিতে আমার একজন অধ্যক্ষ sir -র মন্তব্য শুবাচ বন্ধুদের সাথে share না করে পারছি না । কথাটা - Teacher আর Beggar নাকি পেশা পরিবর্তন করতে পারে না । কথাটা সত্য বলেই আমি অন্তত মানি । শিক্ষকতা এমন একটি পেশা যা শুধু করে যাওয়ার মাঝে সব হয়ে যায় না , যোগ করতে হয় আন্তরিকতা - যোগ করতে হয় ভালোবাসা , তবেই শিক্ষকতার পেশাটি সার্থকতার দিকে এগোয় আর শিক্ষক লাভ করেন এক আনন্দময় প্রশান্তি -যার তুলনা হয় না । কিন্তু আমাদের দুর্ভাগ্য খুব কম লোকই এ পেশাকে স্বেচ্ছায় গ্রহণ করে - উপায়ন্তর না দেখে শিক্ষকতা করছে এমন লোকের সংখ্যাও নাকি কম নয় । উপায় না পেলে নাকি ভিক্ষা করে মানুষ , আর উপায়হীন হয়ে শিক্ষকতা ! জানি না কথাটা কতোটা যুক্তিপূর্ণ । ভিক্ষাবৃত্তি যেমন ছাড়া যায় না , তেমনই বুঝি শিক্ষকতার মায়াও কাটানো যায় না ।

বাংলা ভাষায় কাকের অবদান / বিধুভূষণ ভট্টাচার্য - শুবাচ

বাংলা ভাষায় কাকের অবদান কাকচক্ষু : স্বচ্ছ ও নির্মল (সে যেন গো কাকচক্ষু স্বচ্ছ দিঘিজল- রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর।) কাক-জ্যোৎস্না : রাত্রি-শেষের ম্লান জ্যোৎস্না (প্রভাত ভাবিয়া কাক-জ্যোৎস্নায় জাগিয়া যেমন পাখী গান গায়- কাজী নজরুল ইসলাম) কাকতন্দ্রা, কাকনিদ্রা : অগভীর সতর্ক ঘুম, কপট ঘুম। কাকতাড়ুয়া : পাখিকে ভয় দেখানোর জন্য রক্ষিত মানুষের প্রতিমূর্তি। কাকতালীয় : কার্যকারণহীন দু'টো ঘটনা, হঠাৎ সংঘটিত বা আকস্মিক যোগাযোগজাত কোন ঘটনা। কাকপক্ষ : কানপাটা, জুলফি (শুধু কারো মাথায় কাকপক্ষ অবশিষ্ট কারও মাথায় বা শুধু টিকি- প্রমথ চৌধুরী) কাকপদ : উদ্ধার চিহ্ন, ‍‍'' '' এই চিহ্ন। লেখার মধ্যে পরিত্যক্ত বা শূন্যস্থান বুঝানোর চিহ্ন, ××× এই চিহ্ন। ভুলক্রমে পরিত্যক্ত অক্ষরাদির স্থানসূচক চিহ্ন, ^ চিহ্ন। কাকপুচ্ছ : কাকের ন্যায় পুচ্ছবিশিষ্ট পক্ষী, কোকিল। কাকপুষ্ট : কোকিল। কাকফল : নিমফল কাকবন্ধ্যা : যে নারী একবার মাত্র গর্ভধারন করে। কাকবলি : কাকের আহারের উদ্দেশ‌্যে উৎসৃষ্ট অন্নাদি। কাকভীরু : পেঁচা কাক-ভোর : খুব প্রতঃকাল। কাকশীর্ষ : বকফুলের গাছ। কাকস্নান : কাকের ন্যায় স্বল্প পানি গা

দেশি শব্দ / শহিদুল হক -শুবাচ

দেশি শব্দ চুলায় যদি জ্বাল না বাড়ে ছাল উঠাবো মেরে মুড়ি খেলে ভুঁড়ি কমে নাক বোঁচাটা কে রে? কালা বোবা চিংড়ি খাঁদা শব্দগুলোও দেশি পয়লা,কামড়, লাঠি ডেলা শক্ত এদের পেশি। ডাগর চোখে ঘুম আসে না নৌকা নিয়ে ঘুরি টোপর কুলা ঝাঁটা খুকি শব্দ ভুরি ভুরি। ডাঁসা ডাঁসা পেয়ারা ঐ ঢিল মারোরে গাছে বইচি বনে কাঁটা খেতে কে গিয়েছে পাছে।

