Posts

Showing posts from May, 2015

রমণীয় কৌতুক: লিঙ্গ বিতর্ক / শাহিদুল হক

রমণীয় কৌতুক: লিঙ্গ বিতর্ক এক ব্যক্তি ইউনিয়ন ডিজিটাল সেন্টারে গিয়েছিল একটি ফরম পূরণ করার জন্য। সেখানে কর্মরত তথ্য পরিচালিকার সাথে তার আলোচনার বিষয়টি নিম্নে তুলে ধরা হল। তথ্য পরিচালিকা: আপনার নাম কী? সেবাগ্রাহক: দবির মিয়া তথ্য পরিচালিকা: আপনার পিতার নাম কী? দবির মিয়া: পিতার নাম-খবির মিয়া। তথ্য পরিচালিকা: আপনার লিঙ্গ কী ? দবির মিয়া: এইবার তো বিপদে ফেললেন। আপনাকে যে আমি কীভাবে আমার লিঙ্গ পরিচয় দেব, তা তো ভেবেই পাচ্ছি না। তথ্য পরিচালিকা: এতে ভাবনার কী হলো ? দবির মিয়া: আপনি আমার নাম শোনার পরেও লিঙ্গ পরিচয় জানতে চেয়েছেন। সুতরাং এটা কি ভাবনার বিষয় না ? তথ্য পরিচালিকা: মোটেও ভাবনার বিষয় না। এখানে দুটো ঘর আছে। এর যে কোন একটিতে টিক চিহ্ন দিয়ে আপনি আপনার লিঙ্গ পরিচয় জানিয়ে দিলেই তো পারেন। দবির মিয়া: আমার নাম লেখা বা বলার পরেও আমার লিঙ্গ বা নিদর্শন ব্যক্ত হচ্ছে না, আবার পৃথক করে লিঙ্গ পরিচয় দিতে হবে, তা হলে তো এটা দশম আশ্চর্যজনক ঘটনা! বরং আপনি পুরুষ-মহিলা নিয়ে ঘাঁটাঘাটি না করে লিখে দিন যে, আমার ‘প্রথম লিঙ্গ।’ তথ্য পরিচালিকা: আবার ‘প্রথম লিঙ্গ’ কেন? দবির মিয়া: শুনেছ

রমণীয় কৌতুক : নারীষ্কার / শাহিদুল হক

রমণীয় কৌতুকঃ নারীষ্কার এক বালিকা উচ্চবিদ্যালয়ের বার্ষিক ক্রীড়া প্রতিযোগিতায় ফাহিমা ‘ক’ বিভাগে ২০০ মিটার দৌড়ে প্রথম স্থান অধিকার করায় তাকে তার নারীষ্কার গ্রহণের জন্য মাইকে আহ্বান করা হল: “এবার ‘ক’ বিভাগে ২০০মিটার দৌড় প্রতিযোগিতায় প্রথম স্থান অধিকার করে নারীষ্কার গ্রহণের জন্য মঞ্চে আসছেন ৯ম শ্রেণির ছাত্রী ফাহিমা। সবাই তার জন্য জোরে একটা করতালি দেন”। এই ঘোষণার সাথে সাথে চারিদিকে তুমুল করতালি বেজে উঠল। ফাহিমা তার নারীষ্কার গ্রহণ করে আসনে ফিরে গেল। আমি ‘নারীষ্কার’ শব্দটি এই প্রথম শুনতে পেলাম। তাই কৌতুহলবশত ক্রীড়া প্রতিযোগিতার আয়োজকদের মধ্যে একজনের কাছে জানতে চাইলাম, আপা, নারীষ্কার কী? আপা হেসে বললেন, “ও সেই কথা। পুরুষতান্ত্রিক সমাজের রন্ধ্রে রন্ধ্রে যে বৈষম্য লুকিয়ে আছে তা উপড়িয়ে ফেলার জন্য আমরা পুরস্কারের পরিবর্তে নারীদেরকে নারীষ্কার দেওয়ার প্রচলন শুরু করেছি। পুরষ্কারের মধ্যে পুরুষের এই একক আধিপত্য আর মেনে নেওয়া হবে না। আমি বললাম, ওটা তো পুরুষ্কার না, পুরস্কার। আপা বললেন, রাখেন এসব যুক্তি। শুনতে তো পুরুষ+কারই শোনা যায়। কেন আমরা পুরুষকার পুরুষকার করে আপ্লুত হবো।

দাম ও দরদাম / ড. মোহাম্মদ আমীন

দাম/দরদাম মহাবীর আলেকজান্ডারের আমলে গ্রিকদের একপ্রকার রৌপ্যমুদ্রার নাম ছিল দ্রাখমে (drachme)। আলেকজান্ডার ভারত আসার পর উত্তর-পশ্চিম ভারতের বিশাল একটা এলাকা গ্রিক বা যবনদের দখলে চলে যায়। তারা দীর্ঘদিন ওই এলাকা শাসনও করে। তখন দ্রাখমে দিয়েও দ্রব্যাদির মূল্য পরিশোধ করা যেত। ‘দ্রাখমে’ শব্দটির বানান ও উচ্চারণ কিছুটা পরিবর্তিত হয়ে সংস্কৃতে ‘দ্রহ্ম’-রূপ ধারণ করে। এ ‘দ্রহ্ম’ শব্দ থেকে আসে ‘দম্ম’। দম্মের প্রাকৃত রূপের মধ্য দিয়ে আমরা পাই ‘দাম’। যার অর্থ মূল্য। আবার ‘দর’ শব্দের অর্থও মূল্য। ‘দাম’ শব্দের পূর্বে ‘দর’ যুক্ত হয়ে গঠিত হয়েছে ‘দরদাম’। গ্রিক ভাষা হতে আগত ‘দাম’ এখন সংস্কৃত ‘মূল্য’ শব্দের চেয়ে অধিক জনপ্রিয়। ------------ সূত্র : বাংলা শব্দের পৌরাণিক উৎস, ড. মোহাম্মদ আমীন।

