নিউটনের ছাত্রী/ গ্রন্থ ভূমিকা

পাঠক যদি একই সঙ্গে উপন্যাসের চরিত্র হয়ে যায়, তাহলে কেমন লাগবে? এই উপন্যাসে এমনটি ঘটার সম্ভাবনা রয়েছে। উপন্যাসের নায়ক গোপাল। কোনো নায়িকা নেই। আমি জানি না গোপাল এখন

কোথায়। এটাও জানি না, মার্কিন গবেষক ও মিশনারি দলের সঙ্গে চলে যাবার পর তার আগের নাম বহাল আছে কি না। থাকার কথা নয়, তবে থাকতেও পারে।
সেই ১৯৯১ খ্রিষ্টাব্দ, এখন ২০১৮। পঁচিশ বছর গোপালের সঙ্গে দেখা নেই। গোপালের কথা মনে পড়লে শুধু চোখে ভাসে মাটিতে গড়াগাড়ি আর প্রথম দিনের মেথর-ছড়াটি। এতদিন পর দেখলেও চিনতে পারব বলে মনে হয় না। অবশ্য সে আমাকে দেখলে চিনতে পারবে।

মেধাবীদের স্মরণশক্তি সবদিকে প্রখর।
যত বার আমেরিকা গিয়েছি ততবার মনে পড়েছে গোপালের কথা। ইচ্ছে করত আমেরিকার সব ইউনিভার্সিটি খুঁজে মেথরের ছেলে শিশু গোপালের মুখটা একটু দেখি, কিন্তু এটি সম্ভব ছিল না। গুগুলে সার্চ দিলে অনেক গোপাল আসে-- হাজার হাজার। কিন্তু আমার গোপাল আসে না। আমার গোপাল শিশু গোপাল, দাড়িমোজহীন কৃষ্ণ গোপাল। গুগুলের সব গোপাল দাড়িমোজে একাকার।
কীভাবে চিনব? সপ্তম শ্রেণির ছাত্র গোপালের চেহারা গুগুলে নেই। এখন গোপালের বয়স চল্লিশ ছাড়িয়ে। প্রাইমারি স্কুলে ভর্তির সময় প্রধান শিক্ষক গোপালের জন্ম তারিখ লিখেছিলেন ১৯৭৯ খ্রিষ্টাব্দের ৩০ ডিসেম্বর। যদিও গোপালের প্রকৃত জন্মবর্ষ ১৯৭৬ খ্রিষ্টাব্দ। চল্লিশে চেহারা দেখে ষোল বছরের গোপালকে পক্ষে খুঁজে নেওয়া সম্ভব নয়। এমনকি সামনে দাঁড়ালেও।
নন্দীর হাট ছেড়ে আসার সময় গোপালকে একটা কলম দিয়েছিলাম। পার্কার। আকিদের বাবা মুহিবুল কাদের চৌধুরী কলমটি দিয়েছিলেন। আমি জানি না, গোপালের কাছে কলমটি আছে কি না।
সুপ্রিয় পাঠক, আমেরিকায় গোপাল নামের কারো সঙ্গে দেখা হলে, ১৯৭৬ খ্রিষ্টাব্দে জন্ম হলে জিজ্ঞেস


