না যখন হ্যাঁ / ড. মোহাম্মদ আমীন -শুবাচ

না যখন হ্যাঁ

সাধারণভাবে ‘না’ শব্দটি ‘হ্যাঁ’ শব্দের বিপরীত অর্থ প্রকাশ করে। তাই বাংলা ভাষায় ‘হ্যাঁ’ অস্তিবাচক ও ‘না’ নেতিবাচক বা নঞর্থক শব্দ হিসেবে পরিচিত। তবে ‘না’সবসময়
নেতিবাচক নয়। এটি অনেক ক্ষেত্রে অস্তিবাচক শব্দের চেয়েও অধিক ইতিবাচক দ্যোতনা প্রকাশ করে। শুধু তাই নয়, প্রশ্ন ও কারণ জানার ক্ষেত্রেও ‘না’ শব্দের ব্যবহার দেখা যায়। কয়েকটি বাক্য দিয়ে বিষয়টি বুঝানোর চেষ্টা করা হল:
১. চুপ কেন? কিছু বলো না গো।
২. তুমি না বলে চলে যাচ্ছ, এখনও তো দেখতে পাচ্ছি।
৩. প্লিজ, যাবেন না, আর একটু থাকুন।
৪. তিনি যতট না কবি, তার চেয়ে বেশি প্রাবন্ধিক।
৫. যাবে, তাই না?

উপরের বাক্যগুলোয় ব্যবহৃত ‘না’ শব্দটি কোথাও নেতিবাচক নয়, বরং জোরালোভাবে ইতিবাচক। যা ‘হ্যাঁ’ শব্দের চেয়েও অধিক গুরুত্ববহ। তবে প্রথম দুটি বাক্যের সাথে তৃতীয়, চতুর্থ ও পঞ্চম বাক্যের কিছুটা তফাৎ আছে। যেমন; প্রথম ও দ্বিতীয় বাক্য হতে ‘না’ শব্দটি তুলে দিলেও অর্থের কোন পরিবর্তন হবে না। কিন্তু ভাবানুভূতির কিছু পরিবর্তন ঘটবে। অন্যান্য বাক্যগুলো হতে ‘না’ শব্দটি তুলে দিলে অর্থ ও ভাব দুটোই পরিবর্তন হয়ে যাবে। পঞ্চম বাক্য প্রশ্নবোধক মনে হলেও প্রকৃতপক্ষে বাক্যটিতে ‘না’ শব্দটি যুক্ত করে ‘যাওয়া’ ক্রিয়াটিকে অধিকতর নিশ্চিত করার প্রয়াস নিবেদিত। ইংরেজিতে এমন বাক্য ট্যাগ কোয়েশ্চন নামে পরিচিত।

‘না’ শব্দের প্রশ্নবোধক ও কারণজ্ঞাপক ব্যবহার বাংলা ভাষায় বহুল প্রচলিত একটি মনোরম রূপ। ‘না’ এর প্রশ্নবোধক ও কারণজ্ঞাপক অর্থ-প্রকাশক চারটি বাক্য নিচে দেয়া হল:

(ক) দিবস কেন যে এল না, এল না? (কারণার্থক)
(খ) যাবে না কেন? (কারণার্থক)
(গ) সে কী স্কুলে যাইনি? (প্রশ্নজ্ঞাপক)
(ঘ) আমি কী যাব না? (প্রশ্নজ্ঞাপক)

[বিশেষ দ্রষ্টব্য: এ বিষয়ে ফেইজবুক বন্ধুদের আলোচনা ও মন্তব্য-প্রতিমন্তব্য প্রত্যাশা করছি।]

Comments

Popular posts from this blog

উপলক্ষ ও উপলক্ষ্য

পার ও পাড় / ড. মোহাম্মদ আমীন

তৎসম চেনার কৌশল / ড. মোহাম্মদ আমীন