Posts

Showing posts from January, 2017

মদন / ড. মোহাম্মদ আমীন

‘মদন’ হিন্দু পুরাণে বর্ণিত প্রেমের দেবতা। কন্দর্প; কামদেব; অনঙ্গ; অতনু; মন্মথ; মনোভব; মনসিজ; পঞ্চশর; স্মর; পুষ্পধন্বা; মকরকেতন; রতিপতি প্রমূখ কামদেবতা বা মদন নামে পরিচিত। মদন যেহেতু পুরাণে বর্নাণিত একটি নাম বিশেষ। তাই এর কোনো ইংরেজি প্রতিশব্দ নেই। অনেকে Cupid-কে মদনের সঙ্গে তুলনা করে থাকেন। কারণ কিউপিড হচ্ছে The god of love. বংশীবাদক অর্ফিয়াস, প্রেমের দেবতা। যার বাঁশী শুনলে মানুষ তো বটেই, পশুপাখি, এমনকি গাছপালা পর্যন্ত মন্ত্রমুগ্ধ হয়ে যেত।

তাঁদের কাছে আমার অনেক ঋণ আছে / অনিরুদ্ধ ইমাম

Image
ষষ্ঠ শ্রেণি থেকেই ‘বাঙলা দ্বিতীয় পত্র’ নামক একটা বিষয় ছিল আমাদের; কিন্তু ওটার প্রতি কোনোদিন কিঞ্চিৎ আগ্রহও বোধ করি নি। কারণ প্রাথমিক ও মাধ্যমিক স্তরে ইংরেজি ভাষাকে যে-গুরুত্ব দেওয়া হয়, বাঙলা ভাষার প্রতি তার ছিটেফোঁটাও দেওয়া হয় না। ফলে বাঙলা ব্যাকরণ অবহেলায় প’ড়ে থাকে অনিরুদ্ধ ইমাম নির্বিচারে। এ-রূপ অবস্থায় কারও মধ্যে ভাষাপ্রেম জেগে উঠবে, এমনটা ভাবাও বাতুলতা। আমার কথাই বলি। আমি বাঙলা ব্যাকরণের প্রতি আগ্রহী হয়েছিলাম এসএসসির অনেক পরে ( প্রায় দু’বছর তো হবে)। এক্ষেত্রে যিনি প্রভাবক হিসেবে কাজ ক রেছেন, তিনি হলেন  অনুপম হক  । সর্বপ্রথম, আমি তাঁর সংস্পর্শে এসেই বাঙলা ব্যাকরণ শেখার গুরুত্ব অনুধাবন করেছিলাম। যদিও সেটা তিনি নিজেই জানেন না। ভালবাসি ভাই আপনাকে। অতঃপর, সর্বপ্রথম বাঙলা ভাষার সৌন্দর্য আবিষ্কার করেছিলাম ড.  হুমায়ুন আজাদ  -এর লেখায়। যদিও এসএসসিতে থাকাকালীন থেকেই তাঁর লেখার সংস্পর্শে ছিলাম, কিন্তু বাঙলা ভাষার গুরুত্ব অনুধাবনের আগ পর্যন্ত এই সৌন্দর্য চোখেই পড়ে নি। মূলত, এরপর থেকেই বাঙলা ভাষার প্রেমে পড়া শুরু করি; এবং এজন্য তাঁর প্রতি যাবজ্জীবন কৃতজ্ঞ থাকব। শুধু ভাষাই নয়, আমার পুরো চ