ব্যাকরণের হাত থেকে মরেও রেহাই নেই / বিধূভূষণ ভট্টাচার্য - শুবাচ

ব্যাকরণের হাত থেকে মরেও রেহাই নেই। 'মারা/মরে যাওয়া' 'মৃত্যুবরণ করা' মৃত্যুমুখে পতিত হওয়া' 'দেহত্যাগ করা' 'দেহরক্ষা করা' 'প্রাণ ত্যাগ করা' 'মারা পড়া' 'পরলোকগমন করা' 'স্বর্গগামী হওয়া' 'ইহধাম ত্যাগ করা' 'ভবলীলা সাঙ্গ হওয়া' 'পঞ্চত্বপ্রাপ্ত হওয়া' 'পটল তোলা' 'অক্কা পাওয়া' 'হত হওয়া' 'নিহত হওয়া' ('মারা খাওয়া' -সুনামগঞ্জের লোক মরে না 'মারা খায়') --- এক মরার কত বৈয়াকরণিক রূপ! কোন নিয়মে কোনটার মধ্যে যে আমাকে ফেলবে তা ‌ব্যাকরণই জানে! (দেহও ত্যাগ করা যায়, আবার প্রাণও ত্যাগ করা যায়!! দেহ ত্যাগ করে প্রাণ নিয়ে পালিয়ে যাবো, না কি প্রাণ ত্যাগ করে দেহ নিয়ে ঘুরে বেড়াব বুঝতে পারছি না!! -- নিরাশ্রয়ং মাং জগদীশ রক্ষঃ!!!) বি.দ্র. যে ক'টা ঝটপট মনে পড়েছে লিখেছি। আপনারা যে যেরকম 'মারা যাওয়া' জানেন লিখুন!

শুদ্ধ বানান চর্চা’ আমার ভালো লাগা / জয়নাল আবেদীন টিটো -শুবাচ

শুদ্ধ বানান চর্চায় আমার ভালো লাগ 'শুদ্ধ বানান চর্চা'য় বেশ কিছু জিনিষ আমার ভালো লাগে । এর একটি হল, পারস্পারিক শ্রদ্ধা এবং সম্মানবোধ । বিনয়ের সাথে পরস্পরকে সম্বোধন । শুদ্ধ বানান এবং বাক্য গঠনের জন্য তো বটেই, কথোপকথন, মন্তব্য করণ, জবাব দান--এগুলো দেখার জন্য আমি এই সাইট ভিসিট করি ।   শেখার একটি জায়গা পেয়ে সেখানে স্থান নিয়েছি ।

চলাচল-একদিকে চলাচল / ড. মোহাম্মদ আমীন- শুবাচ

চলাচল/একদিকে চলাচল ‘চলাচল’ অর্থ যাওয়া-আসা। কার্যটা দ্বীমুখী। অনেকে লিখেন ‘একদিকে চলাচল’। ‘একদিকে’ শুধু ‘যাওয়া’ বা ‘আসা’ যায়, কিন্তু একদিকে ‘আসা-যাওয়া’ করা যায় না। সুতরাং ‘একদিকে চলাচল’ সম্ভব নয়। লিখুন, ‘একমুখী পথ’।

সুমন-সুমনা / ড. মোহাম্মদ আমীন- শুবাচ

সুমন/সুমনা ‘সুমন’ শব্দের অর্থ ফুল; স্ত্রীলিঙ্গ-জ্ঞাপক। ‘সুমনা’ শব্দের অর্থ জ্ঞানী/দেবতা; পুংলিঙ্গ-জ্ঞাপক। [ মন্তব্য: শিশুর নাম রাখার সময় খেয়াল রাখা বাঞ্ছনীয়]

অনুরোধ / ড. মোহাম্মদ আমীন- শুবাচ

অনুরোধ/ সবিনয় অনুরোধ ‘অনুরোধ’ সবসময় বিনয়ের সাথে করা হয়। যা বিনয়ের সাথে করা হয় তা-ই ‘অনুরোধ’। অতএব ‘অনুরোধ’ লেখা যথেষ্ট। একই সঙ্গে ‘সবিনয়’ নিষ্প্রয়োজন।

