Posts

Showing posts from February, 2016

পাসপোর্টে বানান ভুল / ড. মোহাম্মদ আমীন

নতুন পাসপোর্টে বানান ভুল প্রথম কভারের ভেতরের পৃষ্ঠায় জাতীয় সংগীতের নিচে লেখা হয়েছে ‘স্মৃতি সৌধ’  কিন্তু ২৩ পৃষ্ঠা ও ২৭ পৃষ্ঠায় লেখা হয়েছে ‘স্মৃতিসৌধ’। পাসপোর্টের ২১ পৃষ্ঠায়  লেখা হয়েছে ‘সুপ্রিম কোর্ট’ কিন্তু কোর্ট কর্তৃপক্ষ লেখেন ‘সুপ্রীম কোর্ট’।  পাসপোর্টের ২৩ পৃষ্ঠায় লেখা হয়েছে ‘বুদ্ধিজীবি’ কিন্তু শুদ্ধ হবে ‘বুদ্ধিজীবী। ৪৫ পৃষ্ঠা, ৪৬ পৃষ্ঠা ও ৪৭ পৃষ্ঠায় লেখা হয়েছে ‘ভ্রমনের’ শুদ্ধ হবে ‘ভ্রমণের’। ৪৮ পৃষ্ঠায় লেখা হয়েছে ‘তথ্যাবলী’ শুদ্ধ হবে ‘তথ্যাবলি’। এ ছাড়া আরও একটি প্রচলিত ভুল রয়েছে। যেমন : শহীদ> শহিদ।

সাক্ষাৎকার ও অভিনব নাম / ড. মোহাম্মদ আমীন

নামের আগে ‘মৃত’ লেখা হলে তা নামের অংশ হিসাবেই পঠিত হয়। তাই নামের প্রারম্ভে ‘মৃত’ লেখা অনেকে উপহাস ও অসৌজন্য মনে করেন। ব্যক্তি মারা যেতে পারে কিন্তু নাম কখনও মরে না। একজন লোক মারা গেলে তার নাম পরিবর্তন করে ফেলা মৃতব্যক্তির প্রতি নিষ্ঠুরতা। নামের আগে ‘মৃত’ লেখা নিয়ে নানা জটিলতার সৃষ্টি হয়। একটি বহুজাতিক কোম্পানির নিয়োগের সাক্ষাৎকারে কী হয়েছে দেখুন : প্রথম প্রশ্নকর্তা : তোমার নাম কী? প্রথম উত্তরদাতা : মোহাম্মদ আলিমুদ্দিন। দ্বিতীয় প্রশ্নকর্তা : বাবার নাম? উত্তরদাতা : মৃত মোহাম্মদ আফিজুদ্দিন। প্রথম প্রশ্নকর্তা : Mrito Mohammed Afhijuddin? উত্তরদাতা : জি স্যার।   দ্বিতীয় প্রশ্নকর্তা : তার মানে, তোমার বাবার নামের প্রথম অংশ হচ্ছে ‘মৃত Mrito' আঁতকে ওঠেন তৃতীয় প্রশ্নকর্তা : এমন নাম তো কখনও শুনিনি! মানুষের নামের প্রথম অংশ কীভাবে ‘মৃত’ হয়? তাহলে তো তোমার নাম ‘মৃত মোহাম্মদ আলিমুদ্দিন’ হওয়া উচিত। উত্তরদাতা : স্যার, আমি তো এখনও মরিনি। চতুর্থ প্রশ্নকর্তা : মৃত ব্যক্তির নামের আগে ‘মৃত’ লিখলে, জীবিত ব্যক্তির নামের আগে ‘জীবিত’ লেখা সমীচীন। সে হিসাবে তোমার নাম তো ‘জীবিত মোহাম্মদ আলিমুদ্দিন’। উত্ত