বাংলা বানানরীতির বর্ণভেদ-১ / শাহিদুল হক

Image
আমরা এ যাবৎ বাংলা বানানের যে নিয়ম অনুসরণ করে এসেছি হালে তার ভিন্নতা পরিলক্ষিত হচ্ছে। বলা হচ্ছে বানানের ভিন্নতা ও বিভ্রান্তি দূর করার মানসে বাংলা বানানের নিয়মগুলোকে সুসংংঘবন্ধভাবে সূত্র গ্রন্থিত করে বাংলা একাডেমিকর্তৃক “প্রমিত বানানরীতি” প্রবর্তন করা হয়েছে। প্রমিত বানানরীতি ইতোমধ্যে আমাদের হাতে এসে পৌঁছেছে এবং তা সানন্দে চালু রয়েছে। প্রমিত বাংলা বানানের নিয়ম নির্ধারণের এই উদ্যোগকে সঙ্গতকারণেই সকলেই সাধুবাদ জানিয়েছেন। কিন্তু আমি পূর্বোক্ত নিয়মের সাথ ে বাংলা একাডেমিকর্তৃক চূড়ান্তভাবে নির্ধারিত বানানরীতির পার্থক্য নির্ণয় করতে গিয়ে খেই হারিয়ে ফেলছি। বাংলা বানানের সমতাবিধানের এই চেষ্টা ও সংস্কারের ফলে আমার কাছে মনে হচ্ছে আমি মনে হয় পুরোপুরি বিশৃঙ্খলার মধ্যে ঢুকে পড়ছি। আমার কাছে মনে হচ্ছে, অবৈজ্ঞানিকপন্থায় নির্ধারিত এ বানানরীতি রীতিমতো আরও জটিলতার সৃষ্টি করেছে। বাংলার স্বরূপকে বিকৃত করা হয়েছে। উচ্চারণের ভিত্তিগুলোকে উপড়িয়ে ফেলা হয়েছে অথবা তুচ্ছ তাচ্ছিল্য করা হচ্ছে। বর্ণের নিজস্ব মর্যাদাকে ক্ষুন্ন করা হয়েছে। এত সব মনে করার কারণগুলো গ্রন্থিত করার পূর্বে তা বিজ্ঞজনদের নিকট থেকে সঠিকরূপ জে

বাংলা বানানরীতির বর্ণভেদ-২ / শাহিদুল হক

Image
প্রচলিত বাংলা বানানরীতি পরিবর্তন করতে হলে তার উপযুক্ত কারণ থাকতে হবে এবং তা আমাদের জানাতেও হবে। অন্যথায় শুধু ট্যাবলেটের মতো গলধকরণ সম্ভব হবে না। আমার কাছে প্রমিত শাহিদুল হক বানানের অনেক জায়গায় ধ্বনিতত্ত্ব অনুযায়ী সঠিক বলে মনে হয়নি। জানি না আমার প্রিয় বন্ধুগণ আমার সাথে একমত পোষণ করবেন কি না। সেক্ষেত্রে আগেই যদি আমার মতের বিপরীতে উপযুক্ত মতামত পেয়ে যাই তাতে আমি খুবই উপকৃত হবো এবং ভুল থেকে বের হয়ে আসতে পারবো। এ যে আমার মায়ের ভাষা। তাকে মায়ের মতো সম্মানের সাথেই  মাথায় তুলে রাখতে চাই। বাংলা বানান রীতি পরিবর্তন করতে হলে ০১) ধ্বনিতত্ত্ব( ধ্বনিতত্ত্বে ধ্বনির গঠন,শ্রেণিবিন্যাস, উচ্চারণ রীতি, ধ্বনির পরিবর্তন,বর্ণ, সন্ধি, ণ-ত্ব বিধান, ষ-ত্ব বিধান ইত্যাদি) ০২) শব্দতত্ত্ব বা রূপতত্ত্ব( রূপতত্ত্বের আলোচ্য বিষয় হচ্ছে: শব্দরূপ, শব্দ গঠন পদ্ধতি, শব্দের প্রকার, শব্দের ব্যুৎপত্তি আবিষ্কার, পদের পরিচয়, উপসর্গ, প্রত্যয়, বিভক্তি, লিঙ্গ, বচন, ধাতু, কারক, সমাস, ক্রিয়ার কাল, অনুজ্ঞা, ক্রিয়া-প্রকাশ, ক্রিয়া-বিভক্তি প্রভৃতি) ০৩) অর্থতত্ত্ব;( অর্থতত্ত্বে আলোচিত হয় শব্দ ও বাক্যের অর্থ বিচার, অর্থের বিভিন্ন

