বাংলা সাহিত্যে আধুনিক যুগের প্রবর্তক: উইলিয়াম কেরি / ড. মোহাম্মদ আমীন
উইলিয়াম কেরি
ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানির কর্মকর্তা, প্রাদ্রী, শিক্ষাবিদ আধুনিক বাংলা গদ্য ও অভিধানের প্রধান পরিকল্পনাকারী উইলিয়াম কেরি ১৭৬১ খ্রিস্টাব্দের ১৭ আগস্ট ইংল্যান্ডের নর্দানটমশায়ারের পাউলাসপ্যুরি এলাকায় জন্মগ্রহণ করেন। তিনি ছিলেন পিতা অ্যাডমন্ড ক্যারি ও মা এলিজাবেথ কেরির পাঁচ সন্তানের মধ্যে সর্বজ্যেষ্ঠ। পিতা ছিলেন একজন তন্তুবায়। পিতার আয় ছিল খুব কম। দারিদ্র্যের জন্য তিনি উচ্চ শিক্ষা হতে বঞ্চিত হন। শিশু ক্যারির প্রকৃতি বিজ্ঞান বিশেষ করে
উদ্ভিদ বিজ্ঞানের প্রতি প্রবল আকর্ষণ ছিল। ১৪ বছর বয়স হলে পিতা অ্যাডমন্ড ক্যারি পুত্র উইলিয়াম ক্যারিকে জুতো তৈরি শেখার জন্য নর্দানটমশায়ারের হেকলেটন গ্রামের দোকানে শিক্ষানবীশ হিসেবে কাজে লাগিয়ে দেন। ষোলো বছর বয়সে তিনি ধর্মের প্রতি আকৃষ্ট হয়ে পড়েন। ধর্ম সম্পর্কে গভীর জ্ঞান অর্জনের জন্য তিনি ল্যাটিন, গ্রিক, হিব্রু ইত্যাদি ভাষা; ইতিহাস, ভূগোল প্রাকৃতিক বিজ্ঞান, ভ্রমণ প্রভৃতি বিষয়ে প্রভূত জ্ঞান অর্জন করেন। ১৭৮১ খ্রিস্টাব্দে ২০ বছর বয়সে তিনি ডর্থির সাথে বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হন।
১৭৮৩ খ্রিস্টাব্দে কেরি জর্জ রাইল্যান্ডের নিকট ব্যাপটিস্ট হিসেবে দীক্ষিত হন এবং ধর্মযাজকের পেশা গ্রহণ করেন। ১৭৯৩ খ্রিস্টাব্দে চিকিৎসক ও ধর্মপ্রচারক টমাস জোনসের সাথে উইলিয়ম ক্যরি সপরিবারে ভারতের উদ্দেশ্যে ইংল্যান্ড ত্যাগ করেন। তিনি তাঁর কাজ এবং কর্তব্য সম্পর্কে এত আগ্রহী,
কর্তব্যপরায়ন ও সচেতন ছিলেন যে, সমুদ্রপথে জাহাজে বসে বাংলা শেখা শুরু করেন। ১৭৯৩ খ্রিস্টাব্দের ১১ নভেম্বর তাঁরা কলকাতা পৌছেন। কলকাতায় পৌঁছে তিনি পরিবেশ ও স্থানীয় জনজীবন সম্পর্কে অবগত হবার জন্য বান্ডেল, নদীয়া, মানিকতলা ও সুন্দরবনসহ বঙ্গদেশের বিভিন্ন স্থানে ভ্রমণ করে বেড়ান। এরপর তিনি রামরাম বসুর নিকট বাংলা শিখতে শুরু করেন এবং অল্প সময়ের মধ্যে বাংলা ভাষায় বিশেষ বুৎপত্তি অর্জন করেন। একই সাথে তিনি রামরাম বসুকে মুন্সি নিয়োগ করে তার সহায়তায় বাইবেলকে বাংলায় অনুবাদ করার কাজ শুরু করে দেন।