অজ্ঞাত লাশ উদ্ধার / ড. মোহাম্মদ আমীন- শুবাচ

অজ্ঞাত লাশ উদ্ধার পত্রিকার খবর, “অজ্ঞাত লাশ উদ্ধার”। ‘অজ্ঞাত’ শব্দের অর্থ যা ‘জানা’ বা ‘জ্ঞাত’ নয়। কিন্তু এখানে যা উদ্ধার করা হয়েছে তা ‘অজ্ঞাত’ নয়। এটি একটি লাশ এবং তা ভালোভাবে জ্ঞাত। লাশটি কোন্‌ ব্যক্তির তা-ই এখানে অজ্ঞাত। অতএব, “অজ্ঞাত লাশ উদ্ধার” বাক্যভঙ্গিটি শুদ্ধ নয়। লিখুন, “অজ্ঞাতপরিচয় ব্যক্তির লাশ উদ্ধার”।

লাইক / মোরশেদ হাসান -শুবাচ

Morshed Hasan লাইক ...................... লেখালেখির প্রক্রিয়া এখন কতই না সহজ হয়ে গেছে । আহা ! আগেকার দিনে যখন নবীন লেখকেরা একটি লেখা ছাপানোর জন্য প্রকাশকের দ্বারে দ্বারে ঘুরে জুতোর সুখতলি ক্ষয় করে ফেলে হতাশ হয়ে বাসায় ফিরতেন এখন যুগের পরিবর্তনে টেকনোলজির সহায়তায় ঘরে বসেই আমার মতো এলেবেলে লেখক লেখা প্রকাশ করছে । জয়তু টেকনোলজী! প্রথম প্রথম যখন লিখতাম তখন লজ্জায় কাঁচুমাচু হয়ে ফেইস বুকে পোস্ট করতাম । কিছুক্ষণ পর পর ঘুরে-ফিরে পেজ ওপেন করে দেখতাম কেউ লাইক দিয়েছে কিনা । কমেন্ট দিলে সেতো আকাশের চাঁদ হাতে পাওয়া। আমার ঘরের মানুষটি উদ্বিগ্নভাবে আমাকে জিজ্ঞেস করতো, -এই কেউ তোমার লেখায় লাইক দিয়েছে? আমার জবাব দিতে ইচ্ছে করতো না । বেচারি আমার মুখ দেখে সব বুঝে নিয়ে মুখ কালো করে চলে যেতো । পরে একসময় দেখতাম দুটি লাইক জ্বলজ্বল করে জ্বলছে । আমি পরম আগ্রহে মাউস ধরে রেখে দেখতাম, কে এই দু’জন পরম বান্ধব? ও হরি- একজন হলেন তিনি এবং আরেকজন তাঁর ছোট ভাই । আমি মুখ গম্ভীর করে ঘুরে বেড়াই । যাক বেচারি শত কাজের মাঝেও মনোযোগ দিয়ে লেখা পড়ে লাইক দিয়েছে । গাঢ় ভালবাসায় আমার মন ভরপুর হয়ে যায় । একদ

বাধা ও বাঁধা / ড. মোহাম্মদ আমীন - শুবাচ

বাধা/বাাঁধা ‘বাধা’ ও ‘বাঁধা’ নিয়ে বিভ্রান্তি অনেকের মাথা গুলিয়ে দেয়। ‘বাধা’ শব্দের ইংরেজি প্রতিশব্দ obstacle/ impediment. যেমন: কাউকে ‘বাধা’ দিতে রশি অনিবার্য নয়। মুক্তিযোদ্ধারা সব বাধা সহজে অতিক্রম করে এগিয়ে গেল। অন্যদিকে ‘বাঁধা’ শব্দের ইংরেজি প্রতিশব্দ tie. যেমন: চোরটাকে রশি দিয়ে শক্ত করে বাঁধ। হাতপা বেঁধে তাকে গুলি করা হয়েছে। মনে রাখার কৌশল: ১. বাঁধতে রশি লাগে। চন্দ্রবিন্দুটাই রশি। কাউকে বাধা দিতে রশি লাগে না। তাই চন্দ্রবিন্দু নেই। ২. বন্ধ্ থেকে বাঁধ, বন্ধন>বাঁধন কিন্তু বাধ্ থেকে বাধ, বাধা, বাধন।