বাংলা বানানরীতির বর্ণভেদ-৩ / শাহিদুল হক

Image
বাংলা একাডেমি প্রমিত বাংলা বানানের নিয়মে বলা হয়েছে তৎসম শব্দে ট, ঠ বর্ণের পূর্বে ‘ষ’ হয়। যেমন: বৃষ্টি, দৃষ্টি, সৃষ্টি, মিষ্টি, পৃষ্ঠা, নিষ্ঠা ইত্যাদি। কিন্তু বিদেশি শব্দে এই ক্ষেত্রে ‘স’ হবে। যেমন: স্টল, স্টাইল, স্টিমার ইত্যাদি। আমার প্রশ্ন এখানেই। কেন আমরা তৎসমের জন্য এক নিয়ম আর বিদেশি শব্দের জন্য ভিন্ন নিয়ম পোষণ করব? এর উত্তর আমি আজও খুঁজে পাইনি। যে কারণে অকারণে বর্ণের ভাঁজে ভাঁজে ঘুরে বেড়াচ্ছি। প্রিয় বন্ধুগণ, এর কোনো উত্তর আপনাদের কাছে থাকলে দ য়া করে আমাকে জানালে আমি খুবই উপকৃত হব।  আমার কাছে এই নিয়য়ের আংশিক অপ্রয়োজনীয় বলে মনে হওয়ার কারণ বিশ্লেষণ করার পূর্বে বর্ণপরিচয়ে গেলে ভালো হয়। চলুন, ঐ রাজ্যে একটু ঘুরে আসি। ক) ‘স্ট’ ও ‘ষ্ট’ মাঝের দূরত্বটা বোঝার জন্য প্রথমে ব্যঞ্জনধ্বনির উচ্চারণস্থান বিবেচনায় আনা যাক: ১। নিচের ঠোঁট ও ওপরের ঠোঁট মিলিত হয়ে উচ্চারিত ধ্বনির নাম ‘ওষ্ঠ্য‘ ২। জিভের ডগা ও ওপরের পাটির দাঁত মিলিত মিলিত হয়ে উচ্চারিত ধ্বনির নাম ‘দন্ত্য‘ ৩। জিভের ডগা ও তালু মিলিত হয়ে উচ্চারিত ধ্বনির নাম ‘তালব্য‘ ৪। জিভের পিছন ও ভিজের মূলের ঝিল্লি মিলিত হয়ে উচ্চারিত ধ্বনি ‘জিহ্বামূলীয়‘

HEART লিখে সত্যি “HURT” করা হলো / শাহজাহান চাকলাদার

Image
“HEART” লিখে সত্যিই তো “HURT” করা হলো ভাষার ইতিহাস বর্ণাঢ্য। অর্থবোধক বোধগম্য ‘শব্দ’ সমাজ-সংযোগের ক্ষেত্রে একদিনে/একবছরে তৈরি হয় নি। অসংখ্য শব্দ আমরা নিত্যকথনে ব্যবহার করি যার উত্পত্তি/শুরু নিয়ে ভাবি না। ‘প্রচলিত’ বিধায় মেনে নিই। ভূমধ্যসাগরের এপার-ওপারে সভ্যতার বিকাশের যে প্রাচীন ইতিহাসের কিছু পাঠ আমরা পাই সেখানে গ্রিক-রোমান শব্দের প্রাধান্য দেখতে পাই, যে প্রাধান্য/প্রভাব আজও প্রায় অর্ধবিশ্ব-সমাজে সপ্রতাপ সচল। সম্প্রতি টেলিভিশনে/পত্রিকায়/বদনবহিতে পাঠ্যপুস্তকবিষয়ক আলোচন ায় তোতা পাখির বুলি শুনছি “এনসিটিবি”। এটি কোন্ ধরনের “টিবি”? আমার ঘোরতর আপত্তি এই “আদ্যাক্ষর” সংকট নিয়ে। আমরা নিম্নোক্ত ‘অ্যাক্রোনিম’(লাতিন/রোমান)-এর সাথে কমবেশি পরিচিত। বাউবি (বাংলাদেশ উন্মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয়)। রাজউক (রাজধানী উন্নয়ন কতৃপক্ষ)। উনিক (উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা) ঢাবি (ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়) ইত্যাদি ইত্যাদি। গোটা পৃথিবী জুড়েই অ্যাক্রোনিমের প্রচলন আছে। তবে লেখ্য ভাষার পরিচর্যার কারণে সেসব স্ব স্ব দেশের রাষ্ট্রভাষাতেই প্রচলিত। ‘এনসিটিবি’ রোমান/গ্রিকদের মতো অতি প্রাচীন স্থাপনা/আবিষ্কার নয় যে, ত