পরবর্তীতে / ড. মোহাম্মদ আমীন

পরবর্তীতে/আগামীতে কেন লিখব না ‘পরবর্তী- ’ মানে পরের সময়, কাল, বস্তু, ধারণা- বা অন্য যে কোনও কিছু হতে পারে। তা হলে ‘পরবর্তীতে’ শব্দের অর্থ কী? ‘পরবর্তী’ সম্পূর্ণ স্বাধীন কোনও শব্দ নয়। এর সঙ্গে অন্য কোনও শব্দ বা শব্দাংশ যুক্ত না-হওয়া পর্যন্ত এটি কোনও গ্রাহ্য অর্থ প্রকাশ করতে পারে না। সংগতকারণে ‘পরবর্তীতে’ শব্দের একক কোনও সুনির্দিষ্ট অর্থ নেই। কোনও অসম্পূর্ণ শব্দে ‘বিভক্তি’ যুক্ত করা সমীচীন নয়। এমন কর্ম শব্দকে আরও অর্থহীন ও অসম্পূর্ণ করে তোলে। ‘পরবর্ত ী’ শব্দের অব্যবহিত পরে কোনও বিষয় বা ধারণা যুক্ত হলেই কেবল শব্দটির অর্থ জাগ্রত হয়ে ওঠে। যেমন : পরবর্তী বছর, পরবর্তী সময়, পরবর্তী যুগ, পরবর্তী মানুষ, পরবর্তী শ্রেণি, পরবর্তী পদোন্নতি, পরবর্তী পৃষ্ঠা, পরবর্তী বই, পরবতী সারি, পরবর্তী দোকান, পরবর্তী শহর- এ রকম অসংখ্য বিষয় হতে পারে। শুধু ‘পরবর্তী’ শব্দের যেমন কোনও সুনির্দিষ্ট অর্থ হতে পারে না, তেমনি শুধু ‘পরবর্তীতে’ শব্দের কোনও অর্থ হতে পারে না। তাই ‘পরবর্তী সময়’ বা ‘পরবর্তী কাল’ প্রকাশের জন্য ‘পরবর্তীতে’ শব্দের ব্যবহার সমীচীন নয়। তা হলে লিখতে হয় পরবর্তীতে সময়, পরবর্তীতে কা

অতৎসম শব্দে ষ এর ব্যবহার / অভিজিৎ অভ

অতৎসম শব্দে ষ এর ব্যবহার অতৎসম শব্দে ‘ণ’ এর ব্যবহার এখন আর নেই।* বাংলা একাডেমির প্রমিত নিয়মে স্পষ্ট বিধান বলা হয়েছে “অতৎসম শব্দের বানানে ণ ব্যবহার করা হবে না।” কিন্তু ষ এর ক্ষেত্রে এমন কোন কঠিন নিয়ম করা যায় নি। এর সঙ্গত কারণও আছে। বিভিন্ন অর্ধতৎসম ও তদ্ভব শব্দে ষ এমনভাবে মিশে আছে, যে এসব শব্দ হতে ষ আর কিছুতেই পরিহার করা যায় না। তাই তৎসম নয়, এমন বহু শব্দে ষ বহাল তবিয়তে বিরাজ করছে। এই প্রসঙ্গে নিম্নের বিষয়গুলো লক্ষণীয়: ১। সংস্কৃত শব্দের কোমল রূপে ষ বহাল থাকে। যেমন বর্ষা> বরষা, হর্ষ> হরষ। ২। তৎসম শব্দের যুক্তাক্ষর রূপে ষ থাকলে, তদ্ভবে একই যুক্তাক্ষর বা ষ যুক্ত অন্য একটি যুক্তাক্ষর হতে পারে। স্পষ্ট>পষ্ট, তৃষ্ণা> তেষ্টা, কৃষ্ণ> কেষ্টা, বিষ্ণু>বিষ্টু, বৈষ্ণব> বোষ্টম। ৩। তৎসমে ণ থাকলে তদ্ভবে ন হয়। যেমন কর্ণ>কান, স্বর্ণ>সোনা। কিন্তু ষ থাকলে তদ্ভবেও ষ থাকে। যেমন আমিষ>আঁষ, ষণ্ড>ষাঁড়, সুনিষণ্নক>সুষনি ৪। বাংলা সংখ্যাবাচক ষোল, ষাট ইত্যাদি শব্দে অবিসংবাদিতভাবে ষ হয়। ৫। আধুনিক বাংলা ক্রিয়াপদে ণ হয় না**, কিন্তু ষ হতে পারে। যেমন পোষা, মুষড়