১৭৯৪ খ্রিস্টাব্দে উইলিয়াম কোরি মালদহের মদনবাটি নীলকুঠিতে তত্ত্বাবধায়ক অফিসারের চাকুরি নেন। সেখানে তিনি প্রজাদের জন্য একটি বিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা করেন। ইংরেজ কর্মকর্তা-কর্মচারীদের সুবিধার্থে তিনি বাংলা ভাষায় একটি শব্দকোষ প্রণয়ন করেন। ১৭৯৯ খ্রিস্টাব্দে জশুয়া মার্শম্যান, উইলিয়ম ওয়ার্ড, ব্রান্সডন ও উইলিয়ামের মিশনারি দল শ্রীরামপুর এলে কেরি তাদের সাথে যোগ দেন। তারা ১৮০০ খ্রিস্টাব্দের ১০ জানুয়ারি শ্রীরামপুর ব্যাপ্টিস্ট মিশন স্থাপন করেন। মিশনে একটি প্রেস স্থাপিত হয়। এ প্রেস হতে পঞ্চানন কর্মকারের সহায়তায় কেরি ম্যাথু লিখিত সুসমাচার এর প্রথম পত্র বাংলায় মুদ্রণ করেন। ১৮০০ খ্রিস্টাব্দের আগস্ট মাসে উইলিয়াম কেরির প্রচেষ্টায় প্রথম গদ্যগ্রন্থ মথী রচিত মিশন সমাচার মুদ্রিত হয়।
১৮০০ খ্রিস্টাব্দের ৪ মে কলিকাতা ফোর্ড উইলিয়াম কলেজ প্রতিষ্ঠিত হয়। ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানির ইংরেজ কর্মকর্তা-কর্মচারীদের বাংলা ভাষা ও সাহিত্য শেখানোর উদ্দেশ্যে ১৮০১ খ্রিস্টাব্দের মে মাসে ফোর্ড উইলিয়াম কলেজে বাংলা বিভাগ খোলা হয়। শ্রী রামপুর মিশনের পাদ্রী ও বাইবেলের প্রথম বাংলা
অনুবাদক উইলিয়াম কেরিকে বাংলা ও সংস্কৃত বিভাগের অধ্যক্ষ নিয়োগ করে তাঁর অধীনে মৃত্যুঞ্জয় বিদ্যালঙ্কার ও রামনাথ বাচস্পপতি নামক দুই জনকে পণ্ডিত এবং শ্রীপতি মুখোপাধ্যায়, আনন্দ চন্দ্র, রাজীবলোচন মুখোপাধ্যায়, কাশীনাথ, পদ্মলোচন চূড়ামণি ও রামরাম বসু নামক ছয়জন ব্যক্তিকে সহকারী পণ্ডিত নিযুক্ত করা হয়। বাংলা ভাষায় অনুবাদ ও গ্রন্থ রচনার স্বীকৃতিস্বরূপ উইলিয়াম কেরিকে ফোর্ড উইলিয়াম কলেজে বাংলা ভাষার অধ্যাপক পদে নিয়োগ প্রদান করা হয়েছিল। একজন কর্মচারীর একধাপে এতদূর উন্নীত হবার ঘটনা বিশ্বে বিরল। বাংলা ভাষায় পাঠ্যপুস্তকের অভার অনুভব করে তিনি ১৮০১ খ্রিস্টাব্দে ‘বাংলা ব্যকরণ’ ও বাংলা গদ্যে ‘কথোপকথন’ গ্রন্থ প্রকাশ করেন। ১৮১২ খ্রিস্টাব্দে তাঁর বিখ্যাত ‘ইতিহাসমালা’ গ্রন্থটি প্রকাশিত হয়। তার রচিত অন্যান্য গ্রন্থগুলো হচ্ছে- ওল্ড টেস্টামেন্ট, নিউ টেস্টামেন্ট এবং বাংলা-ইংরেজি অভিধান। ১৮২৯ খ্রিস্টাব্দে তিনি সতীদহ নিবারক আইন অনুবাদ করেন।
বাংলা গদ্যসাহিত্য বিকাশে কেরির অবদান পিতৃসত্তার মমতায় অনিবার্য। হুমায়ুন আযাদের ভাষায়, ‘কেরি বাংলা ভাষার একজন প্রধান পরিকল্পনাকারী, যিনি বাংলা গদ্যের অবয়ব পরিকল্পনায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছিলেন। কেরির নেতৃত্বে শ্রীরামপুর মিশন থেকে সৃষ্ট বাংলা গদ্য শিক্ষার্থী ও পাঠকদের
