Posts

Showing posts from January, 2014

বিদেশিদের লেখা প্রথম বাংলা ব্যাকরণ / ড. মোহাম্মদ আমীন- শুদ্ধ বানান চর্চা (শুবাচ)

    বিদেশিদের লেখা প্রথম বাংলা ব্যাকরণ ভারতীয় বর্ণসমূহের মধ্যে ১৫৭৭ খ্রিস্টাব্দে তামিল বর্ণমালা প্রথাম ছাপার অক্ষর পায়। মালাবার অঞ্চলের কোচিন নগরে যোয়ান্নেস গোন্‌সালভেস্‌ (Joannes Gonsalves) নামের যেসুইট সম্প্রদায়ের একজন পাদ্রী ছাপার জন্য প্রথম তামিল অক্ষর তৈরি করেন। এর দুই বছর পর ১৭৭৮ খ্রিস্টাব্দে নাথানিয়ে ব্রাসি হ্যালহেড (Nathaniel Brassey Halhed) হুগলী থেকে Grammar of the Bengal Language বা বাংলা ভাষার ব্যাকরণ প্রকাশ করেন। ঐ ব্যাকরণ প্রথম বাংলা ভাষায় ছাপা হয়। অক্ষরগুলো সীসায় ঢালার জন্য ছেনি তৈরি করেন স্যার চার্লস উইলকিন্স (Sir Charles Wilkins)। এ জন্য তাঁকে বাংলা ছাপাখানার স্রষ্টা বলা যায়।   স্যার চার্লস উইলকিন্স প্রথম ইউরোপীয় সংস্কৃতবিদগেণের অন্যতম। তিনি স্যার উইলিয়াম জোন্‌সের সাথে এশিয়াটিক সোসাইটি অব বেঙ্গল প্রতিষ্ঠা করেন। স্যার চার্লস উইলকিন্স অক্ষর কাটার প্রণালী পঞ্চানন কর্মকার নামের একজন বাঙালিকে শিখিয়ে দিয়েছিলেন। এ পঞ্চানন কর্মকার শ্রীরামপুর মিশনের পাদ্রী কেরি কর্তৃক নিযুক্ত হন। তাঁর দ্বারা বাংলাদেশে বাংলা হরফ-কাটা শিল্পের স্থাপন ও প্রচার হয়।

শুবাচ: পোস্ট অনুমোদন / ড. মোহাম্মদ আমীন - শুবাচ

 শুবাচের পোস্ট অনুমোদন সংক্রান্ত বিধিসমূহ (খসড়) [বিধি ৪৪.] পোস্ট অনুমোদন কমিটি: ১. পোস্ট অনুমোদনের জন্য ৫ সদস্য বিশিষ্ট একটি অনুমোদন কমিটি থাকবে। এ কমিটি অনুমোদন কমিটি নামে অভিহিত হবে। ২.   শুবাচের এডমিন কিংবা বাংলা ভাষা ও সাহিত্য সম্পর্কে বিশেষজ্ঞ কোন ব্যক্তি  অনুমোদন কমিটির সভাপতির হবেন; ৩. এডমিনকে পোস্ট অনুমোদনের বিষয়ে কাঙ্খিত পরামর্শ প্রদান অনুমোদন কমিটির দায়িত্ব।  ৪.  সাধারণভাবে এডমিন অনুমোদন কমিটির পরামর্শ মেনে নেবেন; তবে দ্বিমত দেখা দিলে এডমিন পোস্ট অনুমোদন সংক্রান্ত বিষয়ে অনুমোদন কমিটির পরামর্শ মানতে বাধ্য থাকবেন না। বিধি: ৪৫] পোস্ট অনুমোদন: সদস্যবর্গ কর্তৃক অনলাইনের মাধ্যমে বা অন্যকোন ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠান কর্তৃক প্রেরিত পোস্ট পেইজে প্রকাশের বিষয়ে এডমিন নিম্নবর্ণিত নীতিমালা অনুসরণ করবেন: ১.    শুদ্ধ বানান চর্চা ও বাংলা বানানে প্রমিত রীতি প্রয়োগে উৎসাহ প্রদান, শুদ্ধাশুদ্ধ চিহ্নিতকরণ, ভুল কিংবা যথেচ্ছাচার সম্পর্কে সচেতনতা সৃষ্টি; ২.    বাংলা ভাষার প্রচার-প্রসার ও সমৃদ্ধায়নে ভূমিকা রাখতে পারে কিংবা প্রচলিত ভুল ও শুদ্ধতা সম্পর্কে সচেতনতা সৃষ্টি ক