পহেলা বৈশাখ ১৪২২ আমার কাছে অঙ্গীকার / খুরশেদ আহমেদ

পহেলা বৈশাখ ১৪২২ আমার কাছে আমার অঙ্গীকার: যখনই লিখি, একটি শব্দ লিখলেও, প্রমিত বানানে বাংলা লিখব। অন্তত সে রকম চেষ্টাই থাকবে। আমার সহায়: (১) বাংলা একাডেমি প্রমিত বাংলা বানা্নের নিয়ম [পরিমার্জিত সংস্করণ (২০১২)]; (২) বাংলা একাডেমি বাংলা বানান-অভিধান [পরিমার্জিত ও পরিবর্ধিত তৃতীয় সংস্করণ (ফেব্রুয়ারি ২০০৮)-এর চতুর্থ পুনর্মুদ্রণ (২০১৩)] এবং (৩) বাংলা একাডেমি ব্যবহারিক বাংলা অভিধান [পরিমার্জিত সংস্করণ ডিসেম্বর ২০০০-এর সপ্তদশ পুনর্মুদ্রণ (২০১৪)]। এটা অগৌরবজনক যে বাংলা একাডেমি যথাক্রমে ২০০০ ও ২০০৮ সালের পর তার ব্যবহারিক বাংলা অভিধান ও বাংলা বানান-অভিধানের নতুন কোনো সংস্করণ বের করেনি; যা বের করেছে তা এই সংস্করণগুলিরই কেবল পুনর্মুদ্রণ। এর ফল এই যে, প্রমিত বানান যাচাইয়ের প্রশ্নে, সাধারণভাবে, ২০১২ সালের বাংলা একাডেমি প্রমিত বাংলা বানানের নিয়ম সত্ত্বেও, এখন ২০১৫-তে এসেও আমরা সেই ২০০৮-এই আটকে আছি। তবু, মন্দের ভালো হিসেবে, ২০০৮-এর বাংলা একাডেমি বাংলা বানান-অভিধানই আমার কাছে সবচেয়ে গ্রহণযোগ্য রেফারেন্স।

বাঙালি / ড. মোহাম্মদ আমীন

বাঙালি সুস্থ ও স্বাভাবিক ব্যক্তিমাত্রই নিজের পায়ে হাঁটতে, নিজের হাতে করতে, নিজের মুখে বলতে, নিজের চোখে দেখতে, নিজের চিন্তায় গড়তে এবং মাতৃভাষায় পড়তে গর্ববোধ করেন। কোনও স্বাধীন জাতিগোষ্ঠীর বেলাতেও এটি সত্য। তবে বাঙালি ব্যতিক্রম, একটা চমৎকার মাতৃভাষা থাকা সত্ত্বেও অনেকে মাতৃভাষাকে অবহেলা করে অন্যের ভাষায় পড়তে-বলতে-লিখতে, ভাবতে ও গড়তে গর্ববোধ করেন। বাঙালি নিজের মাতৃভাষার চেয়েও অন্যভাষাকে শ্রেষ্ঠ মনে করেন- এমন হতভাগা জাতি পৃথিবীতে আর আছে কি?

বোঝাবুঝির বোঝা / Sumanta Barman

বোঝাবুঝির বোঝা কমলেও কমতে পারে— শুবাচে 'বোঝা' আর 'বুঝি' নিয়ে বেশ কিছুদিন ধরে আলোচনা চলছে ৷ 'বাংলা একাডেমি প্রমিত বাংলা ভাষার ব্যাকরণ' পুস্তকটির কিছু অংশ পড়ে 'বোঝাবুঝি' বিষয়ে আমি যা বুঝলাম— কী সমাপিকা ক্রিয়া, কী অসমাপিকা ক্রিয়া— দুয়েরই বিভক্তি বর্জিত মূল অংশই হলো ধাতু ৷ ধাতুতে বিভক্তি যুক্ত হয়ে ক্রিয়াপদ তৈরি হয় ৷ বিভক্তি যুক্ত হলে, ধাতুর শরীরে অল্প-বিস্তর পরিবর্তনও আবার ঘটতে পারে ৷ 'খা' ধাতুটির 'খাই' শব্দটিতে দেখা যায় বিভক্তি 'ই' যুক্ত হলেও ধাতুর কোনো পরিরর্তন হয় নি, অর্থাৎ অপরিবর্তিত ধাতুরূপটি 'খা' ৷ কিন্তু 'খা' ধাতুটির 'খেলাম' শব্দটিতে দেখা যাচ্ছে বিভক্তি 'লাম' যুক্ত হওয়ায় 'খা' পরিবর্তিত হযেছে, আর পরিবর্তিত ধাতুরূপটি 'খে' ৷ অর্থাৎ 'খা' ধাতুটির দুটি রূপ 'খা' ও 'খে' দেখতে পাওয়া যায় ৷ 'খা' রূপের কিছু ক্রিয়াপদ- খাচ্ছিস, খাবেন, খায়,.....৷ 'খে' রূপের কিছু ক্রিয়াপদ- খেতে, খেয়ে, খেলেন,...৷ তেমনি, 'বুঝ্' ধাতুর শব্দগুলোতে 'বুঝ্' ও &