কৌতুক: হিজ ও হারের উপর চন্দ্রবিন্দু / শাহিদুল হক - শুবাচ

হাসেম মিয়ার ইংরেজি বানান জ্ঞান দেখে তার শিক্ষক তো হেসেই অস্থির। শিক্ষক শ্রেণিকক্ষে এসেই ছাত্রদের বললেন, হাসেম মিয়া এটি সুন্দর প্যারাগ্রাফ লিখেছে। তবে সে হিজ ও হারের উপর বড় করে চন্দ্রবিন্দু দিয়েছে!   হাশেম মিয়া দাঁড়িয়ে বললো, স্যার, বাংলাক্লাশে শিখানে হয়েছে, আমরা যেন সর্বনামে সম্মানসূচক চন্দ্রবিন্দু দিই। তাই আমি হিজ ও হারের উপরও সম্মানসূচক চন্দ্রবিন্দু দিয়েছি। হাশেম মিয়ার সম্মানজ্ঞান দেখে শ্রেণিকক্ষের সবাই হেসে উঠলো। শিক্ষক বললেন, হাশেম মিয়া, প্রথমত ইংরেজি ভাষায় চন্দ্রবিন্দুর ব্যবহার নেই। দ্বিতীয়ত সর্বনামের উপর চন্দ্রবিন্দু দিয়ে সমাজে শ্রেণিভেদ সৃষ্টি করাটাও ঠিক না। এর ব্যবহার এক সময় হতো। এখন অনেকেই করেন না। এবার গোপাল দাঁড়িয়ে বললো, স্যার, আমার চন্দ্রীয় দাদা আমাকেও মৃত ব্যক্তির নামের উপর চন্দ্রবিন্দু দেওয়ার জন্য বলেছিলেন। শিক্ষক বললেন, মৃত ব্যক্তির নামের শুরুতে চন্দ্রবিন্দু দিলে তাকে চন্দ্রীয় বলা হয় না, বলা হয় স্বর্গীয়। এখন কে স্বর্গীয় এবং কে নারকীয় তা কি আমাদের দ্বারা চিহ্নত করা সম্ভব? সুতরাং এ প্রথাও রাখা ঠিক হবে না। তোমরা শুধু তৎসম শব্দ থেকে পঞ্চবর্গীয় বর্ণের বিলোপ ঘটলে তদ্ভব

কাব্য-টাস্কি / ড. মোহাম্মদ আমীন

বাংলা সাহিত্যের একজন বিখ্যাত কবি ‘দিগন্ত ধারা সাহিত্য পুরস্কার’-এর জন্য নির্বাচিত হয়েছেন। আয়োজক সংস্থার সম্পাদক শাহজাদা সামশ কবিকে রিং করে বললেন : দাদা, পুরস্কারটি গ্রহণ করে আমাদের সম্মানিত করবেন। ওইদিন কিন্তু অন্যকোনো কর্মসূচি রাখতে পারবেন না। কবি বললেন : ডোনেশন কত? শাহাজাদা বললেন : না, দাদা, আপনাকে এক টাকাও ডোনেশন দিতে হবে না। আপনি এলেই আমরা খুশি হয়ে যাব।   ক্ষীপ্ত হয়ে উঠলেন কবি : আরে মিয়া, আমি বলছি আমাকে কত টাকা ডোনেশন দেবেন? শাহজাদা নতুন অভিজ্ঞতায় সিক্ত হয়ে রিক্তকণ্ঠে বললেন : দেখি আলাপ করে। ঘটনাটি গত সপ্তাহের। শাহজাদা শামস নিজেই বলেছেন শুবাচের আড্ডায়। তিনি নাকি জীবনে এমন কাব্য-টাস্কি আর খাননি।