উঠে-ওঠে / ড. মোহাম্মদ আমীন - শুবাচ

উঠে-ওঠে উঠে ও ওঠে দুটোই ক্রিয়াপদ। অর্থের পার্থক্য না থাকলেও ব্যবহারের পার্থক্য আছে। একটি সমাপিকা ক্রিয়া অন্যটি অসমাপিকা ক্রিয়া। ‘উঠে’ পদ দিয়ে বাক্য শেষ হয় না, এ পদটির পর আর একটি ক্রিয়াপদ থাকে। যেমন: বিছানা থেকে উঠে আস। এ বাক্যে ‘আস’ সমাপিকা ক্রিয়া। তুমি উঠে এলেই আমি নিচে নামব। এখানে ‘উঠে’ অসমাপিকা ক্রিয়া। ‘ওঠে’ সমাপিকা ক্রিয়া। এটি বাক্য সম্পন্ন করে। ‘ওঠে’ পদের পর পূর্ণচ্ছেদ দেওয়া যায় কিন্তু ‘উঠে’ পদের পর অন্য একটি ক্রিয়াপদ থাকায় তা সম্ভব নয়। যেমন: সে প্রত্যহ ভোরে ওঠে। হাবিব গাছে ওঠ।

যার তার পাশে বসে না / ড. মোহাম্মদ আমীন - শুবাচ

যার-তার পাশে বসে না, কিন্তু কেন বলে না অর্থ অভিন্ন হলেও বাংলায় এমন কিছু শব্দ আছে যেগুলো খুব হিসেব করে অন্য শব্দের পাশে বসে। মনে হয় যেন যার-তার পাশে বসলে জাত যায়। ‘বাঘ’ ও ‘শার্দুল’ একই অর্থ বহন করে; তবু ‘বাঘের বাচ্চা’ হয় কিন্তু ‘শার্দুলের বাচ্চা’ হয় না। বলতে হয় শার্দুলশাবক। ‘মড়া’ ও ‘শব’ অভিন্ন অর্থ-দ্যোতক। তারপরও ‘মড়া-পোড়ানো’ বলা যায় কিন্তু ‘শবপড়ানো’ বলা যায় না; বলতে হয়ে শবদাহ। তেমনি বলা যায় না মড়াদাহ। এমন আরও কিছু উদাহরণ: বাঘের বাচ্চা কিন্তু শার্দুলশাবক কুকুরের বাচ্চা কিন্তু সায়মেয়শাবক সাদাকাপড় কিন্তু শ্বেতবস্ত্র ফুলের তোড়া কিন্তু পুস্পস্তবক মড়া-পড়ানো কিন্তু শবদাহ খবরের কাগজ কিন্তু সংবাদপত্র সাগরপাড়ি কিন্তু সমুদ্রযাত্রা লালরঙ কিন্তু লোহিতবর্ণ কালোরঙ কিন্তু কৃষ্ণবর্ণ বিয়েবাড়ি কিন্তু বিবাহবাসর ফুলের বাগান কিন্তু পুষ্পোদ্যান শুয়োরের বাচ্চা কিন্তু বরাহশাবক লক্ষ্যণীয়: জলপ্রপাত, জলযোগ, জলখাবার হয় কিন্তু পানিপ্রপাত, পানিযোগ ও পানিখাবার হয় না। কিন্তু কেন? এর কোন জবাব নেই। এরূপ আরও অনেক শব্দ বাংলা ভাষায় আছে। যদি মনে পড়ে অনুগ্রহপূর্বক জানাবেন।

পানির রঙ কত ঢঙ / ড. মোহাম্মদ আমীন - শুবাচ

পানির রঙ কত ঢঙ জলপানি: ছাত্রবৃত্তি কালাপানি: দ্বীপান্তর লালপানি: মদ্য/অ্যালকোহলজাতীয় পানীয়। সাদাপানি: সাধারণ পানি। ভারিপানি : হাইড্রোজেন যখন এর আইসোটপ ডিউটেরিয়াম দ্বারা প্রতিস্থাপিত হয় তখন ডিউটেরিয়াম ও অক্সিজেনের সমন্বয়ে গঠিত পানিকে ভারিপানি (D2O) বলে। ভারিপানি বলার কারণ হাইড্রোজেনের চেয়ে এর আইসোটপে ডিউটেরিয়ামের ভর বেশি। হাইড্রোজেন এর ভর 1.00794 কিন্তু ডিউটেরিয়াম এর ভর 2.01355 ঘোলাপানি: কাদামাখা পানি (এ পানিতে মাছ শিকার নাকি খুব সহজ)।