মহাপরিচালক বাংলা একাডেমি, দয়া করে আমাদের অব্যাহতি দিন / খুরশেদ আহমেদ

Image
যে প্রতিষ্ঠানটি 'বাঙালি জাতিসত্তা ও বুদ্ধিবৃত্তিক উৎকর্ষের প্রতীক', যে প্রতিষ্ঠানটি ২০১২ সালে প্রকাশ করেছে 'বাংলা একাডেমি প্রমিত বাংলা বানানের নিয়ম'-এর পরিমার্জিত সংস্করণ, যার মুখবন্ধে আপনি নিজে আশা প্রকাশ করেছেন 'পরিমার্জিত সংস্করণ বাংলা বানানের প্রমিতকরণ ও সমতাবিধানে সহায়ক হবে', সেই প্রতিষ্ঠানটির শীর্ষপদে থেকে আপনি আপনার ফেসবুক স্ট্যাটাসে আপনার লেখায় অন্যান্য অনেক কিছুর মধ্যে  কম্পোজিশন-প্রমাদ (যেমন: 'যে মিথ্যাচার করা হচ্ছ'), ব্যাকরণিক ভুল (যেমন: 'আত্ম প্রচার'), অপ্রমিত বানা্নের ব্যবহার (যেমন: 'জরুরী'), বাংলা একাডেমি প্রকাশিত প্রমিত বাংলা বানানের নিয়মের লঙ্ঘন (যেমন: 'এসব ইতিহাস জানেনা'), সম্মানিত সেই পটভূমিতে এখন আপনার পক্ষে প্রমিত বানান কায়েমের কর্ণধার খুরশেদ আহমেদ থাকার কিংবা বাংলা একাডেমির ওই শীর্ষপদে আসীন থাকার আপনার ন্যূনতম নৈতিক অধিকার  আর অবশিষ্ট আছে বলে মনে করি না।  দয়া করে আপনি আমাদেরকে অব্যাহতি দিন, জনাব  Shamsuzzaman Khan ! ব্যক্তিদের বোঝাতে সর্বনামে অসম্মান-প্রদর্শন (যেমন: 'স্মর্তব্য যে এরাই বাঙালি মুসলমা