চটি পড়া ও চটি পরা / আবুল কাসেম আদিল

Image
চটি 'পরতে' মনে চাইলে পরুন। কিন্তু আপনি ভুলেও চটি 'পড়তে' যাবেন না। বানানভুলের কারণে যে বড় ধরনের অর্থবিভ্রাট ঘটতে পারে, এবং এতে যে বিব্রতকর পরিস্থিতিতে পড়ার আশঙ্কা আছে— এটা বোঝানোর জন্য উপরের কথাটা বলা। 'চটি' শব্দের বিভিন্ন অর্থ আছে। এক. জুতাবিশেষকে বলে। এক্ষেত্রে 'চটি পরা' মানে চটিজুতা পরিধান করা। দুই. পুস্তিকা। এক্ষেত্রে 'চটি পরা' বলার সুযোগ নেই। বলতে হবে 'চটি পড়া'। অর্থ: পুস্তিকা পাঠ করা। সমস্যা হলো, হালে 'চটি' শব্দটির অর্থবিবর্তন ঘটেছে। এখন 'চটি' বলতে বিশেষ এক প্রকারের আপত্তিকর লেখাজোখাকে বোঝায়। সুতরাং চটি 'পরতে' চাইলে পরুন। কিন্তু চটি 'পড়তে' সাবধান! গবেষণা, প্রাতিষ্ঠানিক অধ্যয়ন, মাতৃভাষা জ্ঞান, প্রাত্যহিক প্রয়োজন, শুদ্ধ বানান চর্চা এবং বিসিএস-সহ যে-কোনো প্রতিযোগিতামূলক পরীক্ষার জন্য অতি প্রয়োজনীয় কয়েকটি লিংক : শুবাচ লিংক শুবাচ লিংক /২ শুদ্ধ বানান চর্চা লিংক/১ শুদ্ধ বানান চর্চা লিংক/২ শুদ্ধ বানান চর্চা লিংক/৩ নাটোর জেলার নামকরণ চকরিয়ার ইতিহাস ও ঐতিহ্য মানিকগঞ্জ জেলার নামকরণ ও ঐতিহ্য হ

কৌতুক: তৎনারী সমাস/ শাহিদুল হক -শুবাচ

শিক্ষক শ্রেণিকক্ষে এক ছাত্রকে জিজ্ঞাসা করলেন, সাদেক, বলতো, নাবালক কোন সমাস? সাদেক দাঁড়িয়ে বললো: নাবালক নঞ্ তৎপুরুষ সমাস স্যার। নয় বালক= নাবালক। এবার তিনি এক ছাত্রীকে প্রশ্ন করলেন, লিমা বলতো, নাবালিকা কোন সমাস? লিমার ঝটপট উত্তর: নঞ্ তৎনারী সমাস স্যার। শিক্ষক তার উত্তর শুনে অবাক হয়ে জানতে চাইলো: নঞ্ তৎনারী সমাস মানে? লিমা: স্যার, নাবালক যদি তৎপুরুষ হয় তাহলে নাবালিকা তো তৎনারীই হবে! তৎ মানে সে বা তিনি আর নারী মানে তো নারীই। অর্থাৎ তার সম্পর্কীয় নারী! শিক্ষক লিমার উত্তর শুনে বললেন, তোমার নিখুঁত যুক্তিতে আমি মুগ্ধ। তবে ভাবছি, আবার নতুন করে ব্যাকরণ লিখতে হবে। এই পুরাতন ব্যাকরণ লিঙ্গনিরপেক্ষ সমাজে আর চলবে না।

গুণ্ডার নাম্বার / ড. মোহাম্মদ আমীন

কবি নির্মলেন্দু গুণের মোবাইল নাম্বার চাইলেন আমার পরিচিত একজন।  আমার কাছে ছিল না তাঁর নাম্বার। টেলিফোন ডাইরেক্টরি অফিসে রেখে এসেছি। প্রকাশনা সংস্থার প্রশাসনিক কর্মকর্তা তুষার প্রসূনকে রিং  করি : গুণ দা, মানে নির্মলেন্দু গুণের নাম্বারটা দাও। আমি এসএমএস করে দিচ্ছি স্যার। কিছুক্ষণ পর এসএমএস এল তুষারের। তুষার লিখেছে : Gundar Number : 01717116 - - -.

