Posts

Showing posts from January, 2019

নিউটনের ছাত্রীর কী হলো? লেখকের অভিজ্ঞতা থেকে/ প্রফেসর শাহিদা সুলতানা অনি

Image
স্যার, একটা কথা বলি?প্রকাশনা সংস্থার প্রবীণ প্রুফ রিডার সুনীল বাবুর কণ্ঠ শুনে বই থেকে চোখ তুললাম। চোখ তার জলে ডুবো ডুবো, মুখটা বিষণ্নতায় ছেয়ে। তিনি মাঝে মাঝে বানান সমস্যা নিয়ে আমার কাছে আসেন, কিন্তু এমন করুণ কণ্ঠ কখনও শুনিনি, দেখিনি এমন মলিন চেহারা।ফর্সা লোকটা কেমন জানি পাণ্ডুর হয়ে গেল, কিছুক্ষণ আগেও বেশ উৎফুল্ল দেখেছি। মানুষ খুব কষ্ট পেলে কিংবা মানসিক আঘাত লাগলে এমন করুণ গলায় কথা বলে।কী ব্যাপার সুনীল বাবু? আমি সহানুভূতির গলায় বললাম।একটা কথা বলতে চাইছিলাম স্যার।বলুন।“কথটা রাখবেন তো স্যার?” বলেই তার ডান হাতে থাকা কাগজগুলোর দিকে তাকালেন।হাতে কী? জানতে চাইলাম।নিউটনের ছাত্রী।নিউটনের ছাত্রী মানে আমার লেখা ‘নিউটনের ছাত্রী’ নামের কিশোর উপন্যাসের পাণ্ডুলিপি।কী হয়েছে আপনার?“স্যার”, সুনীল বাবুর গলা আরও করুণ, আরও বিগলিত, “মেয়েটাকে না-মারলে হয় না? কত ভালো মেয়ে স্যার, এমন নিষ্ঠুরতা কি উচিত হবে?”কোন মেয়েকে আমি মারলাম? শঙ্কিত গলায় জানতে চাইলাম।সেলিমা, মানে নিউটনের ছাত্রী উপন্যাসের নায়িকা।আমি হাসি দিয়ে বললাম, কী যে বলেন!আপনি হাসছেন স্যার? এমন একজন ভালো মেয়েকে মেরে হাসতে পারছেন? আমি হলে পারতাম না।হাসি

নিউটনের ছাত্রী/ গ্রন্থ ভূমিকা

Image
পাঠক যদি একই সঙ্গে উপন্যাসের চরিত্র হয়ে যায়, তাহলে কেমন লাগবে? এই উপন্যাসে এমনটি ঘটার সম্ভাবনা রয়েছে। উপন্যাসের নায়ক গোপাল। কোনো নায়িকা নেই। আমি জানি না গোপাল এখন কোথায়। এটাও জানি না, মার্কিন গবেষক ও মিশনারি দলের সঙ্গে চলে যাবার পর তার আগের নাম বহাল আছে কি না। থাকার কথা নয়, তবে থাকতেও পারে। সেই ১৯৯১ খ্রিষ্টাব্দ, এখন ২০১৮। পঁচিশ বছর গোপালের সঙ্গে দেখা নেই। গোপালের কথা মনে পড়লে শুধু চোখে ভাসে মাটিতে গড়াগাড়ি আর প্রথম দিনের মেথর-ছড়াটি। এতদিন পর দেখলেও চিনতে পারব বলে মনে হয় না। অবশ্য সে আমাকে দেখলে চিনতে পারবে। মেধাবীদের স্মরণশক্তি সবদিকে প্রখর। যত বার আমেরিকা গিয়েছি ততবার মনে পড়েছে গোপালের কথা। ইচ্ছে করত আমেরিকার সব ইউনিভার্সিটি খুঁজে মেথরের ছেলে শিশু গোপালের মুখটা একটু দেখি, কিন্তু এটি সম্ভব ছিল না। গুগুলে সার্চ দিলে অনেক গোপাল আসে-- হাজার হাজার। কিন্তু আমার গোপাল আসে না। আমার গোপাল শিশু গোপাল, দাড়িমোজহীন কৃষ্ণ গোপাল। গুগুলের সব গোপাল দাড়িমোজে একাকার। কীভাবে চিনব? সপ্তম শ্রেণির ছাত্র গোপালের চেহারা গুগুলে নেই। এখন গোপালের বয়স চল্লিশ ছাড়িয়ে। প্রাইমারি স্কুলে ভর্তির সময় প্রধান শিক

নিউটনের ছাত্রী / প্রমিতা দাশ লাবণী

Image
অসাধারণ মেধাবী সেলিমা আসলে নিউটনের ছাত্রী ছিল না, লেখকের ছাত্রী ছিল।চট্টগ্রামের জনৈক অশিক্ষিত কোটিপতির অশিক্ষিত বড়ো ছেলে লেখকের কাছে তার বোনকে পড়ানোর প্রস্তাব নিয়ে এসে বলেছিলেন, “আমার বোন নিউটনের ছাত্রী। পুরো তল্লাটে তার মতো মেধাবী কেউ নেই।” লেখক রাজি হয়ে গেলেন। আসলে, নিউটনের ছাত্রীকে পড়ানোর আগ্রহ দমাতে পারেননি। পড়াতে গেলে, পরিচয় দিয়ে সেলিমা বলেছিল, “নিশ্চয় ভাইয়া আমাকে নিউটনের ছাত্রী হিসেব পরিচয় দিয়েছেন?” হ্যাঁ। “আমি কিন্তু নিউটনের ছাত্রী নই”, সেলিমা বলেছিল, “নিউটেনের ছাত্রী।তবে, ভাইয়ার কারণে আমি এখন সবখানে নিউটনের ছাত্রী। তাই বিজ্ঞানী নিউটনকে পুরোপুরি অত্মস্থ করে নিয়েছি। নিউটনের সব তথ্য আমার জানা।লেখক বলেছিলেন, এখন পড়া শুরু করি।“আগে আপনার মেধা যাচাই”, সেলিমা লেখককে বিস্মিত করে দিয়ে বলেছিল।মানে! লেখকের প্রশ্নে ছিল ক্ষোভ, লজ্জা আর কিছুটা সংকোচ।“আমাকে পড়াতে পারবেন কি না দেখতে হবে না? ইন্টারভিউ ছাড়া চাকুরি হয় না”, বলেই সেলিমা প্রশ্ন করেছিল, নিউটনের পিতামহের নাম কী?জানি না, সোজা উত্তর লেখকের।এই প্রশ্নটা কী আমাদের পরীক্ষায় আসবে?আসতে পারে আবার না-ও আসতে পারে, কিন্তু জানা থাকা ভালো।এরপর আর