বাংলা ভাষার জন্য হস্ত কর্তন / ড. মোহাম্মদ আমীন - শুবাচ

বাংলা চর্চা করায় হস্ত কর্তন বাংলাভাষায় কবিতা লেখার অপরাধে তৎকালীন রাজ দরবারের লোকেরা প্রাচীন বাঙালি কবি কাহ্নপার দুই হাত কেটে ফেলেছিলেন। তারা আইন করেছিলেন রাজ দরবারের ভাষা ও সংস্কৃত ছাড়া অন্য কোন ভাষা রাষ্ট্র ও সমাজে চলবে না । এই আদেশ অমান্য করে বাংলা ভাষায় কবিতা লেখায় কাহ্নপার দুই হাত কেটে ফেলা হয়েছিল। কথা শিল্পী সেলিনা হোসেন তাঁর ‘নীল ময়ূরীর যৌবন’ উপন্যাসে লিখেছেন: “দেবল ভদ্র গর্জন করে ওঠে, না ওকে ফাঁসি-গাছে ঝোলানো হবে না। ওকে মেরে ফেলবে না। ওর শাস্তি হবে তিলে তিলে। ধুঁকে ধুঁকে মরবে ও। ওর হাত দুটো কেটে ফেল। গীত লেখার সাধ বুঝুক। তারপর আর কিছু মনে নেই কাহ্নপার। জ্ঞান ফেরার পর দেখে শবরী ওর মুখের ওপর ঝুঁকে আছে।”                 [উৎস: সেলিনা হোসেনের উপন্যাস সমগ্র-২, পৃ: ৩৮১]

বাগধারা / ড. মোহাম্মদ আমীন- শুবাচ

বাগধারা/৯: ১. কৃষ্ণের জীব (দুর্বল ও অসহায় ব্যক্তি) ২. কেল্লা ফতে (চরম সাফল্য) ৩. কোঁচা দুলিয়ে বেড়ানো (অলসভাবে দিন কাটানো, দায়িত্বহীনভাবে দিন কাটানো) ৪. কোল পোঁছা, কোল মোছা (সর্বকনিষ্ঠ) ৫. ক্যালয় ব্যালয় (চেঁচামেচি, চিৎকার) ৬. কালনেমির লঙ্কাভাগ (ফল পাওয়ার আগে ভোগের পরিকল্পনা) ৭. কানার মধ্যে ঝাপসা (মন্দের ভালো) ৮. কাটমোল্লা (ধর্মান্ধ মুসলিম) ৯. কাকভূষণ্ডি (দীর্ঘজীবী) ১০. কাক জ্যোৎস্না (ক্ষীণ চন্দ্রালোক)

গোলাপ জলের পানি / ড. মোহাম্মদ আমীন- শুবাচ

গোলাপ জলের পানি গোলাপ জলের পানি দিয়ে মা সেমাই রান্না করলেন। উপরের বাক্যটিতে ‘গোলাপ জলের পানি’ বাক্যভঙ্গিতে ‘জল’ ও ‘পানি’ পদ্বদ্বয়ের যে কোন একটি ব্যবহার করাই বিধেয়। যেমন: গোলাপ-জল দিয়ে /গোলাপ-পানি দিয়ে মা সেমাই রান্না করলেন। কোন পদ এক বার বললে যেখানে প্রয়োজন সারা হয় সেখানে অযথা দুই বার বলা বিধেয় নয়।