শুবাচ সারাবছরটাকেই ফেব্রুয়ারি করে রাখে / বাঙালি ভাই

Image
'শুবাচ' শুধু বানান শিক্ষাই নয়। আমি মনে করি, এটি আচরণ শিক্ষারও একটি বড় ক্ষেত্রে পরিণত হয়েছে। এর সাথে জড়িত গুণীজনদের বিশেষ করে ড. মোহাম্মদ আমীন, খুরশেদ আহমেদ, আবুল কাসেম, অরবিন্দ বর্মন, শালাস্কো শাহাদত স্যারদের সাথে নাইমা সেহেলি ম্যাডামের হাসি-আনন্দের মধ্য দিয়ে বাংলা বানান শিক্ষার ব্যাপারে তাঁদের সহযোগিতামূলক মনোভাব আমাকে অবাক করে। তাঁরা যেভাবে অন্যের চাওয়া এবং জিজ্ঞাসাকে গুরুত্বসহকারে নিয়ে বিভিন্ন দলিল পত্রাদিসহ উত্তর দিতে চেষ্টা করেন। কোনো কিছুতেই তার মূল্যায়ন করা সম্ভব নয়। এটা কে বল মাতৃভাষার প্রতি অকৃত্রিম ভালবাসা থেকেই করা সম্ভব।   আমি নিঃসংকোচেই বলতে পারি যে, ফেসবুকের কল্যাণে 'শুবাচ'ই আমার সবচেয়ে বড় পাওয়া। এরচেয়ে বড় কথা হলো - শুবাচ যেন আমাদের কাছে সারা বছরটাকেই ফেব্রুয়ারি করে রাখে। শুবাচের প্রচেষ্টার ফসল ছড়িয়ে পড়ুক প্রতিটি বাঙালির হৃদয়ে। ঘরে ঘরে চালু হোক শুদ্ধ বানান ও শুদ্ধ ভাষা চর্চা। এ ভাষার মাসে ভাষার দিনে ভাষা শহিদদের পাশাপাশি শুবাচের সাথে সংশ্লিষ্ট সকল ভাষাপ্রেমী ভাই-বোন এবং গুণীজনদের প্রতি আমার বিনম্র শ্রদ্ধা।শুবাচ এর সঙ্গে কণ্ঠে মিলিয়ে বল

ভাষা নিয়ে মজার ধাঁধা / সনোয়ার রাসেল -শুবাচ

Image
ভাষার মাস, ভালবাসার মাস ফেব্রুয়ারি। এই ভাষার প্রতি ভালবাসা যে কেবল সমাজের শিক্ষিত ভদ্রজনের ভিতরই প্রবাহিত এ কথা ঠিক নয়। আমাদের প্রান্তিক জনগোষ্ঠীতেও তাই দেখি ভাষা নিয়ে মজার সব খেলা, যা কিনা পুঁথিগত ব্যাকরণের মত দাঁত ভাঙ্গা নয়, কিন্তু অন্তরে গেঁথে যাওয়ার মতই সহজ। দুটো উদাহরণ দেই। ময়মনসিংহ অঞ্চলের একটি প্রবাদ, ক্ষেত্রবিশেষে ধাঁ ধাঁ হিসাবেও ব্যবহৃত হয়ঃ লাগ কইলেই লাগে না, বেলাগ কইলেই লাগে,কলায় চলায় লাগে না, লেম্বুতে টেম্বুতে লাগে!কি গভীর ভাবার্থ, একই সাথে ব্যাকরণ। ভাবার্থ হল, যেখানে ঝামেলা হওয়ার কথা সেখানে হয় না, অথচ যেখানে আশংকা নেই সেখানেই লেগে যায় ঝামেলা। আর ব্যাকরণ হল, লাগ বলতে দুই ঠোঁট লাগে না, বেলাগ বলতে গেলে 'ব' উচ্চারণ করতে হয়, তখন ঠোঁটে ঠোঁটে লেগে যায়। একইভাবে কলা ও চলায় লাগে না, অথচ লেম্বুতে 'ম' ও 'ব' দুটোই থাকায় লাগে। অর্থাৎ ওষ্ঠ বর্ণ। আরেকটি হলঃ গেছলাম গৌরীপুর, দেইখ্যা আইছি দুই চুর,দুই চুরে বাড়া বান্দে, ধাপ্পুর ধুপ্পুর।এই ধাঁ ধাঁ টির উত্তরও হলো দুই ঠোঁট। ধাপ্পুর ধুপ্পুর উচ্চারণ করতে গেলে দুই ঠোঁট তো লাগবেই! আজ আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবসের প্রাক