উদ্ভট / ড. মোহাম্মদ আমীন

উদ্ভট বাংলা ভাষায় ‘উদ্ভট’ শব্দের আভিধানিক অর্থ আজগুবি, উৎকট, অসম্ভব, বেমানান, পাপিষ্ঠ প্রভৃতি। শব্দটি মূলত নেতিবাচক মনোভাব প্রকাশে ব্যবহৃত হয়। উদ্ভট সংস্কৃত শব্দ। সংস্কৃত ভাষায় শব্দটি- মহাশয়, মহাত্মা, উদার, দুর্মদ, দুর্ধর্ষ, শ্রেষ্ঠ, প্রকৃষ্ট, উৎকৃষ্ট, মহান প্রভৃতি ইতিবাচক অর্থ বোঝাতে ব্যবহার করা হয়। অথচ বাংলায় এসে শব্দটি সম্পূর্ণ নেতিবাচক অর্থ ধারণ করেছে। সমাজের নিচুস্তরের লোকেরা অপেক্ষাকৃত উঁচুস্তরের লোকদের আচরণকে উদ্ভট মনে করে। শহুরে শিক্ষিত রমণীদের পোশাক-পরিচ্ছদ ও চালচলন গ্রামের নারীদের কাছে উদ্ভট; আবার অভিনয় শিল্পীদের আচরণ শহুরে শিক্ষিত রমণীদের কাছেও উদ্ভট; অন্যদিকে বাংলাদেশের অভিনয়-শিল্পীদের কাছে পশ্চিমা দেশেগুলোর অভিনেত্রীর পোশাক-পরিচ্ছদ উদ্ভট। আদিবাসীদের জীবনযাত্রা সমতলবাসীদের কাছে উদ্ভট আবার সমতলবাসীদের জীবনযাত্রা আদিবাসীদের কাছে উদ্ভট। বানর না কি মানুষের দু-পায়ে হাঁটকে উদ্ভট ভেবে মুখ ভেঙচায়। সুতরাং দেখা যায়, মহাশয়, মান্যবর, দুর্ধর্ষ ও শ্রেষ্ঠগণের আচরণ সবসময় অপেক্ষাকৃত উচু ও নিচুস্তরের সাধারণ মানুষের কাছে আজগুবি, উৎকট, পাপময় ও বেমানান। তাই সংস্কৃত মহাশ

কদলি / ড. মোহাম্মদ আমীন

কদলি কদলি শব্দের আভিধানিক অর্থ কলাগাছ, কলা প্রভৃতি। কিন্তু এর মূল অর্থ : যা বাতাস দ্বারা সহজে দলিত হয়। কদলিবৃক্ষের কোনও শাখাপ্রশাখা নেই। এর শেকড়গুলোও মাটির গভীরে যায় না। পুরো শরীর যেমন নরম তেমনি ভঙুর। অল্প বায়ু প্রবাহিত হলেও দলিত হয়ে সহজে ভেঙে পড়ে। তাই এর নাম কদলিবৃক্ষ। কদলি বলতে গাছ ও ফল দুটোকে বুঝালেও অনেক সময় অর্থ বিভ্রাট দূর করার জন্য বলা হয় কদলিবৃক্ষ ও কদলি। এটি কলাগাছ বা রম্ভাতরু নামেও পরিচিত। কলা আর কচু বাগ্‌ভঙ্গিতে অনেকটা সমার্থক। যখন আমরা বলি, কচু পাবে মানে কি ছুই পাবে না। তেমনি পরীক্ষার দিন অনেকেই কলা খেতে চান না। কারণ পরীক্ষায় কেউ কলা পেতে চান না। কেন কলাকে কচুর ভাগ্য বরণ করতে হলো? কলা অত্যন্ত পুষ্টিকর ও আদর্শ ফল। তবু কলার এ পরিণতির কারণ হচ্ছে সহজলভ্যতা। অধিক ফলনের কারণে তুলনামূলকভাবে স্বল্পমূল্যে অধিক ফল পাওয়া যায়। তাই কলা এত সুন্দর, সুস্বাদু ও পুষ্টিকর হওয়া সত্ত্বেও আমাদের সাহিত্য ও মনোজগতে এটি অবহেলার পাত্র। ঠিক কচুর ক্ষেত্রেও এটি প্রযোজ্য। আসলে দাম ও মর্যাদা সবসময় গুণের উপর নির্ভর করে না, লভ্যতার উপরও নির্ভর করে। কোনও ব্যক্তি অথবা বস্তু যতই গুণ