আটা আমার নম্বর, কামন আসেন / শামসুল আলম

Image
সম্প্রতি ফেসবুকের পৃষ্ঠাগুলো আটা, ময়দায় ভরে যাচ্ছে । কেউ কাউকে ফোন নম্বর দেয়ার সময় লিখে ata amar number. আরও লিখে kamon asen. এখানে ওরা একারের উচ্চারণ লিখে a দিয়ে । আকার হবে a, একার হবে e দিয়ে । eta amar number. kemon achen ? নেদ্রাদেবের কলা সম্মানিত সদস্য । কত রকমের কলাইতো খেয়েছেন । এবার দেখুন অন্য রকমের কলা । জনৈক শিক্ষক তাঁর সাবেক ছাত্রীকে জিজ্ঞেস করলেন, '' তোমার বাচ্চারা কী করে ?'' সেই ছাত্রী জবাবে লিখল - nedradeber kola উচ্চারনে নেদ্রাদেবের কলা  অর্থাৎ নিদ্রা দেবীর কোলে । এখানেও একার ও ইকারকে এককরে ফেলা হয়েছে । ইকার মানেই e নয় । তা হবে i দিয়ে । nidradebir kole. (এ অংশটুকু কয়মাস আগে শুবাচে পোস্টকৃত এক ভাইয়ের পোস্ট থেকে নেয়া, এজন্য তাঁর কাছে কৃতজ্ঞ) । করলা ভাগি প্রতিবেশী গ্র্যাজুয়েট ভাগ্নিকে জিজ্ঞেস করলাম, '' তোমার আম্মু আজ কি রান্না করেছেন ?'' উত্তরে সে লিখল - murgi, dal r korola vagi. ভাজির অবস্থা যদি ভাগি হয়, তাহলে আমাদেরকেই ফেসবুক থেকে ভাগতে হবে । কি কবর আমার এক বন্ধু প্রায়ই আমাকে ইনবক্সে লিখে ki kobor মানে কি খবর । তাদের এরকম লেখা দেখ

জ‍্যোতির্ময় জ‍্যোতিষ্মান পার্থসারথী বসু, অভিজিৎ অভি ও খুরশেদ আহমেদ/ ড. মোহাম্মদ আমীন

Image
দুটি শব্দের বানান নিয়ে আমার মনে একটি দীর্ঘকালীন জিজ্ঞাসা আছে। বন্ধুদের দু-চারজনকে বলেওছিলাম, একবার ফেসবুকেও লিখেছিলাম। নিজেও উত্তর খুঁজেছি, তাতে খোঁজার পরিসরটা একটু ছোট হয়েছে হয়তো, কিন্তু সন্তোষজনক মীমাংসা মেলেনি। শব্দদুটো কী-কী বলেই ফেলি। জ‍্যোতির্ময় এবং জ‍্যোতিষ্মান।জ‍্যোতি শব্দে স্-জাত বিসর্গ আছে। শব্দটি জ‍্যোতিঃ। বাংলায় বিসর্গ দেওয়া হয় না। লেখা হয় জ‍্যোতি বসু, অপূর্বজ‍্যোতি।কিন্তু জ‍্যোতিঃ যখন পূর্বপদ হয়ে অপর কোনও তৎসম শব্দের সঙ্গে যুক্ত হয় তখন সন্ধি করতেই হয় এবং তা করতে হয় সংস্কৃত বিসর্গসন্ধির নিয়ম মেনে। এইভাবে আমরা পাই জ‍্যোতিশ্চক্র, জ‍্যোতীরূপ, জ‍্যোতিরিন্দ্র, জ‍্যোতির্গময়, জ‍্যোতির্বলয়, জ‍্যোতির্ময়।   এরকম একটা সূত্র মনে পড়ছে যে অ ও আ ভিন্ন অপর কোনও স্বরের পরে যদি র্-জাত বা স্-জাত বিসর্গ থাকে এবং পরবর্তী পদের প্রথমে যদি স্বরবর্ণ বা বর্গের তৃতীয়, চতুর্থ বা পঞ্চম বর্ণ অথবা য ল ব হ থাকে তবে বিসর্গস্থানে র্-এর আগম ঘটে। (ট্রেনযাত্রায় বসে স্মৃতি থেকে এই সূত্রটি লেখা, সূত্রোল্লেখে একটু-আধটু ভুল থাকলে তা ক্ষমণীয়।) এই হিসেবে জ‍্যোতির্বলয় জ‍্যোতির্ময় প্রভৃতি শব্দকে তো বোঝা যাচ্ছে।
ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠানের নাম ওই ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠান যেভাবে লিখেন ঠিক সেভাবে লেখা সমীচীন   লেখকের   নাম   হুবহু   সংস্কৃত   বা   বিদেশি   বা   মিশ্রশব্দে   তৈরি   হয়েছে ।   অনেক   লেখক   ছদ্মনাম   ব্যবহার   করেছেন ।   তাঁরা   আবার   সন্ধি ,  সমাস   বা   মিশ্রপদ্ধতিতে   তাঁদের   নাম   অর্থবোধক   করে   তৈরি   করেছেন ।   যেমন   :  রবীন্দ্র  ( রবি +  ইন্দ্র ),  শরচ্চন্দ্র  ( শরৎ +  চন্দ্র )  আবার   কেউ   সন্ধির   আদলে   নাম   বানাননি ।   যেমন   :  শরৎচন্দ্র   চট্টোপাধ্যায় ।   অনেকেই   নিজের   নাম   সমাসজাত   করেছেন   আবার   অনেকে   করেননি ।   যেমন   :  মদনমোহন ,  ঈশ্বরচন্দ্র ,  জসীমউদদীন ,  কুসুমকুমারী ,  অক্ষয়কুমার ,  নবকৃষ্ণ । সমাসজাত   শব্দের   মাঝে অবস্থিত   ঈ - কার   ই - কার   হয়ে   যায় ।   এই   সূত্রে   কেউ   অনুসরণ করেছেন কেউ করেননি । যেমন   :  কালিদাস ,  কালীপ্রসন্ন ,  রজনীকান্ত ।   বিদেশি   নামশব্দে   ঈ - কার   না   হয়ে   সবসময়   ই - কার   হয় ,  খণ্ড - ৎ   না   হয়ে   আস্ত   ত   হয় ।   কিন্তু   অনেকে   এই   নিয়ম   মেনেছেন   আবার   অনেকেই   মানেননি ।   যেমন   : 