অর্থনাশ/ ড. মোহাম্মদ আমীন

হলি (holy) অর্থ পবিত্র এবং ডে (day) অর্থ দিন। সুতরাং হলিডে অর্থ পবিত্র দিন। কিন্তু বাংলায় হলিডে অর্থ ছুটির দিন (close day) । খ্রিস্টান সংস্কৃতিতে রবিবার পবিত্র দিন (holiday/holy day)। এজন্য রবিবার তাদের কাছে হলিডে, মূলত হলিডে বলতে ‌'রবিবার'-কে বুঝায়, ছুটির দিন নয়। পবিত্রদিনে প্রার্থনা গৃহে যাবার জন্য রবিবার অনেক কার্যালয় বন্ধ রাখা হতো। তাই হলিডে, পবিত্রদিন আর রবিবার সমার্থক হয়ে যায়। ব্রিটিশ শাসনামলে অন্যান্য ব্রিটিশ শাসিত উপনিবেশের ন্যায় আমাদের দেশেও খ্রিস্টান সংস্কৃতি ছড়িয়ে পড়ে। ফলে তাদের পবিত্রদিন বা রবিবার হয়ে যায় আমাদের ছুটির দিন- এটি যে বারই হোক না। কিন্তু রবিবার আমাদের পবিত্র দিন নয়। এভাবে নানা কারণে শব্দের অর্থনাশ হয়, নতুন অর্থ সৃষ্টি হয়। না হলে বন্ধের দিন (close day) কীভাবে পবিত্রদিন (holiday) দিন হয়?

সমালোচনা / ড. মোহাম্মদ আমীন

সমালোচনা শাসন করা তারই সাজে সোহাগ করে যে- বাণীটি সমালোচনার অন্তর্নিহিত প্রতিভূ।  সমাদরের সঙ্গে যে আলোচনা- সেটিই হচ্ছে সমালোচনা। অন্যভাবে বলা যায়, যে আলোচনায় সমাদর থাকে সেটিই সমালোচনা। সমাদর মানে সহমর্মিতামূলক আদর, এখানে যাই থাকুক বা যা-ই বলা হোক না কেন, সবটিই হবে মঙ্গলার্থক, সহমর্মিতাপ্রসূত, বিদ্বেষহীন এবং পরামর্শমূলক। এরূপ আদর বা সমালোচনায় থাকে অকৃত্রিম ভালবাসায় মুগ্ধ প্রাণোচ্ছল বর্ণন। সমালোচনা করতে হলে অনেক গভীর মন আর উদার হৃদয়ের প্রয়োজন হয়। যার সমালোচনা করা হয়, তার  প্রতি গভীর মমত্ববোধ না-থাকলে কেউ কারও সমালোচনা করতে পারে না। প্রকৃত বন্ধুই কেবল সমালোচনা করতে পারে। মানবেন্দ্র পালের ভাষায় বলা যায়, সম+ আলোচনা= সমালোচনা। অর্থাৎ দোষালোচনা + গুণালোচনা= সমালোচনা। সমালোচনায় একজনের প্রকৃত আচরণ পরম মমতায় এবং দুরদৃষ্টিসম্পন্ন বিচারকের চুলচেরা বিশ্লেষণের মতো। সন্তানের প্রতি একজন বিচক্ষণ মায়ের শাসন সমালোচনার একটি দিক। কিন্তু এখন সমালোচনার সে অর্থ ও প্রয়োগ কোনোটা আর চোখে পড়ে না। এখন অধিকাংশ ক্ষেত্রে সমালোচনার নামে যা হয় সেটি গাল্যচোনা। সূত্র : ড. মোহাম্মদ আমীন, বাংলা শব্দের পৌরাণিক উৎস,