হোয়াইট ওয়াশ / শাহিদুল হক

Whitewashed বা ধবলধোলাই ধোলাই-ধৌত করা, পরিষ্কার করা বা washed. Cleansed, Bleached ইত্যাদি। Whitewashed- চুনকাম করা, সুন্দর রূপদান করা (Beautify, Whitewash, Embellish).আমরা যখন ধোলাই শব্দটিকে কাউকে জব্দ করার ক্ষেত্রে কিংবা অনুসর্গযোগে গণধোলাই, রামধোলাই ইত্যাদি বলি তখন আর এই শব্দটি ইংরেজি washed হিসেবে ব্যবহৃত হয় না। তখন তা মূল শব্দকে অতিক্রম করে ভিন্ন অর্থ তৈরি করে। ইদানীং Whitewashed এর অর্থ হিসেবে ধবলধোলাই শব্দটি ব্যবহার করা হয়। আর তা ক্রিকেট খেলার সাথে যুক্ত হয়েছে। কিন্ত নিরঙ্কুশ বিজয়ের ক্ষেত্রে আমি Whitewashed বা ধবলধোলাই শব্দটি ব্যবহারের পক্ষে নই। কেননা, নিরুঙ্কুশ বিজয় বোঝাতে শব্দটি যথোপযুক্ত নয় বলে মনে করি। এবার বলুন, আমরা পাকিদের শোচনীয়ভাবে পরাস্ত করে কেন তাদের ধোপা হতে যাব? কেননা, আমরা তো তাদের washed বা ধোলাই কিংবা ধৌত করি নি। আমরা তাদের ধোলাই বা রামধোলাই দিয়েছি। এটাকে সাদা করতে গিয়ে নিজেদের ইজ্জত হারানোর কোন মানে হয়?

ফেসবুক ও শুবাচ / সুমাইয়া আকতার মীম

ফেসবুক ও শুবাচ ফেসবুক এ্যাকাউন্ট খোলার পর শিক্ষণীয় তেমন কিছুই পাচ্ছিলাম না বলে একে অনেকটা অকাজের বলে মনে হচ্ছিল। পরে ফজলে রাববি ভাইয়া শুবাচের খবর দিলো। বললো, বেশ কাজের এবং অনেক কিছু শেখা যায় এমন একটি গ্রুপ এটি। প্রথমে আমলে নেইনি। একান্ত অনিচ্ছা সত্ত্বেও যখন ঢুকি তখনও বুঝে উঠিনি। বুঝলাম একটু পরেই আমীন স্যারের মূল্যবান পোস্ট পড়ে। স্যারের দু’একটি বই অবশ্য আগেই পড়েছি। স্যারকে পেয়ে এবং শুবাচের ন্যায় নিঃস্বার্থ বন্ধু পেয়ে ফেসবুককে আর কিছু না হোক একটু হলেও কাজের বলে মনে হচ্ছো। ধন্যবাদ শুবাচ, ধন্যবাদ স্যার। ধন্যবাদ গ্রুপের সকল মেম্বারকে। প্রিয় শুবাচ, শুভ হোক তোমার পথচলা।

ইঁদুর দৌড় / ড. মোহাম্মদ আমীন

ইঁদুর দৌড় ‘ইঁদুর দৌড়’ শব্দটি ইংরেজি rat-race শব্দের বাংলা অনুবাদ। rat-race শব্দটির জন্ম আমেরিকায়। এটি ছিল আমেরিকায় বহুল প্রচলিত একপ্রকার নাচ। এ নাচে অংশগ্রহণকারীরা ইঁদুরের মতো অস্থির ও চঞ্চলচিত্তে কোনও রূপ নিয়মনীতি ছাড়া ইচ্ছেমতো ছুটোছুটি করে নৃত্য করত। প্রকৃত অর্থে এখানে নাচের কোনও মুদ্রা ছিল না। যে যত অস্থিরচিত্তে বিশৃঙ্খলভাবে দৌড়াদৌড়ি করত তাকে বলা হত ভালো নৃত্যশিল্পী। বাংলায় শব্দটির অর্থ ও ব্যবহার দুটোই পরিবর্তন হয়ে গিয়েছে। বর্তমান তীব্র প্রতিযোগিতার যুগে কোনও রূপ নিয়মনীতির তোয়াক্কা না-করে যে কোনও উপায়ে অভীষ্ট লক্ষ্যে পৌঁছানোর চরম প্রতিযোগিতা বুঝাতে শব্দটি ব্যবহার করা হয়। ভর্তি, চাকরি ও চারিদিকে অভাবের যুগে লক্ষ্য বস্তু অর্জনের জন্য সকল বয়স ও শ্রেণির মানুষের যে তীব্র প্রতিযোগিতা তা আমেরিকার ইঁদুর নাচের মতোই শৃঙ্খলাহীন।

জটিল / ড. মোহাম্মদ আমীন

জটিল ‘জটিল’ শব্দের আভিধানিক অর্থ দুর্বোধ্য, সমস্যাসংকুল, কঠিন, ঝামেলাপূর্ণ প্রভৃতি ‘জটিল’ একটি তৎসম শব্দ। শব্দটির মূল অর্থ জটাধারী বা জটাবান। ‘জটা’ শব্দের উৎপত্তি ‘জট’ থেকে। না-আঁচড়ানোর ফলে ক্রমাগত জড়িয়ে চুল শক্ত হওয়ার অবস্থাকে জটা বলা হয়। চুলে জটা লাগলে তা সোজা করা সত্যি কঠিন কাজ। তাই কোনও কঠিন, দুর্বোধ্য বা সমস্যাসংকুল বিষয়কে চুলের জট খোলার মতো কঠিন বিবেচনায় ‘জটিল’ শব্দ দিয়ে প্রকাশ করা হয়।