শুবাচের শব্দ যমক পঞ্চবলি / ড. মোহাম্মদ আমীন

পঞ্চবলি “বুড়ো বলীর বলি দেখে বলি জীবনটা বলি ছেড়া, সময়ের বলি।” কবিতার লাইনদ্বয়ে একটি ‘বলী’ ও চারটি ‘বলি’ আছে। এবার দেখুন এদের অর্থ- প্রথম বলী শব্দের অর্থ: বলবান বা শক্তিশালী; দ্বিতীয় বলি শব্দের অর্থ: চামড়াল কুঞ্চন রেখা; তৃতীয় বলি শব্দের অর্থ; বলা, উচ্চারণ করা; চতুর্থ বলি শব্দের অর্থ: কানের মাকড়ি বা অলঙ্কার এবং পঞ্চম বলি শব্দের অর্থ: যজ্ঞাদিতে নিবেদনযোগ্য বস্তু বা হত্যাযোগ্য জন্তু।

শুবাচ: ভাষার জন্য ভালবাসা / শহিদুল হক

শুবাচ: ভাষার ভালবাসা শহিদুল হক উৎসর্গঃ শুবাচের প্রতিটি বন্ধুর জন্য। শুদ্ধ বানান চর্চা করে ভাষার করি চাষ এই তো মোদের ভাষার মেলা ফাগুন বার মাস। প্রাণে প্রাণে প্রাণের ছোঁয়ায় হরষে দোলে মন হেথায় মোরা বন্ধু হয়ে কাটাই সারাক্ষণ। বর্ণমালার পাতা মেলে মুগ্ধ হয়ে পড়ি শুদ্ধ ভাষা চর্চা করে আলোর জগৎ গড়ি। কেউ যদি ভাই আঘাত হানে ভাষার বুকে আজি শক্ত হাতে লড়তে মোরা সবাই আছি রাজি। শুবাচ নিয়ে থাকব মোরা সবার মনের আশা হৃদয় মাঝে থাকবে শুধু ভাষার ভালবাসা।

যতি চিহ্নের প্রয়োজনীয়তা / ড. মোহাম্মদ আমীন (শুবাচ)

Image
যতি চিহ্নের  প্রয়োজনীয়তা যতি চিহ্ন যে কোন ভাষার অবিচ্ছেদ্য অঙ্গ। অর্থ দ্যোতনায় এর গুরুত্ব অপরীসীম। দাড়ি-কমা ঠিকমত না বসলে অর্থ অনর্থ হয়ে যেতে পারে। দেখুন একটি উদাহরণ: দীর্ঘকাল প্রবাসে অবস্থানরত স্বামীকে স্ত্রী লিখতে চাইছে: “ওগো এতদিন বিদেশে রইলে, এই ছিল তোমার কপালে। আমার পা বাতে ফুলিয়া গিয়াছে, ঘরটা জলে ডুবিয়া গিয়াছে, ছেলেটা রোজ স্কুলে যেতে চায় না। খাসীটা ঘাস খেয়ে মোটা হয়ে গিয়েছে। তোমার মা জ্বরে ভুগছে। বাগানটা জ্যামে ভরে গিয়াছে। ছাদটা স্থানে স্থানে ফুটো হয়ে গিয়েছে। গাভির পেটটা দেখিয়া মনে হয় বাচ্চা দেব ে। টুনীর মা রোজ আড়াই সের করে দুধ দেয়। সাবুর কাকা দাড়ি কাটতে গিয়ে গাল কেটে ফেলেছে। আমার মা এমন অবস্থায় অবশ্যই আসবে। না আসলে দুঃখের সীমা থাকবে না। দেখতে এসেছে হাসিব বাবাকে। তোমার ছোট বোন বিয়ে করার চেষ্টা করছে।” কিন্তু দাড়ি-কমা ঠিকমত না বসানোর কারণে স্ত্রীর পত্রখানি স্বামী হাতে কীভাবে পড়লো দেখুন: “ওগো এতদিন বিদেশে রইলে এই ছিল। তোমার কপালে আমার পা। বাতে ফুলিয়া গিয়াছে ঘরটা, জলে ডুবিয়া গিয়াছে ছেলেটা, রোজ স্কুলে যেতে চায় না খাসীটা। ঘাস খেয়ে মোটা হয়ে গিয়েছে তোমার ম

কলকাতার প্রথম সখের যাত্রাদল ও গোপাল উড়ে / ড. মোহাম্মদ আমীন - শুদ্ধ বানান চর্চা (শুবাচ)