কৌতুক : ডা. এবং চি. / শাহিদুল হক -শুবাচ

ডা. হিকমত আলীকে ডাকাতি করার অপরাধে গ্রেফতার করে আদালতে হাজির করা হয়েছে।   তার নামের পূর্বে ডা. লেখা দেখে বিজ্ঞ বিচারক তাকে জিজ্ঞাসা করলেন : আপনি ডাক্তারি পেশা ছেড়ে ডাকাতি করতে গেলেন কেন?   ডা. হিকমত আলী বলল : মাননীয় আদালত, আমি তো ডাক্তার নই। সুতরাং ডাক্তারি করতে যাব কেন?   - তাহলে নামের পূর্বে ডা. লেখেন কেন? বিজ্ঞ বিচারক জানতে চাইলেন। - আমি একজন বিখ্যাত ডাকাত! ডাকাতি আমার একমাত্র পেশা। সুতরাং সংক্ষেপে ডাকাতকে ডা. লিখি। এতে কোনো সমস্যা বা ভুল দেখছি না, মাননীয় আদালত। ডা. হিকমত আলী আদালতকে জানাল। - ডাক্তারগণ নামের পূর্বে সংক্ষেপে ডা. লিখে থাকেন। সুতরাং ডা. দ্বারা তো ডাক্তারই বোঝায়! ডাকাত নয়! বিজ্ঞ বিচারক বললেন। - মাননীয় আদালত, এটা মোটেও ঠিক না। ডাক্তারের বাংলা শব্দ চিকিৎসক। তারা বাংলায় নাম লেখার সময় ডাক্তারের বাংলা শব্দ চিকিৎসককে সংক্ষেপে চি. লিখতে পারে। তা না লিখে অযৌক্তিকভাবে ডা. লিখে থাকে- যা মারাত্মক ভুল। পক্ষান্তরে ডাকাত বাংলা শব্দ। এর বাংলায় সংক্ষিপ্তরূপ ডা. হবে।   মহামান্য আদালত, আমি ডাকাত হলেও জাতে মাতাল তালে ঠিক। মাতৃভাষার সাথে কখনও বেইমানি করি না। আর ডাকাতি করা অপরাধ হল

মিষ্টিমুখ / যুবায়ের আহমাদ - শুবাচ

Image
'মিষ্টিমুখ' আর 'মিষ্টি মুখ' আদৌ এক জিনিস নয়। শব্দ দুটোর অর্থে ভিন্নতা রয়েছে। 'মিষ্টিমুখ' মানে মিষ্টি খাওয়ানোর পদ্ধতিবিশেষ। এর আক্ষরিক অর্থ ‌ মুখে মিষ্টি তুলে দেওয়া। আর 'মিষ্টি মুখ' হলো ওই মুখ, যা দেখতে মিষ্টি, মানো সুন্দর, আকর্ষণীয়। অর্থাৎ মায়াবী মুখ। বিষয়টি আরও পরিষ্কাররূপে বোঝানোর জন্যে মিষ্টি একটা উদাহরণ দিচ্ছি : "কামাল সাহেব নববধূর মিষ্টি মুখ দেখে মিষ্টিমুখ করানোর কথা ভুলে গেলেন!"

কৌতুক সমাচার / শাহিদুল হক- শুবাচ

Image
আবুল কাশেম তার শিশুপুত্রের নাম রাখলো অধ্যাপক আবুল হাশেম। আকিকা ও দোয়ামাহফিলে শিশু সন্তানের নামের পূর্বে যে শব্দই বসুক না কেন তা নাম হিসেবেই বা নামের অংশ হিসেবেই গণ্য হবে। তাকে প্রশ্ন করা হল, ছেলে যদি বড় হয়ে অধ্যাপক হয়, তখন কী হবে? আবুল কাশেমের সোজা উত্তর, তখন সে অধ্যাপক আবুল হাশেম অধ্যাপক লিখবে। মূলত কোন বিষয়েই মূর্খদের সাথে তর্ক করা ঠিক না। পূর্বে অধ্যাপক লাগানোর বিষয়ে একজন আপত্তি জানিয়ে তাকে বোঝানোর চেষ্টা করল যে, এটা ঠিক না। কারণ, এটা একটি পদের নাম। কিন্তু আবুল কাশেম তার সিদ্ধান্তে অনড়। সে বলল, অনেকেই নামের পূর্বে এ জাতীয় শ্রুতিমধুর শব্দ নাম হিসেবেই ব্যবহার করছে। তাই সেও তার সন্তানের নাম হিসেবে এটাই রাখবে। সে আর কোন যুক্তি মানতে রাজি নয়। তার যুক্তিতে পদবী নাকি নামের পরে বসে । মূল নামের

