বিশেষণ প্রয়োগে শুদ্ধতা / অভিজিৎ অভি - শুবাচ

বিশেষণ প্রয়োগে শুদ্ধতা

 ১। প্রতিশব্দ সচেতনতাঃ কিছু বিশেষণের প্রতিশব্দ ব্যবহার করলে তা ভুল হয়। যেমন ছোট আর ক্ষুদ্র সমার্থক হলেও সবক্ষেত্রে শব্দ দুটি ব্যবহার করা যায় না। “সে আমার ছোট ভাই” এর পরিবর্তে “সে আমার ক্ষুদ্র ভাই” লিখলে তা অশুদ্ধ হবে।
২। নির্দিষ্ট বিশেষণঃ কিছু বিশেষণ কেবল একটি বিশেষ শব্দকেই বিশেষায়িত করে। যেমন ধবধবে, কুচকুচে ও টুকটুকে যথাক্রমে কেবল সাদা, কাল ও লাল রঙ কেই বিশেষিত করতে পারে। তাই ধবধবে লাল বা কুচকুচে সাদা অশুদ্ধ প্রয়োগ।
৩। ইতিবাচক বা নেতিবাচক বিশেষণঃ ‘মারাত্মক সুন্দর’, ‘অপূর্ব যন্ত্রণা’ ইত্যাদি অশুদ্ধ প্রয়োগ। কারণ নেতিবাচক বিশেষণ মারাত্মক সুন্দরকে বিশেষিত করতে পারে না এবং ইতিবাচক বিশেষণ অপূর্ব যন্ত্রণার বিশেষণ হতে পারে না।
৪। বাক্যে বিশেষণের সঠিক স্থানঃ কোন বিশেষণ যে পদকে বিশেষিত করে, ঠিক তার পূর্বে বসে। তাই ‘বিরাট গরু-ছাগলের হাট’ বললে গরু-ছাগলকে বিরাট বোঝায়, যদিও বক্তা হাটের বিশেষণ বোঝাতেই বিরাট শব্দটি বসিয়েছেন। সঠিক ক্রম ‘গরু-ছাগলের বিরাট হাট’।
৫। বিধেয় বিশেষণের স্ত্রীবাচকতাঃ যদি বিশেষণ, বিশেষিত পদের পরে বসে তবে তাকে বিধেয় বিশেষণ বলা হয়। এইক্ষেত্রে যদি স্ত্রীজাতীয় পদের বিশেষণ থাকে তবে স্ত্রীলিঙ্গ না হয়ে পুংলিঙ্গবাচক রূপটি ব্যবহৃত হয়। তাই ‘বৌটি খুব সুন্দরী’ এবং ‘মেয়েটি পাগলী হয়ে গেছে’ না হয়ে যথাক্রমে ‘বৌটি খুব সুন্দর’ এবং ‘মেয়েটি পাগল হয়ে গেছে’ হবে। তবে উদ্দেশ্যের সম্প্রসারক বিশেষণের ক্ষেত্রে ‘সুন্দরী বধূ’ এবং ‘পাগলী মেয়ে’ ঠিক থাকবে।
৬। বিশেষণ বোধে বিশেষ্যর ব্যবহারঃ বিশেষণের স্থলে বিশেষ্য পদের প্রয়োগ অশুদ্ধ। যেমন ‘ধূমপান নিষেধ’, ‘গাছ কাটা আইনত দণ্ড’ না হয়ে যথাক্রমে ‘ধূমপান নিষিদ্ধ’ এবং ‘গাছ কাটা আইনত দণ্ডনীয়’ হবে।

Comments

Popular posts from this blog

উপলক্ষ ও উপলক্ষ্য

পার ও পাড় / ড. মোহাম্মদ আমীন

তৎসম চেনার কৌশল / ড. মোহাম্মদ আমীন