উপকথা থেকে আধুনিক বৈজ্ঞানিক বিশ্বে নিয়ে আসেন। এখানে রচিত পদার্থবিদ্যা, রসায়নশাস্ত্র, গণিত, ভুগোল প্রভৃতি বই বাংলাভাষী পাঠকের জ্ঞানাহরনের ধারা, চেতনা ও মনেবৃত্তিকে পুরো পাল্টে দেয়। অনুবাদপ্রধান এ গ্রন্থগুলোতে ব্যবহৃত পারিভাষিক শব্দ বাংলা ভাষার শব্দ সম্ভারকে সমৃদ্ধ করে।
১৮০৭ খ্রিস্টাব্দে উইলিয়াম কেরিকে বাংলা ও সংস্কৃত বিভাগের সর্বাধ্যক্ষ পদে উন্নীত করা হয়। ১৮০৬ খ্রিস্টাব্দে ইংল্যান্ডের হিল্সবারিতে কোম্পানি সরকার ব্রিটিশ কর্মচারিদের জন্য কলেজ স্থাপন করলে ফোর্ড উইলিয়াম কলেজের গুরত্ব কমে যেতে থাকে। ১৮১৫ খ্রিস্টাব্দ পর্যন্ত ফোর্ড উইলিয়াম কলেজে শুধু বাংলা বিভাগই সক্রিয় ছিল।
১৮৫৪ খ্রিস্টাব্দে ফোর্ড উইলিয়াম কলেজ চিরতরে বন্ধ হয়ে যায়। বাংলা সাহিত্যের আধুনিক যুগের প্রারম্ভে মুদ্রণ যন্ত্রের প্রচলন, বাংলা ভাষার ব্যাকরণ ও বাংল গদ্যগ্রন্থ রচনা প্রকাশের মাধ্যমে তিনি বাংলা
সাহিতের আধুনিক যুগের প্রারম্ভকে সার্থক মহিমায় বিদূষিত করে তুলেছেন। একজন বিদেশি হয়েও বাংলা ভাষা ও সাহিত্যেও প্রতি কেরির এমন মমত্ববোধ সত্যি বিরল।
১৮৩৪ খ্রিস্টাব্দের ৯ জুন শ্রীররামপুরে ইউলিয়াম কেরির মৃত্যু হয়।
ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানির কর্মকর্তা, প্রাদ্রী, শিক্ষাবিদ আধুনিক বাংলা গদ্য ও অভিধানের প্রধান পরিকল্পনাকারী উইলিয়াম কেরি ১৭৬১ খ্রিস্টাব্দের ১৭ আগস্ট ইংল্যান্ডের নর্দানটমশায়ারের পাউলাসপ্যুরি এলাকায় জন্মগ্রহণ করেন। তিনি ছিলেন পিতা অ্যাডমন্ড ক্যারি ও মা এলিজাবেথ কেরির পাঁচ সন্তানের মধ্যে সর্বজ্যেষ্ঠ। পিতা ছিলেন একজন তন্তুবায়। পিতার আয় ছিল খুব কম। দারিদ্র্যের জন্য তিনি উচ্চ শিক্ষা হতে বঞ্চিত হন। শিশু ক্যারির প্রকৃতি বিজ্ঞান বিশেষ করে
উদ্ভিদ বিজ্ঞানের প্রতি প্রবল আকর্ষণ ছিল। ১৪ বছর বয়স হলে পিতা অ্যাডমন্ড ক্যারি পুত্র উইলিয়াম ক্যারিকে জুতো তৈরি শেখার জন্য নর্দানটমশায়ারের হেকলেটন গ্রামের দোকানে শিক্ষানবীশ হিসেবে কাজে লাগিয়ে দেন। ষোলো বছর বয়সে তিনি ধর্মের প্রতি আকৃষ্ট হয়ে পড়েন। ধর্ম সম্পর্কে গভীর জ্ঞান অর্জনের জন্য তিনি ল্যাটিন, গ্রিক, হিব্রু ইত্যাদি ভাষা; ইতিহাস, ভূগোল প্রাকৃতিক বিজ্ঞান, ভ্রমণ প্রভৃতি বিষয়ে প্রভূত জ্ঞান অর্জন করেন। ১৭৮১ খ্রিস্টাব্দে ২০ বছর বয়সে তিনি ডর্থির সাথে বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হন।