করবেন আমাকে চেনে কি না। যদি বলে চিনে, তাহলে আমাকে খবর দেবেন। আমি গোপালের মুখটা দেখতে চাই। দেখতে চাই গোপাল কত বড়ো হয়েছে। কেমন হয়েছে তার অবয়ব, কণ্ঠের স্বর, চোখের নাচন এবং ইচ্ছার পাতন।
মেধাবীদের স্মরণশক্তি সবদিকে প্রখর।
যত বার আমেরিকা গিয়েছি ততবার মনে পড়েছে গোপালের কথা। ইচ্ছে করত আমেরিকার সব ইউনিভার্সিটি খুঁজে মেথরের ছেলে শিশু গোপালের মুখটা একটু দেখি, কিন্তু এটি সম্ভব ছিল না। গুগুলে সার্চ দিলে অনেক গোপাল আসে-- হাজার হাজার। কিন্তু আমার গোপাল আসে না। আমার গোপাল শিশু গোপাল, দাড়িমোজহীন কৃষ্ণ গোপাল। গুগুলের সব গোপাল দাড়িমোজে একাকার।
কীভাবে চিনব? সপ্তম শ্রেণির ছাত্র গোপালের চেহারা গুগুলে নেই। এখন গোপালের বয়স চল্লিশ ছাড়িয়ে। প্রাইমারি স্কুলে ভর্তির সময় প্রধান শিক্ষক গোপালের জন্ম তারিখ লিখেছিলেন ১৯৭৯ খ্রিষ্টাব্দের ৩০ ডিসেম্বর। যদিও গোপালের প্রকৃত জন্মবর্ষ ১৯৭৬ খ্রিষ্টাব্দ। চল্লিশে চেহারা দেখে ষোল বছরের গোপালকে পক্ষে খুঁজে নেওয়া সম্ভব নয়। এমনকি সামনে দাঁড়ালেও।
নন্দীর হাট ছেড়ে আসার সময় গোপালকে একটা কলম দিয়েছিলাম। পার্কার। আকিদের বাবা মুহিবুল কাদের চৌধুরী কলমটি দিয়েছিলেন। আমি জানি না, গোপালের কাছে কলমটি আছে কি না।
সুপ্রিয় পাঠক, আমেরিকায় গোপাল নামের কারো সঙ্গে দেখা হলে, ১৯৭৬ খ্রিষ্টাব্দে জন্ম হলে জিজ্ঞেস করবেন আমাকে চেনে কি না। যদি বলে চিনে, তাহলে আমাকে খবর দেবেন। আমি গোপালের মুখটা দেখতে চাই। দেখতে চাই গোপাল কত বড়ো হয়েছে। কেমন হয়েছে তার অবয়ব, কণ্ঠের স্বর, চোখের নাচন এবং ইচ্ছার পাতন।
ভূমিকা উপন্যাসের সারসংক্ষেপ নয়, লেখকের অকথিত কথার বিশুদ্ধ রূপ। লেখক যে কথা উপন্যাসে বলতে পারেন না, বা কৌশলগত কারণে বলা সম্ভব হয় না, ভূমিকা সেটি সংক্ষেপে তুলে ধরেন। তাই ভূমিকা পড়লে পাঠক উপন্যাসের বাইরেও একটি বিষয় সম্পর্কে জ্ঞাত হতে পারেন। সেটি হচ্ছে উপন্যাসের ইতিহাস। লেখকের তাড়নার উৎস। উপন্যাস জীবন-কাহিনির সুপ্ত কথামালার শৈলী প্রকাশ। এখানে লেখক নিজের মনের ইচ্ছা মিশিয়ে কল্পনাকে বাস্তবতার এবং বাস্তবতাকে কল্পনার শৈলী ঢালায় উপস্থাপন করেন। এটাই সাহিত্য। তাই উপন্যাস হচ্ছে বাস্তবতা আর কল্পনার মিলনে সৃষ্ট এক পরাবাস্তব প্রকৃতি। এই উপন্যাসের ক্ষেত্রেও এটি সত্য। চরিত্রগুলিকে যথাসম্ভব তাদের ক্ষেত্রে সঞ্চারিত ক্ষেত্রে নিয়োজিত রাখার চেষ্টা করেছি। দীর্ঘ দিন পর অনেকের নাম ভুলে গিয়েছিলাম। তাই উপন্যাসের অন্যতম চরিত্র সেলিম ও আনোয়ার মাসুমকে মোবাইল করে নাম জেনে নিতে হয়েছে।

গোপাল আমার চোখের সামনে নেই। এই উপন্যাসে গোপাল বেঁচে থাকবে। হয়তো কোনোদিনও চোখেও পড়ে যেতে পারে বইটি। সে আশায় রইলাম। আর একটা কথা। এরমধ্যে যদি কোনোভাবে গোপালের দেখা হয়ে যায়, তাহলে বইয়ের পরবর্তী সংস্করণে আর একটা অধ্যায় বাড়ব।

Comments

Popular posts from this blog

উপলক্ষ ও উপলক্ষ্য

পার ও পাড় / ড. মোহাম্মদ আমীন

তৎসম চেনার কৌশল / ড. মোহাম্মদ আমীন