ব্যাকরণের সূত্র ও সীমা-পরিসীমা / ড. মোহাম্মদ আমীন - শুবাচ

ব্যাকরণের সূত্র ও সীমা-পরিসীমা যিনি খেলেন তিনি ‘খেলোয়াড়’ তা হলে যিনি লিখেন তাকে ‘লেখোয়াড়’ বললে অসুবিধা কোথায়? অনেক অসুবিধা। তখন কিন্তু যিনি জানেন তিনি জানোয়ার, যিনি আনেন তিনি আনোয়ার, যিনি শেখেন তিনি শেখোয়ার হয়ে যাবে। এমনটি হলে অনেক বিপদ। তাই ব্যাকরণের সূত্রগুলো শুধু শিখলে হবে না, কোন্ সূত্র কোথায় কীভাবে এবং কতটুক প্রয়োগ করা যাবে সে বিষয়েও ভালোভাবে জানতে হবে। নিজের ইচ্ছেমতো সূত্র মানার বিপদ নিয়ে সুকান্ত ভট্টাচার্যের ‘মেয়েদের পদবী’ শিরোনামের ছড়াটি পড়লে বিষয়টা আরও স্পষ্ট হয়ে উঠবে। মেয়েদের পদবীতে গোলমাল ভারী, অনেকের নামে তাই দেখি বাড়াবাড়ি; `আ'কার অন্ত দিয়ে মহিলা করার চেষ্টা হাসির। তাই ভূমিকা ছড়ার। `গুপ্ত' `গুপ্তা' হয় মেয়েদের নামে, দেখছি অনেক চিঠি, পোস্টকার্ড, খামে। সে নিয়মে যদি আজ `ঘোষ' হয় `ঘোষা', তা হলে অনেক মেয়ে করবেই গোসা, `পালিত' `পালিতা' হলে `পাল' হলে `পালা' নির্ঘাৎ বাড়বেই মেয়েদের জ্বালা; `মল্লিক' `মল্লিকা', `দাস' হলে `দাসা', শোনাবে পদবীগুলো অতিশয় খাসা; `কর' যদি `করা' হয়, `ধর' হয় `ধরা' মেয়ে

বলে ফলে সত্ত্বেও / ড. মোহাম্মদ আমীন - শুবাচ

বলে, ফলে/সত্ত্বেও (১) কঠোর পরিশ্রমের ‘বলে’ সে পরীক্ষায় পাশ করল। (২) কঠোর পরিশ্রম ‘সত্ত্বেও’ সে পরীক্ষায় ফেল করল। ১ নম্বর বাক্যে ‘বলে’ পদটি ‘ভালো/ প্রত্যাশিত’ অর্থ প্রকাশে ব্যবহৃত হয়েছে। ২ নম্বর বাক্যে ‘সত্ত্বেও’ শব্দটি ‘অপ্রত্যাশিত বা অনাকাঙ্খিত’ অর্থ প্রকাশে ব্যবহৃত হয়েছে। ‘বলে’ পদের স্থলে ‘ফলে’ ব্যবহার করা যায়। উপরের বাক্যদ্বয় যদি নিম্নরূপ হয় তো কেমন হয়! (৩) কঠোর পরিশ্রম ‘সত্ত্বেও’ সে পরীক্ষায় পাশ করল। (৪) কঠোর পরিশ্রমের ‘বলে’ সে পরীক্ষায় ফেল করল। ৩ নম্বর ও ৪ নম্বর বাক্যে যথাক্রমে /সত্ত্বেও/ ও /বলে/ ব্যবহার যথার্থ হয় নি। ফলে বাক্যদ্বয় প্রকৃত অর্থ প্রকাশে ব্যর্থ হয়েছে। এমন বাক্যকে শুদ্ধ বলা যায় না। অতএব বাক্যে ‘বলে, ফলে/সত্ত্বেও’ ব্যবহারে সতর্কতা আবশ্যক।

ওডিকোলন / মোহাম্মদ আমীন

ওডিকোলন  সুগন্ধি সুরাসার বিশেষ। ওডিকোলন শব্দের অর্থ কোলন নদীর জল। ফরাসি ভাষায় নামকরণ হলেও এ সুরভিত নির্যাসটি প্রথম জার্মানির কোলন নদীর কোলন শহরে প্রস্তুত হয়। তাই নাম ওডিকোলন বা কোলন নদীর জল।

