ঢুঁ-মারা / ড. মোহাম্মদ আমীন

ঢুঁ-মারা

‘ঢুঁ-মারা’ শব্দটির আভিধানিক অর্থ খোঁজখবর নেওয়া। কোনরূপ উদ্দেশ্য ব্যতিরেকে কোথাও
যাওয়া প্রভৃতি অর্থ প্রকাশে শব্দটি ব্যবহার করা হয়। যেমন বলা যায় : কোনও কাজ ছিল না,
তবু বাজারে একটু ঢঁ-মেরে এলাম। ঢুষ মারা থেকে ঢুুঁ-মারা বাগ্‌ভঙ্গির উৎপত্তি। এটাকে
গুঁতো মারাও বলা যায়। এবার ঢুষ কে মারে দেখা যাক। গরু-ছাগল, মহিষ
প্রভৃতি গৃহপালিত পশু প্রায়শ সুযোগ পেলেই কোনরূপ ইশারা-ঈঙ্গিত ছাড়াই
হঠাৎ ঢুষ মেরে বসে। গৃহপালিত পশুর ঢুষ মারার কোনও উদ্দেশ্য আসলে থাকে না।
ইচ্ছে হলো এবং সুযোগ পেল ব্যাস,
সঙ্গে সঙ্গে একটা মেরে দিল- এ আর কী! এরূপ ‘ঢুষ মারা’ মূলত গৃহপালিত
পশুর ক্ষণিকের আনন্দ। অন্যকে ঢুষ খেতে দেখলে অনেকে আনন্দ পায়।
মানুষ যখন গরু-ছাগলের ‘ঢুষ মারার’ মতো
উদ্দেশ্যবিহীনভাবে কোথাও যায় কিংবা ঘুরে-বেড়ায় তখন তাকে বলা হয় ঢুঁ-মারা।
গরু-ছাগলের শিং আছে, মহিষেরও শিং আছে। তাই তাদের ঢুষে চন্দ্রবিন্দু নেই।
কিন্তু মানুষের যেহেতু শিং নেই এবং কপালে শিং
লাগানোরও কোনও সুযোগ নেই তাই
বাধ্য হয়ে ঢুঁ-মারা বাগ্‌ঙ্গিতে চন্দ্রবিন্দু
লাগিয়ে গরুছাগলের উদ্দেশ্যবিহীন
কাজটাকে আরও সার্থক
ও একনিষ্ঠ করে
তোলা হয়েছে।

Comments

Popular posts from this blog

উপলক্ষ ও উপলক্ষ্য

পার ও পাড় / ড. মোহাম্মদ আমীন

তৎসম চেনার কৌশল / ড. মোহাম্মদ আমীন