ভুলে ভর্তি প্রাথমিকের বই / ড. মোহাম্মদ আমীন

Image
‘সংকল্প’ জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলামের লেখা একটি বিখ্যাত কবিতা। পঞ্চম শ্রেণির পাঠ্যপুস্তকের বাংলা বইয়ে অন্তর্ভুক্ত এ কবিতাটিতে পাঁচটি ভুল করা হয়েছে। যেমন : প্রথম লাইনে আছে, ‘থাকব না কো বদ্ধ ঘরে’। এটি হবে ‘থাকব নাকো বদ্ধ ঘরে’। ‘পাতাল ফেড়ে নামব নিচে’ -এর স্থলে হবে, ‘পাতাল ফেড়ে নামব আমি’। ‘উঠব আবার আকাশ ফুঁড়ে’ বাক্যাংশের স্থলে হবে, ‘উঠব আমি আকাশ ফুঁড়ে।’ বিশ্বজগৎ-এর মাঝখানে হাইফেন (-) দেওয়া হয়েছে। অথচ একই বইয়ে এর দুই পৃষ্ঠা পরে হাইফেন ছাড়া বিশ্বজগৎ লেখা হয়েছে। তৃতীয় শ্রেণির বাংলা পাঠ্যপুস্তকে কবির নাম ‘কুসুমকুমারী দাশ’-এর ‘আদর্শ ছেলে’ কবিতায় কয়েকটি লাইন বিকৃত করে তোলা হয়েছে। যেমন : কবিতার প্রথম লাইনে বলা আছে, ‘আমাদের দেশে সেই ছেলে কবে হবে’। মূল কবিতা অনুযায়ী এটা হবে, ‘আমাদের দেশে হবে সেই ছেলে কবে’। কবিতাটির ‘মানুষ হইতে হবে’ বাক্যাংশ পাল্টে লেখা হয়েছে ‘মানুষ হতেই হবে’। এক জায়গায় ‘চায়’ কে ‘চাই’ লেখা হয়েছে। কবিতায় কবির লেখা আরও কয়েকটি শব্দ বদলে দেওয়া হয়েছে। একই বইয়ে ‘আমাদের গ্রাম’ গল্পের অনুশীলনীতে ‘গাঁয়ের’ শব্দটি ‘গায়ের’ লেখা হয়েছে। দ্বিতীয় শ্রেণির বাংলা বইয়ে লেখা হয়েছে ‘ধরনী’। শব্দটিতে