‘না’ : হ্যাঁ বোঝালে কোলে, না বোঝালে টুলে / ড. মোহাম্মদ আমীন - শুবাচ

‘না’ : হ্যাঁ বোঝালে কোলে, না বোঝালে টুলে ‘না’ এমন একটি পদ যা হ্যাঁ-বাচক ও না-বাচক উভয় অর্থ প্রকাশ করে। ‘না’ পদটি বাক্যে নঞর্থ দ্যোতক হলে এটি অন্য পদ থেকে ফাঁক রেখে বসে। যেমন: বসেন না ( Don't sit), কাজটা কর না (Don't do the work) পড় না (Don't read), ভাত খেও না ( Don`t eat rice) বাক্য চারটি নঞর্থক অর্থ দ্যোতক। এ জন্য ‘না’ পদটি যথাক্রমে /বসা, করা, পড়া ও খাওয়া/ ক্রিয়াপদ থেকে ফাঁক রেখে অবস্থান নিয়েছে। ‘না’ পদটি যখন হ্যাঁ-বাচক অর্থ প্রকাশ করে তখন এটি অন্য পদের সাথে সেঁটে বসে। যেমন: বসেননা ( Please sit), কাজটা করনা (Please do the work) পড়না (read), বাপ্‌, ভাতগুলো খাওনা ( Eat the rice my dear) এখানে বাক্য চারটি হ্যাঁ-বাচক। তাই ‘না’ পদটি যথাক্রমে /বসা, করা, পড়া ও খাওয়া/ ক্রিয়াপদের সাথে সেঁটে বসেছে।

গোলাপজল -গুলাব / ড. মোহাম্মদ আমীন - শুবাচ

গোলাপজল = গুলাব গোলাপজল শব্দের অর্থ গোলাপের জল। গুল অর্থ গোলাপ এবং জল অর্থ আব। সুতরাং গুলাব =গোলপজল = গোলাপের জল। অতএব গোলাপজল = গুলাব কিন্তু গোলাপ মানে গুলাব নয়।

বাধা-বাাঁধা / ড. মোহাম্মদ আমীন - শুবাচ

বাধা/বাাঁধা ‘বাধা’ ও ‘বাঁধা’ নিয়ে বিভ্রান্তি অনেকের মাথা গুলিয়ে দেয়। ‘বাধা’ শব্দের ইংরেজি প্রতিশব্দ obstacle/ impediment. যেমন: কাউকে ‘বাধা’ দিতে রশি অনিবার্য নয়। মুক্তিযোদ্ধারা সব বাধা সহজে অতিক্রম করে এগিয়ে গেল। অন্যদিকে ‘বাঁধা’ শব্দের ইংরেজি প্রতিশব্দ tie. যেমন: চোরটাকে রশি দিয়ে শক্ত করে বাঁধ। হাতপা বেঁধে তাকে গুলি করা হয়েছে। মনে রাখার কৌশল: ১. বাঁধতে রশি লাগে। চন্দ্রবিন্দুটাই রশি। কাউকে বাধা দিতে রশি লাগে না। তাই চন্দ্রবিন্দু নেই। ২. বন্ধ্ থেকে বাঁধ, বন্ধন>বাঁধন কিন্তু বাধ্ থেকে বাধ, বাধা, বাধন।

গাথা-গাঁথা / ড. মোহাম্মদ আমীন- শুবাচ

 গাথা অর্থ /বীরত্ব কাহিনী; কবিতা, শ্লোক, গান, পালাগান/ ইত্যদি। গাঁথা অর্থ /একটির সাথে আর একটি জোড়া দেওয়ার বা সন্নিবেশ করার কাজ (যেমন মালা গাঁথা), রচনা, প্রস্তুত, নির্মাণ (ইট গাঁথা) ইত্যাদি। অর্থ আর বানানে তফাৎ থাকলেও লেখার সময় অনেকে দ্বিধায় আচ্ছন্ন হয়ে পড়েন। মনে রাখুন, মালা গাঁথার সময় সুই লাগে। সুই হচ্ছে চন্দ্রবিন্দু। কিন্তু কবিতা, বীরত্বকাহিনী বা শ্লোক লেখায় সুই লাগে না। তাই চন্দ্রবিন্দু নেই।

এক বাবার এক ছেলে / ড. মোহাম্মদ আমীন - শুবাচ

এক বাবার এক ছেলে জাফর এক বাবার এক ছেলে। বাক্যটি শুধু ভুল নয়, হাস্যকরও বটে। ছেলে একজন হোক বা দশ জন হোক- এক বাবারই হয়। এমন হাস্যকর বাক্য লেখা বা বলা উচিত নয়। লিখুন: জাফর বাবার একমাত্র ছেলে।

