বাংলা একাডেমি : ভুলে ভুলে ভরপুর / জহিরুল ইসলাম - শুবাচ
বাংলা একাডেমি : ভুলে ভুলে ভরপুর
জহিরুল ইসলাম
‘বাংলা একাডেমী প্রমিত বাংলা ভাষার ব্যাকরণ‘ বইটির ব্যাপারে আমার ব্যক্তিগত মতামত হচ্ছে, এটি একটি প্রবন্ধ-সংকলন মাত্র। বাংলা ভাষায় একটি সম্পূর্ণ ব্যাকরণ বইয়ের দীর্ঘদিনের প্রয়োজনের সামান্যও
এটি পূরণ করতে পেরেছে বলে আমার মনে হয় না। অথচ এটি নিয়ে বাগাড়ম্বরের কোনো কমতি নেই।
আমার যে-কোনো বক্তব্যের বিপক্ষে কেউ গ্রহণযোগ্য যুক্তি দিতে পারলে আমি নিজের ভুল স্বীকার করে নেব। কারণ, হতে পারে আমি এটির অসামান্যতা খুঁজে পাইনি নিজের জ্ঞানের সীমাবদ্ধতার জন্য।
বইটির ‘সম্পাদকীয় ভূমিকা’র মতো গুরুত্বপূর্ণ অংশটির একটি বাক্য : ‘এ কাজে ঝুঁকি আছে, তবু আমরা সাধারণ পাঠকের বোধ্য করার জন্যই নানা পরিভাষাকে কিছুটা স্বচ্ছ করার চেষ্টা করা হয়েছে।’ দুজন সম্পাদকের লেখা বাক্যের এই অবস্থা। বাকিটা অনুমেয়।
মুদ্রণ প্রমাদ? দেড়শো টাকায় ফর্মা দেখা প্রুফ রিডাররা সব ঠিক করে দেবেন? আর ঠিক করার দায়দায়িত্ব শুধুই তাদের? যারা লাখ লাখ টাকা হজম করেন তারা ভুল লিখতেই থাকবেন? অথবা নিজেরা ঠিক করতে পারবেন না?
আর দুয়েকটা জায়গার কথা বলি!
প্রথম খণ্ডের ভূমিকা। পৃষ্ঠা আঠারো। ‘মহাপ্রাণ ধ্বনিগুলি, বিশেষত সঘোষ মহাপ্রাণ ধ্বনি ইউরোপীয় একই কারণে ভাষাগুলিতে অনুপস্থিত।’ কী বুঝলেন বাক্যটিতে? ‘ইউরোপীয় একই কারণে’ মানে কী? ‘ভাষাগুলিতে অনুপস্থিত’ - কোন ভাষাগুলিতে? আরও ভুল আছে বাক্যটিতে। কেউ চ্যালেঞ্জ করুন, বলব।
উৎসর্গ অংশে ‘তাঁদের উদ্দেশ্যে উৎসর্গীকৃত’। ‘উদ্দেশে’ শব্দটার কী হবে?
ছোটবেলায় পড়েছি, ‘যে-শাস্ত্র পাঠ করিলে বাংলা ভাষা শুদ্ধরূপে বলিতে, লিখিতে ও পড়িতে পারা যায় তাহাকে বাংলা ভাষার ব্যাকরণ বলে।’ উচ্চমার্গীয় এই ব্যাকরণ বইটিতে বানানের ব্যাপারে কোনো কথা নেই। বানান ব্যাপারটা তাহলে ব্যাকরণের বাইরের কিছু? তাহলে লোকজন শুদ্ধরূপে লিখিতে শিখিবে কী রূপে?
* প্রথম সংস্করণ থেকে উদ্ধৃতিগুলো নেয়া। এর পরে আর কোনো সংস্করণ বের হয়েছে কি না আমার জানা নেই।
** ফেইসবুকে আমার অনুপস্থিতির ব্যাপারে আমার যেসব বন্ধু প্রশ্ন তুলবেন তাদের কাছে বিনীত ক্ষমাপ্রার্থনা ছাড়া আমার আর কোনো আত্মপক্ষ সমর্থনমূলক বক্তব্য নেই।
সবাই ভালো থাকুন।
Comments
Post a Comment