কলকাতার প্রথম সখের যাত্রাদল ও গোপাল উড়ে গোপাল উড়ের টপ্পা হতে নেয়া দুটি সাহিত্য-প্রবাদ: ১. কাটা ঘায়ে নুনের ছিটে। ২. গাছে কাঁঠাল গোঁফে তেল। কবি গোপাল উড়ে - জাতিতে করণ ছিলেন। জন্মগ্রহণ: উড়িস্যার কটক জেলার জাজপুর গ্রামে। দরিদ্র পিতা মুকুন্দ, বেগুন ও আদা চাষ করে জীবিকা নির্বাহ করতেন। গোপাল ছিলেন তিন পুত্রের মধ্যম। গোপাল ১৮-১৯ বছর বয়সে কলকাতায় এসে ফল ফিরি করার কাজ নেন। দুর্গাদাস লাহিড়ী তাঁর “বাঙ্গালী গান” গ্রন্থে, ১৯০৫ খ্রিস্টাব্দে লিখেছেন, প্রায় ৭০ বছর আগে গোপাল কলকাতায় এসে তাঁর সুরেলা গলার জন্য রাধামোহন সরকারের “বিদ্যাসুন্দর” যাত্রাদলে ১০টাকা বেতনে চাকরি পেয়েছিলেন। এ থেকে হিসেব করলে গোপালের জন্ম সাল অনুমান ১৮১৭ খ্রিস্টাব্দ। প্রায় চল্লিশ বছর বয়সে গোপালের মৃত্যু হয়। সেই হিসেবে তাঁর মৃত্যু সাল দাঁড়ায় ১৮৫৭ খ্রিস্টাব্দ। দুর্গাদাস লাহিড়ীর মতে, রাধামোহন সরকারের “বিদ্যাসুন্দর” যাত্রাদলই কলকাতার প্রথম সখের যাত্রাদল। গোপাল যখন প্রথম কলকাতায় আসেন তখন তিনি বাংলা ভাষা একদমই জানতেন না। রাধামোহন সরকারের কাছে এক বছরের মধ্যেই তিনি বাংলা শিখে নেন এবং সেখানেই বাবুদের ওস্তাদজী

বাংলা ভাষার সমৃদ্ধি ও বানানে সমতা / ড. মোহাম্মদ আমীন - শুদ্ধ বানান চর্চা

Image
বাংলা ভাষার সমৃদ্ধি ও বানানে সমতা ড. মোহাম্মদ আমীন অফিস আদালত ও শিক্ষা প্রতিষ্ঠানসমূহে বাংলা বানানের অবস্থা রীতিমত আশঙ্কাজনক। একবিংশ শতকের শিক্ষিত বাঙালিদের মাতৃভাষা জ্ঞান দেখলে উইলিয়াম কেরি নির্ঘাত হার্টফেল করতেন। বাংলা ব্যাকরণের সমৃদ্ধি ও বিজ্ঞানসম্মত অভিব্যক্তি বাংলাকে পৃথিবীর শ্রেষ্ঠতম ভাষার মর্যাদায় অধিষ্ঠিত করেছে। তবু বাংলা বানানে উচ্চশিক্ষিত বাংলাভাষীদের  ভুলের অপরিণামদর্শী বহর লজ্জায় নুইয়ে দেয়। বাঙালি না বাংলাদেশী এখনও স্থির করা সম্ভব হয় নি, সেখানে বানান সমস্যা কীভাবে সমাধান  হবে? ১৯১৩ খ্রিস্টাব্দে রবীন্দ্রনাথ বাংলা সাহিত্যে নোবেল পুরস্কার পেলে বাংলা ভাষা বিশ্ব সাহিত্যের সম্মানজনক স্থান অধিকার করে নেয়। একুশে ফেব্রুয়ারি ‘আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস’ হিসেবে স্বীকৃতি পেয়েছে। তবু আমাদের শিক্ষিত ব্যক্তিদের বাংলা বানান ভুলের বহর চরম অবিশ্বাসের প্রচণ্ড থাপ্পরে চোখ ছানাবড়া বানিয়ে দেয়। উদহারণস্বরূপ শেরে বাংলা এগ্রিকালচারাল ইউনিভার্সির্টির ২০০৫ খ্রিস্টাব্দের ঈদকার্ডের ২১ শব্দের ফুটনোটটি নিম্নে উল্লেখ করলাম¬-মাননীয় চ্যান্সেলর, তিন তিন বারের প্রধানমন্ত্রী এবং দেশনেত্রী বেগ