ঢালাওভাবে / ড. মোহাম্মদ আমীন

ঢালাও /ঢালাওভাবে ‘ঢালাও’ বা ‘ঢালাওভাবে’ শব্দের আভিধানিক ও প্রচলিত অর্থ বাছবিচার না-করে কোনও কিছু করা, বিস্তৃত, প্রশস্ত, নির্বিশেষে, বিবেচনাবোধহীন, নির্বিচারে, যথেচ্ছা প্রভৃতি। ‘ঢালা’ ক্রিয়া থেকে থেকে ‘ঢালাও’ বা ‘ঢালাওভাবে’ শব্দের উৎপত্তি। ‘ঢালা’ ক্রিয়ার অর্থ পাত্র বা সংরক্ষণস্থান হতে কোনও কিছু উপড়ে দেওয়া, ছিটিয়ে দেওয়া, বিছিয়ে দেওয়া, ঢেলে দেওয়া বা ছুড়ে দেওয়া। গিন্নি শুধু রান্নার পাত্রে তৈল ঢালেন না, মাঝে মাঝে রেগে গেলে তৈলপাত্র উপড়ে সারা মেঝে ঢেলে দিতেও দেখা যায়। শ ুধু তাই নয়, কখনও কখনও নিজের ব্যবহারের প্রিয় রূপ-সজ্জার জিনিসপত্রও ঢেলে দেন। প্রথমটি আবেগের দ্বিতীয়টি রাগের। দুটোই কিন্তু ঢালা। মানুষ যখন কোনও পাত্র হতে কিছু ঢালেন তখন অধিকাংশ ক্ষেত্রে বেশি ঢালুক বা কম ঢালুক কোনটি ঢালবেন বা কোনটি ঢালবেন না এ নিয়ে কোনও বাছবিচার করেন না। অবশ্য ঢালার আগে তা যথার্থভাবে করাও সম্ভব নয়। তাই পাকা ফল পাড়তে গেলে কাচা ফলও পড়ে যায়। ঢালার পর প্রয়োজন হলে বাছবিছার শুরু করেন। ব্যবসায়ী বা কৃষক ফসলাদি বাছবিছার করে বিভক্ত করার জন্য আগে ঢালেন, তারপর শুরু করেন বাছাই -- ভালো-মন্দ, উৎকৃষ্ট-মাঝা

শাহিদুল হক / ড. মোহাম্মদ আমীন

উপরি উক্ত উপর্যুক্ত ========== উপরি উক্ত উপর্যুক্ত একটু ভেবে লিখব পরি’র সাথে হ্রস্ব উ-য়ের মিলন বিধি শিখব। ‘পরি’ কিন্তু নয়তো ‘পরী’ উপসর্গ জেনে সন্ধি ঘটার নিয়মগুলো চলব মোরা মেনে। ‘পরি’ উপসর্গ পরে অ আ যদি থাকে কিংবা যদি হ্রস্ব ই আর হ্রস্ব উ-কে রাখে সন্ধি হলেই য-য়েতে রেফ মারবো পরিটাকে। পরি যোগে আলোচনা পর্যালোচনা হয় নেই তো ‘পরি’ সন্ধিমূলে মরেছে নিশ্চয়। মন্তব্য : পরি-উপসর্গের সঙ্গে অ আ ই উ ধ্বনির সন্ধি ঘটলে য-য়ে রেফ (র্য ) হয়। যেমন- পরি + অন্ত = পর্যন্ত উপরি + উপরি = উপর্যুপরি পরি + আলোচনা = পর্যালোচনা উপরি + উক্ত = উপর্যুক্ত ইত্যাদি।

কীর্তিকলাপ / ড. মোহাম্মদ আমীন

কীর্তিকলাপ ‘কীর্তিকলাপ’ শব্দের অর্থ যশোরাশি, কৃতিত্বের পরিচায়কারী ভালো কাজ, কুকীর্তি প্রভৃতি। ‘কীর্তি’ ও ‘কলাপ’ এ দুটি শব্দ মিলে তৈরি হয়েছে কীর্তিকলাপ। `কীর্তি' শব্দের অর্থ যশ, খ্যাতি, সম্মান, সুনাম প্রভৃতি। আর ‘কলাপ’ শব্দের অর্থ হচ্ছে ময়ূরের ছড়ানো-পেখম। সুতরাং কীর্তিকলাপ শব্দের ব্যাকরণগত অর্থ হচ্ছে : ময়ূরের পেখমের মতো সজ্জিত বিচিত্র রঙের কীর্তি। ময়ূরের পেখম সৌন্দর্য ও সম্মানের প্রতীক। তাই কীর্তিকলাপ শব্দের মূল ও আদি অর্থ ছিল ভালোকাজ, কীর্তিসমূহ, যশ প্রভৃতি। তবে কীর্তিকলাপ শব্দের সে অর্থ এখন আর নেই। এখন কীর্তিকলাপ বলতে কুকীর্তিই বুঝায়। কুকীর্তি ময়ূরের পেখমের মতো সজ্জিত না-হলেও নিজস্ব সজ্জায় যেমন বিচিত্র তেমন অন্য লোকের ব্যাপক আগ্রহ সৃষ্টি করে। পত্রিকায় কোনও ব্যক্তিবিশেষের কুকীর্তি ছাপা হলে খাটতি বেড়ে যায় কিন্তু সুকীর্তি ছাপা হলে কেউ পড়ে না। বঙ্গদেশে মানুষ অন্যের প্রশংসা শুনতে আগ্রহী নয়, বদনাম বা কুকীর্তিসমূহ শুনতে আগ্রহী। এসব কারণে সংস্কৃত সুকীর্তি (কীর্তিকলাপ) বাংলায় এসে কীর্তিকলাপ (কুকীর্তি) অর্থ ধারণ করেছে।

