ভাষা গণিত / ড. মোহাম্মদ আমীন

ভাষা-গণিত
একটি রম্য বিশ্লেষণ
উচ্চ-বিধিবদ্ধ সতর্কীকরণ : যাদের বৃদ্ধ পিতা-মাতা, অবিবাহিত বোন ও অতি দরিদ্র নিকটাত্মীয় আছেন তাদের জন্য নিষিদ্ধ।
-------------------------------------------------------------------------------------
শুশ্রূষা শব্দের আভিধানিক অর্থ পরিচর্ষা, সেবা ইত্যাদি।
আবার ‘শ্রবণ করার ইচ্ছা’ বাগ্ভঙ্গিকে এককথায় ‘শুশ্রূষা’ বলা হয় (সংস্কৃতে)।
অর্থাৎ
শুশ্রূষা = পরিচর্ষা ------------------------------------(১)
শুশ্রূষা = সেবা --------------------------------------- (২)
শুশ্রূষা = শ্রবণ করার ইচ্ছা -------------------------- (৩)
সেবা = পরিচর্যা = আদর = সোহাগ, ধাত্রীগিরি -------(৪)
সুতরাং সমীকরণ (১), (২), (৩) ও (৪) হতে পাই
শ্রবণ করার ইচ্ছা = শুশ্রূষা = পরিচর্যা= সেবা= আদর= মমতা= ধাত্রীগিরি।
অতএব ভাষা-গণিত অনুসারে,
কেবল ‘শোনার ইচ্ছা’ থাকলেই হলো; প্রকৃতপক্ষে আর্থিক, শারীরিক বা মানসিকভাবে কারও সেবা, পরিচর্যা, আদর, মমতা, ধাত্রীগিরি না-করেও শ্রবণ করার ইচ্ছা থাকলে ‘শুশ্রূষা’ হয়ে যায়।
হয়তো এজন্য আমরা, অসহায়-আহত বা দরিদ্র মানুষ, বৃদ্ধ-পিতামাতা কিংবা অত্যাচারিতের করুণ আর্তনাদ শুধু ‘শ্রবণ করার ইচ্ছা’ করি মাঝে মাঝে বাধ্য হয়ে শুনে যাই।
শোনার ইচ্ছা = শুশ্রূষা; তাই কোনো কিছু না-করেও, এমনকি না শুনেও কেবল ‘শোনার ইচ্ছা’ থেকে আমরা শুশ্রূষার যশ, অর্থ, সওয়াব, পুণ্য, কর্তব্যপালন সব
কিছু পেয়ে যাই। এ হিসাবে যে কেউ বুড়ো মা-বাবাকে বৃদ্ধাশ্রমে পাঠিয়ে দিয়ে ঘরে বসে পিতা-মাতার ‘কথা শ্রবণের ইচ্ছা’ও শুশ্রূষা দাবি করতে পারেন। পত্রিকায় বিজ্ঞাপন দিতে পারেন, আমরা পিতামাতার শুশ্রূষায় নিযোজিত।
কী মজা!
----------------------------------------------------------------------------------------
[নিম্ন-বিধিবদ্ধ সতর্কীকরণ : গণিত যারা কম জানেন তাঁরা এ পোস্ট থেকে অনুগ্রহপূর্বক কিছু দূরে অবস্থান করবেন। অঙ্ক কষতে গিয়ে নিজে কষে গেলে পোস্টদাতা দায়ী থাকলেও কিছু করতে পারবেন না; অঙ্ক দিয়ে তিনি বেঁচে যাবেন, মাঝখানে ফেঁসে যাবেন আপনি।]

Comments

Post a Comment

Popular posts from this blog

উপলক্ষ ও উপলক্ষ্য

পার ও পাড় / ড. মোহাম্মদ আমীন

তৎসম চেনার কৌশল / ড. মোহাম্মদ আমীন