বাংলা বানানরীতির বর্ণভেদ-১ / শাহিদুল হক

আমরা এ যাবৎ বাংলা বানানের যে নিয়ম অনুসরণ করে এসেছি হালে তার ভিন্নতা পরিলক্ষিত হচ্ছে। বলা হচ্ছে বানানের ভিন্নতা ও বিভ্রান্তি দূর করার মানসে বাংলা বানানের নিয়মগুলোকে সুসংংঘবন্ধভাবে সূত্র গ্রন্থিত করে বাংলা
একাডেমিকর্তৃক “প্রমিত বানানরীতি” প্রবর্তন করা হয়েছে। প্রমিত বানানরীতি ইতোমধ্যে আমাদের হাতে এসে পৌঁছেছে এবং তা সানন্দে চালু রয়েছে। প্রমিত বাংলা বানানের নিয়ম নির্ধারণের এই উদ্যোগকে সঙ্গতকারণেই সকলেই সাধুবাদ জানিয়েছেন। কিন্তু আমি পূর্বোক্ত নিয়মের সাথে বাংলা একাডেমিকর্তৃক চূড়ান্তভাবে নির্ধারিত বানানরীতির পার্থক্য নির্ণয় করতে গিয়ে খেই হারিয়ে ফেলছি। বাংলা বানানের সমতাবিধানের এই চেষ্টা ও সংস্কারের ফলে আমার কাছে মনে হচ্ছে আমি মনে হয় পুরোপুরি বিশৃঙ্খলার মধ্যে ঢুকে পড়ছি। আমার কাছে মনে হচ্ছে, অবৈজ্ঞানিকপন্থায় নির্ধারিত এ বানানরীতি রীতিমতো আরও জটিলতার সৃষ্টি করেছে। বাংলার স্বরূপকে বিকৃত করা হয়েছে। উচ্চারণের ভিত্তিগুলোকে উপড়িয়ে ফেলা হয়েছে অথবা তুচ্ছ তাচ্ছিল্য করা হচ্ছে। বর্ণের নিজস্ব মর্যাদাকে ক্ষুন্ন করা হয়েছে। এত সব মনে করার কারণগুলো গ্রন্থিত করার পূর্বে তা বিজ্ঞজনদের নিকট থেকে সঠিকরূপ জেনে নেওয়াটা শ্রেয় মনে করছি। যদিও আমি প্রমিত বানানরীতি প্রয়োগ করার চেষ্টা অব্যাহত রেখেছি তথাপি পুরোপুরি আত্মস্থ করার চেষ্টা করাটা মোটেও দোষণীয় নয়। মূলত বলতে দ্বিধা নেই যে, আমি বাংলা বানান সম্পর্কে তেমন কিছুই জানি না। এটা জানার প্রয়াসমাত্র। কেননা, আমাকে যে নিয়মটি শুদ্ধ বলে হাতে ধরিয়ে দেওয়া হচ্ছে সে সম্পর্কে পুরোপুরি না জেনে গ্রহণ করতে গেলে খটকা লাগে বৈ কি। এটা কেন শুদ্ধ, ওটা কেন অশুদ্ধ না জানলে তো শিক্ষাগ্রহণ হলো না। তাই আমি শুদ্ধ বানানরীতিসম্পর্কে বিস্তারিত জানার জন্য কয়েকটি বিষয়ে প্রিয় বন্ধুদের সাথে শেয়ার করছি। জানা থাকলে দয়া করে আমাকে জানিয়ে বাধিত করবেন। যদি আমার আশঙ্কা ঠিক থাকে তবে ইনশাআল্লাহ “ বাংলা বানানরীতির বর্ণভেদ” নামক একটা বইয়ের জন্ম দিতে আমি সক্ষম হবো।  তার আগে দেখা যাক কে কী বলেন:
১। অসংস্কৃত শব্দে র/ ষ এর পরেও ‘ন’ হবে। কিন্তু কেন হবে এটা আমার জানা দরকার। ধারণ-এ ণ হলেও ধরন-এ কেন ন লিখতে হবে? কারণে ণ হলে করেন-এ ন কেন?
২। র/ষ এর পূর্বে বা পরে কি জিভ দন্ত্য-ন উচ্চারণ করতে পারে?
৩। বিদেশি শব্দে মূল উচ্চারণ অনুসারে “এসটি” স্থানে ‘ষ্ট’ এর পরিবর্তে ‘স্ট’ লিখতে হবে। যেমন: মাস্টার,রেজিস্টার, ডাস্টার ইত্যাদি।
মূলত এখানেও সেই একই প্রশ্ন: কেন এই পরিবর্তন? আমাদের তাতে সুবিধা কী হলো? ট-বর্গের পূর্বে কি জিভ দন্ত্য-স উচ্চারণ করতে সক্ষম?
এ বিষয়ে কেউ জানলে দয়া করে জানালে উপকৃত হবো।
চলবে-

Comments

Popular posts from this blog

উপলক্ষ ও উপলক্ষ্য

পার ও পাড় / ড. মোহাম্মদ আমীন

তৎসম চেনার কৌশল / ড. মোহাম্মদ আমীন