ঢি ঢি / ড. মোহাম্মদ আমীন

ঢি ঢি নিন্দার্থে ব্যবহৃত শব্দটির আভিধানিক অর্থ ব্যাপক জানাজানি। ঢোল ও ঢোলের আওয়াজ থেকে বাগ্ভঙ্গিটির উৎপত্তি। এটি অব্যয় পদ। ঢেঁড়া এক প্রকার ঢোল। একসময় বাংলাদেশের সর্বত্র এর বহুল প্রচলন ছিল। পেটালে ঢেঁড়া হতে বিকট শব্দে ঢি ঢি ধ্বনি বের হয়ে আসত। চারিদিকের লোকজন শুনতে পেত ঢেঁড়া ঢোলের ঢি ঢি আওয়াজ। আগে প্রচারের এত আধুনিক মাধ্যম ছিল না। জমিদার, রাজা বা সরকারের পক্ষ থেকে কোনও কিছু ঘোষণা দেওয়ার বা জানান প্রয়োজন  হলে ঢেঁড়া পেটানো হতো। ঢেঁড়ার শব্দে চারিদিক হতে লোকজন জড়ো হলে ঘোষক সমবেত লোকদের ঘোষণাটি শুনিয়ে দিত। এভাবে কর্তৃপক্ষের ঘোষণা অল্পসময়ের মধ্যে লোকমুখে ছাড়িয়ে পড়ত। ঢেঁড়া পিটিয়ে ঢি ঢি শব্দের মাধ্যমে লোকজন জড়ো করে ঘোষণা প্রচারের প্রাচীন রেওয়াজ থেকে ঢি ঢি শব্দটি মানুষের বাগ্‌ভঙ্গিতে ওঠে আসে। এখন অবশ্য ঘোষণা প্রচারকে ঢি ঢি পড়ে গেছে বলা হয় না। বাগ্‌ভঙ্গিটি নিন্দার্থে ব্যবহৃত হয়। কারও বদনাম বা খারাপ কিছু ছড়িয়ে পড়লে, বা খারাপ কিছু ঘটলেই কেবল ঢি ঢি পড়ে। ভালো কোন কিছুর জন্য ঢি ঢি পড়ে না।

‘বাংলা’ শব্দের উৎস / ড. মোহাম্মদ আমীন

  ‘বাংলা' শব্দটি ‘বঙ্গ’ শব্দ হতে এসেছে। অধ্যাপক নগেন্দ্রনারায়ণ চৌধুরীর মতে ‘বঙ্গ’ শব্দটির ব্যুৎপত্তি তিব্বতী ‘বঙ’ শব্দ হতে। তিব্বতি ‘বঙ’ শব্দের অর্থ ‘নিম্ন জলাভূমি’। ‘বঙ্গ’ শব্দের সঙ্গে আল (=জমিতে পানি আটকাবার বাঁধ) যুক্ত হয়ে ‘বাঙ্গাল’ বা ‘বাঙ্গালা’  নামের উদ্ভব। এর কোমল রূপই হচ্ছে ‘বাঙলা’ বা ‘বাংলা’। বৈদিক স াহিত্যের ঐতরেয় আরণ্যক অংশে “বয়াংসি বঙ্গাবগধাশ্চেরপাদা” বাক্যাংশে বঙ্গ শব্দের  উল্লেখ দেখা যায়। কিন্তু এই পদের সন্ধিবিচ্ছেদ করতে গিয়ে দুটি মানে দাঁড়ায়। মহামহোপাধ্যায় হরপ্রসাদ শাস্ত্রী এর সন্ধিবিচ্ছেদ করেন এভাবে বঙ্গা(বঙ্গবাসী)+বগধা(বগধ বা মগধ অধিবাসী)+ চেরপাদা(চের নামক সর্পপূজক উপজাতি)= বঙ্গাবগধাশ্চেরপাদা। তাঁর মতে ‘বঙ্গ’ শব্দ ভারতীয় বা বৈদিক। অন্যান্য পণ্ডিতগণ বলেন বঙ্গ(বৃক্ষ)+অবগধাঃ(ঔষধিবৃক্ষ)+চ+ইরপাদা(সাপ)= বঙ্গাবগধাশ্চেরপাদা। তাঁদের মতে বৈদিক বঙ্গ মানে বৃক্ষ, বঙ্গদেশ নয়। তাই বাংলার শব্দমূল ‘বঙ্গ’ সংস্কৃতমূল শব্দ নয়।

