কীর্তিকলাপ / ড. মোহাম্মদ আমীন

কীর্তিকলাপ

‘কীর্তিকলাপ’ শব্দের অর্থ যশোরাশি, কৃতিত্বের পরিচায়কারী ভালো কাজ, কুকীর্তি প্রভৃতি।
‘কীর্তি’ ও ‘কলাপ’ এ দুটি শব্দ মিলে তৈরি হয়েছে কীর্তিকলাপ। `কীর্তি' শব্দের অর্থ যশ,
খ্যাতি, সম্মান, সুনাম প্রভৃতি। আর ‘কলাপ’ শব্দের অর্থ হচ্ছে ময়ূরের ছড়ানো-পেখম।
সুতরাং কীর্তিকলাপ শব্দের ব্যাকরণগত অর্থ হচ্ছে : ময়ূরের পেখমের মতো সজ্জিত
বিচিত্র রঙের কীর্তি। ময়ূরের পেখম সৌন্দর্য ও সম্মানের প্রতীক। তাই কীর্তিকলাপ
শব্দের মূল ও আদি অর্থ ছিল ভালোকাজ, কীর্তিসমূহ, যশ প্রভৃতি। তবে
কীর্তিকলাপ শব্দের সে অর্থ এখন আর নেই। এখন কীর্তিকলাপ বলতে
কুকীর্তিই বুঝায়। কুকীর্তি ময়ূরের পেখমের মতো সজ্জিত না-হলেও
নিজস্ব সজ্জায় যেমন বিচিত্র তেমন অন্য লোকের ব্যাপক আগ্রহ
সৃষ্টি করে। পত্রিকায় কোনও ব্যক্তিবিশেষের কুকীর্তি ছাপা
হলে খাটতি বেড়ে যায় কিন্তু সুকীর্তি ছাপা হলে
কেউ পড়ে না। বঙ্গদেশে মানুষ অন্যের
প্রশংসা শুনতে আগ্রহী নয়, বদনাম বা
কুকীর্তিসমূহ শুনতে আগ্রহী।
এসব কারণে সংস্কৃত সুকীর্তি
(কীর্তিকলাপ) বাংলায় এসে
কীর্তিকলাপ (কুকীর্তি)
অর্থ ধারণ করেছে।

Comments

Popular posts from this blog

উপলক্ষ ও উপলক্ষ্য

পার ও পাড় / ড. মোহাম্মদ আমীন

তৎসম চেনার কৌশল / ড. মোহাম্মদ আমীন