১৭৮৩ খ্রিস্টাব্দে কেরি জর্জ রাইল্যান্ডের নিকট ব্যাপটিস্ট হিসেবে দীক্ষিত হন এবং ধর্মযাজকের পেশা গ্রহণ করেন। ১৭৯৩ খ্রিস্টাব্দে চিকিৎসক ও ধর্মপ্রচারক টমাস জোনসের সাথে উইলিয়ম ক্যরি সপরিবারে ভারতের উদ্দেশ্যে ইংল্যান্ড ত্যাগ করেন। তিনি তাঁর কাজ এবং কর্তব্য সম্পর্কে এত আগ্রহী,
কর্তব্যপরায়ন ও সচেতন ছিলেন যে, সমুদ্রপথে জাহাজে বসে বাংলা শেখা শুরু করেন। ১৭৯৩ খ্রিস্টাব্দের ১১ নভেম্বর তাঁরা কলকাতা পৌছেন। কলকাতায় পৌঁছে তিনি পরিবেশ ও স্থানীয় জনজীবন সম্পর্কে অবগত হবার জন্য বান্ডেল, নদীয়া, মানিকতলা ও সুন্দরবনসহ বঙ্গদেশের বিভিন্ন স্থানে ভ্রমণ করে বেড়ান। এরপর তিনি রামরাম বসুর নিকট বাংলা শিখতে শুরু করেন এবং অল্প সময়ের মধ্যে বাংলা ভাষায় বিশেষ বুৎপত্তি অর্জন করেন। একই সাথে তিনি রামরাম বসুকে মুন্সি নিয়োগ করে তার সহায়তায় বাইবেলকে বাংলায় অনুবাদ করার কাজ শুরু করে দেন।
১৭৯৪ খ্রিস্টাব্দে উইলিয়াম কোরি মালদহের মদনবাটি নীলকুঠিতে তত্ত্বাবধায়ক অফিসারের চাকুরি নেন। সেখানে তিনি প্রজাদের জন্য একটি বিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা করেন। ইংরেজ কর্মকর্তা-কর্মচারীদের সুবিধার্থে তিনি বাংলা ভাষায় একটি শব্দকোষ প্রণয়ন করেন। ১৭৯৯ খ্রিস্টাব্দে জশুয়া মার্শম্যান, উইলিয়ম ওয়ার্ড, ব্রান্সডন ও উইলিয়ামের মিশনারি দল শ্রীরামপুর এলে কেরি তাদের সাথে যোগ দেন। তারা ১৮০০ খ্রিস্টাব্দের ১০ জানুয়ারি শ্রীরামপুর ব্যাপ্টিস্ট মিশন স্থাপন করেন। মিশনে একটি প্রেস স্থাপিত হয়। এ প্রেস হতে পঞ্চানন কর্মকারের সহায়তায় কেরি ম্যাথু লিখিত সুসমাচার এর প্রথম পত্র বাংলায় মুদ্রণ করেন। ১৮০০ খ্রিস্টাব্দের আগস্ট মাসে উইলিয়াম কেরির প্রচেষ্টায় প্রথম গদ্যগ্রন্থ মথী রচিত মিশন সমাচার মুদ্রিত হয়।
১৮০০ খ্রিস্টাব্দের ৪ মে কলিকাতা ফোর্ড উইলিয়াম কলেজ প্রতিষ্ঠিত হয়। ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানির ইংরেজ কর্মকর্তা-কর্মচারীদের বাংলা ভাষা ও সাহিত্য শেখানোর উদ্দেশ্যে ১৮০১ খ্রিস্টাব্দের মে মাসে ফোর্ড উইলিয়াম কলেজে বাংলা বিভাগ খোলা হয়। শ্রী রামপুর মিশনের পাদ্রী ও বাইবেলের প্রথম বাংলা