গেঞ্জি ও জার্সি / ড. মোহাম্মদ আমীন

গেঞ্জি ও জার্সি মানুষের ঊর্ধ্বাঙ্গের অন্তর্বাসকে গেঞ্জি বলে। অভিধানে বলা আছে গেঞ্জি হচ্ছে যন্ত্রে বোনা সুতি জামা, যা পুরুষের দেহের ঊর্ধ্বাংশের অন্তর্বাস হিসাবে পরা হয়। ইংলিশ চ্যানেল ও ফ্রান্সের মধ্যিখানে ‘চ্যানেল আইল্যান্ডস’ নামের চারটি ছোট আকারের দ্বীপ রয়েছে। চারটি দ্বীপের মধ্যে একটির নাম গার্নজি এবং অন্যটির নাম জার্সি। খেলার সময় খেলোয়ারদের পরিহিত ‘জার্সি’ নামের পরিধেয়টি জার্সি দ্বীপে ১৮৩৬ খ্রিস্টাব্দে প্রথম প্রস্তুত করা হয়। তাই এ পরিধেয়টির নাম হয় জার্সি। অন্যদিকে  পুরুষদের পরিহিত ঊর্ধ্বাংশে পরিধেয় অন্তর্বাসটি ১৮৫১ খ্রিস্টাব্দে গার্নজি দ্বীপে প্রথম প্রস্তুত করা হয়। তাই এর নাম হয় গার্নজি। যা ক্রমান্বয়ে কিছুটি বিকৃতি হয়ে গেঞ্জি নামে স্থিতি পায়।

সুধী নাকি সুধি / ড. মোহাম্মদ আমীন

সুধী/সুধি ‘সুধি’ ও ‘সুধী’ দুটি প্রায় অভিন্ন উচ্চারণের দুটি ভিন্ন অর্থ-জ্ঞাপক শব্দ। ‘সুধি’ বাংলা শব্দ এবং ‘সুধী’ তৎসম শব্দ। ‘সুধি’ শব্দের আভিধানিক অর্থ বোধ, চেতনা, চৈতন্য, হুঁশ, স্মৃতি, অনুভব, শুভবুদ্ধি, সহজ-সরল, স্মরণশক্তি, অনুধাবন প্রভৃতি। বাকি অংশ: শুবাচ লিংক শুবাচ লিংক /২ শুদ্ধ বানান চর্চা লিংক/১ শুদ্ধ বানান চর্চা লিংক/২ শুদ্ধ বানান চর্চা লিংক/৩ নাটোর জেলার নামকরণ চকরিয়ার ইতিহাস ও ঐতিহ্য মানিকগঞ্জ জেলার নামকরণ ও ঐতিহ্য হাতিয়া উপজেলার নামকরণ ইতিহাস ও ঐতিহ্য পটুয়াখালী আগুনমুখা নদীর নামকরণ ভেদরগঞ্জ উপজেলা ও ইউনিয়নসমূহের নামকরণ আমিও পুলিশ ছিলাম বিসিএস পরীক্ষার প্রশ্নপত্র ভুল আর ভুল চটি পড়বেন না পরবেন তৈরি তৈরী দুঃসংবাদ তিন শ-য়ের বাড়াবাড়ি যত দোষ নন্দ ঘোষ দুর্গাপূজার বানান দুর্গতি সবুরে মেওয়া ফলে অবাক শব্দ সবাক অর্থ উনপঞ্চাশ বায়ু চড়ুইভাতি   

ঢালাও বা ঢালাওভাবে / ড. মোহাম্মদ আমীন

ঢালাও /ঢালাওভাবে ‘ঢালাও’ বা ‘ঢালাওভাবে’ শব্দের আভিধানিক ও প্রচলিত অর্থ বাছবিছার না-করে কোনও কিছু করা, বিস্তৃত, প্রশস্ত, নির্বিশেষে, বিবেচনাবোধহীন, নির্বিচারে, যথেচ্ছা প্রভৃতি। ‘ঢালা’ ক্রিয়া থেকে থেকে ‘ঢালাও’ বা ‘ঢালাওভাবে’ শব্দের উৎপত্তি। ‘ঢালা’ ক্রিয়ার অর্থ পাত্র বা সংরক্ষণস্থান হতে কোনও কিছু উপড়ে দেওয়া, ছিটিয়ে দেওয়া, বিছিয়ে দেওয়া, ঢেলে দেওয়া বা ছুড়ে দেওয়া। গিন্নি শুধু রান্নার পাত্রে তৈল ঢালেন না, মাঝে মাঝে রেগে গেলে তৈলপাত্র উপড়ে সারা মেঝে ঢেলে দিতেও দেখা যায়। শ ুধু তাই নয়, কখনও কখনও নিজের ব্যবহারের প্রিয় রূপ-সজ্জার জিনিসপত্রও ঢেলে দেন। প্রথমটি আবেগের দ্বিতীয়টি রাগের। দুটোই কিন্তু ঢালা। মানুষ যখন কোনও পাত্র হতে কিছু ঢালেন তখন অধিকাংশ ক্ষেত্রে বেশি ঢালুক বা কম ঢালুক কোনটি ঢালবেন বা কোনটি ঢালবেন না এ নিয়ে কোনও বাছবিছার করেন না। অবশ্য ঢালার আগে তা যথার্থভাবে করাও সম্ভব নয়। তাই পাকা ফল পাড়তে গেলে কাচা ফলও পড়ে যায়। ঢালার পর প্রয়োজন হলে বাছবিছার শুরু করেন। ব্যবসায়ী বা কৃষক ফসলাদি বাছবিছার করে বিভক্ত করার জন্য আগে ঢালেন, তারপর শুরু করেন বাছাই -- ভালো-মন্দ, উৎকৃষ্ট-মাঝ