বাগর্থ কৌতুক : অভিজিৎ অভি- শুবাচ

Image
একটা কৌতুক দেখি- স্যার: “গাইবান্ধা কোথায়?” ছাত্র: “গাই গোয়ালঘরের খুঁটিতে বান্ধা।” এই কৌতুকের মজাটা হল স্যার প্রশ্নে যা বোঝাতে চেয়েছেন, ছাত্র তা না বুঝে অন্য অর্থ বুঝেছে। শিক্ষক গাইবান্ধা জেলার ভৌগোলিক অবস্থান জানতে চেয়েছেন আর ছাত্র বুঝেছে ‘গরু বাঁধা কোথায়?’। এরকম প্রায়ই হয়। একটা বুঝতে গিয়ে আরেকটা বুঝি। ধরা যাক ব্যাকরণ শিক্ষক জানতে চাইলেন “ধাতু কী?”ছাত্র উত্তর দিল “তাপ ও বিদ্যুৎ সুপরিবাহী মৌলকে ধাতু বলে।” এখানেও একই সমস্যা। ব্যাকরণে ক্রিয়াপদের ক্ষুদ্রতম অংশকে ধাতু বলে। ব্যাকরণ শিক্ষক তাই জানতে চান। ছাত্র আবার রসায়ন পড়ে একই ‘ধাতু’ শব্দের এক ভিন্ন সংজ্ঞা শিখেছে, সে সেই সংজ্ঞা মনে করে এই উত্তর দিয়েছে। কিন্তু এই ধাতু তো আর সেই ধাতু নয়! ছাত্রদের যে ব্যাকরণের পাশাপাশি ইংরেজি, গণিত, পদার্থবিজ্ঞান, রসায়ন এতকিছু পড়তে হয় তা কি আর ব্যাকরণ শিক্ষক বোঝেন? এমন কিছু উদাহরণ: ১। বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়ের ‘কমলাকান্ত’ একটি মজার চরিত্র। একবার সাক্ষ্য দিতে গিয়ে সে আদালতে যায়। সেখানে উকিল তাকে নানা প্রশ্ন করে, আর অপদস্থ হয়। যেমন: উকিল: তোমার পেশা কী? কমলাকান্ত: আমার আবার পেশা কী?  

আফ্রিদি / ড. মোহাম্মদ আমীন

‘আফ্রিদি’ মোগল ও ব্রিটিশ শাসনের শেষ যুগে ভারত-আফগানিস্তান সীমান্তে বসবাসকারী যুদ্ধপ্রিয় একটি উগ্র উপজাতিবিশেষ। এ জাতি খ্রিস্টপূর্ব সময় হতে উপমহাদেশের বিভিন্ন জায়গায় বসবাস করে আসছিল। মোগল ও ব্রিটিশ যুগের শেষদিকে তারা ভারত-আফগানিস্তান সীমান্তে একত্রিত হয়ে বসবাস শুরু করে। আফ্রোদিতি, Aphrodite ছিল গ্রিকদের প্রেমের দেবী। রোমানদের প্রেমের দেবী Venus. গ্রিকদের প্রেমের দেবি কীভাবে উপমহাদেশের এসে যুদ্ধপ্রিয় একটি জাতির নাম ধারণ করল? আলেকজান্ডারের ভারত অভিযানকালে উপমহাদেশের যে জনগোষ্ঠী যুদ্ধপ্রিয় ও উগ্র ছিল, তাদের ‘ আফ্রিদি’ নামে ডাকা শুরু হয়। যুদ্ধ আর প্রেম মূলত অভিন্ন সূত্রে গাঁথা একটি ভিন্ন প্রত্যয়। প্রেমের জন্য যুদ্ধ হয়, প্রেম ছাড়া কোনও কোনও কালে বিশ্বে যুদ্ধ সংঘটিত হয়নি। হোক না তা নারীর জন্য, ভূমি, সম্পদ বা ধর্মের জন্য। ধর্মপ্রেমীরা ধর্মের জন্য, দেশপ্রেমীরা দেশের জন্য আর সম্পদপ্রেমীরা সম্পদের জন্য যুদ্ধ করে। গ্রিক পুরাণে নারী হেলেনের জন্য কী ভয়ঙ্কর যুদ্ধ সংঘটিত হয়েছিল তা কমবেশি আমাদের জানা আছে। প্রতিনিয়ত যে যুদ্ধ, হানাহানি বা রক্তারক্তি হচ্ছে তার মূলে রয়েছে প্রেম। যেমন : দলপ্রেম, ভূমিপ্রে