অনুবাদক উইলিয়াম কেরিকে বাংলা ও সংস্কৃত বিভাগের অধ্যক্ষ নিয়োগ করে তাঁর অধীনে মৃত্যুঞ্জয় বিদ্যালঙ্কার ও রামনাথ বাচস্পপতি নামক দুই জনকে পণ্ডিত এবং শ্রীপতি মুখোপাধ্যায়, আনন্দ চন্দ্র, রাজীবলোচন মুখোপাধ্যায়, কাশীনাথ, পদ্মলোচন চূড়ামণি ও রামরাম বসু নামক ছয়জন ব্যক্তিকে সহকারী পণ্ডিত নিযুক্ত করা হয়। বাংলা ভাষায় অনুবাদ ও গ্রন্থ রচনার স্বীকৃতিস্বরূপ উইলিয়াম কেরিকে ফোর্ড উইলিয়াম কলেজে বাংলা ভাষার অধ্যাপক পদে নিয়োগ প্রদান করা হয়েছিল। একজন কর্মচারীর একধাপে এতদূর উন্নীত হবার ঘটনা বিশ্বে বিরল। বাংলা ভাষায় পাঠ্যপুস্তকের অভার অনুভব করে তিনি ১৮০১ খ্রিস্টাব্দে ‘বাংলা ব্যকরণ’ ও বাংলা গদ্যে ‘কথোপকথন’ গ্রন্থ প্রকাশ করেন। ১৮১২ খ্রিস্টাব্দে তাঁর বিখ্যাত ‘ইতিহাসমালা’ গ্রন্থটি প্রকাশিত হয়। তার রচিত অন্যান্য গ্রন্থগুলো হচ্ছে- ওল্ড টেস্টামেন্ট, নিউ টেস্টামেন্ট এবং বাংলা-ইংরেজি অভিধান। ১৮২৯ খ্রিস্টাব্দে তিনি সতীদহ নিবারক আইন অনুবাদ করেন।
বাংলা গদ্যসাহিত্য বিকাশে কেরির অবদান পিতৃসত্তার মমতায় অনিবার্য। হুমায়ুন আযাদের ভাষায়, ‘কেরি বাংলা ভাষার একজন প্রধান পরিকল্পনাকারী, যিনি বাংলা গদ্যের অবয়ব পরিকল্পনায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছিলেন। কেরির নেতৃত্বে শ্রীরামপুর মিশন থেকে সৃষ্ট বাংলা গদ্য শিক্ষার্থী ও পাঠকদের
উপকথা থেকে আধুনিক বৈজ্ঞানিক বিশ্বে নিয়ে আসেন। এখানে রচিত পদার্থবিদ্যা, রসায়নশাস্ত্র, গণিত, ভুগোল প্রভৃতি বই বাংলাভাষী পাঠকের জ্ঞানাহরনের ধারা, চেতনা ও মনেবৃত্তিকে পুরো পাল্টে দেয়। অনুবাদপ্রধান এ গ্রন্থগুলোতে ব্যবহৃত পারিভাষিক শব্দ বাংলা ভাষার শব্দ সম্ভারকে সমৃদ্ধ করে।
১৮০৭ খ্রিস্টাব্দে উইলিয়াম কেরিকে বাংলা ও সংস্কৃত বিভাগের সর্বাধ্যক্ষ পদে উন্নীত করা হয়। ১৮০৬ খ্রিস্টাব্দে ইংল্যান্ডের হিল্সবারিতে কোম্পানি সরকার ব্রিটিশ কর্মচারিদের জন্য কলেজ স্থাপন করলে ফোর্ড উইলিয়াম কলেজের গুরত্ব কমে যেতে থাকে। ১৮১৫ খ্রিস্টাব্দ পর্যন্ত ফোর্ড উইলিয়াম কলেজে শুধু বাংলা বিভাগই সক্রিয় ছিল।
১৮৫৪ খ্রিস্টাব্দে ফোর্ড উইলিয়াম কলেজ চিরতরে বন্ধ হয়ে যায়। বাংলা সাহিত্যের আধুনিক যুগের প্রারম্ভে মুদ্রণ যন্ত্রের প্রচলন, বাংলা ভাষার ব্যাকরণ ও বাংল গদ্যগ্রন্থ রচনা প্রকাশের মাধ্যমে তিনি বাংলা
সাহিতের আধুনিক যুগের প্রারম্ভকে সার্থক মহিমায় বিদূষিত করে তুলেছেন। একজন বিদেশি হয়েও বাংলা ভাষা ও সাহিত্যেও প্রতি কেরির এমন মমত্ববোধ সত্যি বিরল।
১৮৩৪ খ্রিস্টাব্দের ৯ জুন শ্রীররামপুরে ইউলিয়াম কেরির মৃত্যু হয়।
অসাধারণ ব্যক্তিত্ব
ReplyDeleteঅসাধারণ ।উইলিয়াম কেরি কোন বর্ণমালায় বাংলা ভাষা চর্চা করেছিলেন ?
ReplyDeleteঅসাধারণ ।উইলিয়াম কেরি কোন বর্ণমালায় বাংলা ভাষা চর্চা করেছিলেন ?
ReplyDelete