যৌগিক ক্রিয়া / নাঈমা শেলি - শুবাচ

      যৌগিক ক্রিয়া যৌগিক ক্রিয়া -- একটি অসমাপিকা ক্রিয়া (উঠে) ও আরেকটি সমাপিকা ক্রিয়া (আস) মিলিত হয়ে যদি বিশেষ কোনো সম্প্রসারিত অর্থ প্রকাশ করে তবে তাকে যৌগিক ক্রিয়া বলে । যেমন - কথাটা শুনে রাখ । 'কথাটা শুন' হচ্ছে স্বাভাবিক প্রয়োগ কিন্তু 'কথাটা শুনে রাখ' বললে 'তাগিদ দেওয়া' অর্থে যৌগিক ক্রিয়া হয় । 'তিনি বললেন' কে যদি বলা হয় 'তিনি বলতে লাগলেন' নিরন্তরতা অর্থে তা হবে যৌগিক ক্রিয়া কিংবা 'এখন যাও' না বলে যদি বলা হয় 'এখন যেতে পার' তবে অনুমোদন অর্থে তা হবে যৌগিক ক্রিয়া ।

উদ্দেশ-উদ্দেশ্য / ড. মোহাম্মদ আমীন - শুবাচ

উদ্দেশ/ উদ্দেশ্য রাষ্ট্রপতি জাতির উন্নয়নের উদ্দেশ্যে জনগণের উদ্দেশে ভাষণ দিলেন। উপরের বাক্যটি পড়লে বোঝা যায় ‘উদ্দেশ’ ও ‘উদ্দেশ্য’ পদদ্বয়ে বানানের মতো অর্থ দ্যোতনার পার্থক্যও রয়েছে। যেখানে কাউকে কিছু বলা হয় সেখানে উদ্দেশ করা হয়। ইংরেজি ‘address করা’ অর্থে উদ্দেশ ব্যবহৃত হয়। অ্যাডড্রেস এর সাথে ‘উদ্দেশ’ এর ধ্বনিগত মিলটা মনে রাখলে ব্যবহারে সংশয় বহুলাংশে কেটে যাবে। যেমন: *রাষ্ট্রপতি জাতির উদ্দেশে (উদ্দেশ্যে নয়) ভাষণ দিলেন। *প্রধান শিক্ষক শিক্ষার্থীদের উদ্দেশে (উদ্দেশ্যে নয়) চিঠি পাঠালেন। অন্যদিকে পরিকল্পনা (planning), লক্ষ্য (target), গন্তব্য (destination) প্রভৃতি বোঝানোর ক্ষেত্রে ‘উদ্দেশ্য’ ব্যবহার করা হয়। এখানে য-ফলা দিতেই হবে। যেমন: * রাষ্ট্রপতির উদ্দেশ্য (উদ্দেশে নয়) দেশের উন্নয়ন। * বিদ্যা অর্জনের উদ্দেশ্যে (উদ্দেশে নয়) বায়েজিদ গৃহত্যাগ করলেন। * রাষ্ট্রপতি আমেরিকার উদ্দেশ্যে (উদ্দেশে নয়) ঢাকা ত্যাগ করলেন। * রাষ্ট্রপতি ভারতের উদ্দেশ্যে (উদ্দেশে নয়) ঢাকা ত্যাগ করার পূর্বে জনগণের উদ্দেশে (উদ্দেশ্যে নয়) ভাষণ দিলেন।

উঠে-ওঠে / ড. মোহাম্মদ আমীন - শুবাচ

উঠে-ওঠে উঠে ও ওঠে দুটোই ক্রিয়াপদ। অর্থের পার্থক্য না থাকলেও ব্যবহারের পার্থক্য আছে। একটি সমাপিকা ক্রিয়া অন্যটি অসমাপিকা ক্রিয়া। ‘উঠে’ পদ দিয়ে বাক্য শেষ হয় না, এ পদটির পর আর একটি ক্রিয়াপদ থাকে। যেমন: বিছানা থেকে উঠে আস। এ বাক্যে ‘আস’ সমাপিকা ক্রিয়া। তুমি উঠে এলেই আমি নিচে নামব। এখানে ‘উঠে’ অসমাপিকা ক্রিয়া। ‘ওঠে’ সমাপিকা ক্রিয়া। এটি বাক্য সম্পন্ন করে। ‘ওঠে’ পদের পর পূর্ণচ্ছেদ দেওয়া যায় কিন্তু ‘উঠে’ পদের পর অন্য একটি ক্রিয়াপদ থাকায় তা সম্ভব নয়। যেমন: সে প্রত্যহ ভোরে ওঠে। হাবিব গাছে ওঠ।