মুহ্যমান ও ম্রিয়মাণ / ড. মোহাম্মদ আমীন - শুবাচ
মুহ্যমান ও ম্রিয়মাণ
দুটো বহুল ব্যবহৃত শব্দ : মুহ্যমান ও ম্রিয়মাণ প্রথমটিতে ন এবং দ্বিতীয়টিতে ণ ৷
‘মোহ্যমান’ বানানটিই ব্যাকরণগতভাবে শুদ্ধ। ‘মুহ্যমান’ হচ্ছে ‘মোহ্যমান’ শব্দের অশুদ্ধ বানান কিন্তু এ বানানটি বহুল প্রচলিত। এরূপ অশুদ্ধ বানানের শব্দগুলো ‘অশুদ্ধ কিন্তু প্রচলিত’ শব্দ হিসেবে অভিধানে স্থান পেয়েছে।
ধন্যবাদ। ঠিক বলেছেন জনাব মুস্তফা কামরুল আখতার। বাংলা ভাষায় এমন কিছু শব্দ আছে যেগুলো সংস্কৃত ব্যাকরণের নিয়মানুসারে অশুদ্ধ। মূলত সংস্কৃত ব্যাকরণের ভুল প্রয়োগ, বাংলা ভাষার নিজস্ব বৈশিষ্ট্য, জীবন্ত ভাষার প্রয়োজন, অন্য শব্দের সাদৃশ্য বা প্রভাব অথবা লেখকগণের কারণে নানাভাবে শব্দগুলো গঠিত হয়। এর মধ্যে কিছু কিছু শব্দ বাংলা কথ্য ও লিখিত চলমান ভাষায় প্রবল প্রতাপে নিজেদের স্থান করে নিয়েছে। যে সকল শব্দ কবি-সাহিত্যিক ও শিক্ষিত ব্যক্তিবর্গের লেখায় কিংবা মুদ্রিত পত্র-পত্রিকা ও গ্রন্থে স্থান করে নিয়েছে সে সকল শব্দের ব্যবহার ব্যাপকভাবে বৃদ্ধি পায়। ব্যাকরণের স্বীকৃতি হয়ত শব্দগুলো পায় না কিন্তু চলমান/ জীবন্ত ভাষার সঙ্গে তাল মিলিয়ে চলতে গিয়ে অভিধানকারেরা শব্দগুলোকে স্বীকৃতি না দিয়ে পারেন না। এরূপ শব্দগুলোকে সম্মান দেয়ার জন্য অভিধানকারেরা প্রথমে ব্যাকরণের সমর্থন খোঁজেন। না পেলে শব্দগুলোকে অভিধানে অশুদ্ধ অথচ প্রচলিত হিসেবে স্থান দিয়ে দেন। এভাবে শব্দগুলো যে, শুধু অভিধানে স্থান করে নেয়, তাই না অনেক ক্ষেত্রে এগুলোর ব্যবহারের ব্যাপকতার কাছে ব্যাকরণসম্মত শুদ্ধ রূপটিও হারিয়ে যাবার শঙ্কায় থাকে।
লত একটি বিষয় মাথায় রাখলে মুহ্যমানে দন্ত্য-ন এবং ম্রিয়মাণে কেন মূর্ধন্য-ণ লিখতে হবে তা জানা যাবে। মিরিয়মাণের শব্দগুলো লক্ষ করুন। র-য়ের পরে য় ও ম রয়েছে। দুটোই স্বচ্ছ বিধায় এর পরে মূর্ধন্য-ণ হবে। যেমন আয়ন শব্দের পূর্বে যদি র বা ষ থাকে তবে আয়নের দন্ত্য-ন টা মূর্ধন্য-ণ হয়ে যাবে। যেমন- রামায়ণ। কিন্তু রসায়নে আবার দন্ত্য-ন। ঐ একই কারণ। তেমন- মূহ্যমানের কোথাও র বা ষ না থাকায় শেষের দন্ত্য-ন মূর্ধন্য-ণ হচ্ছে না। এ বিষয়ে আমি একটা ছড়া পোস্ট করার চেষ্টা করব।
শ্রদ্ধেয় কামরুল আখতার ভাই# মূলত মুহ্যমান শব্দটির ঠিক বানান মোহ্যমান হবে। যার অর্থ- মোহের মধ্যে যে রয়েছে। আর ম্রিয়মাণ-যা মরে যাচ্ছে বা মুমূর্ষু।
‘মোহ্যমান’ বানানটিই ব্যাকরণগতভাবে শুদ্ধ। ‘মুহ্যমান’ হচ্ছে ‘মোহ্যমান’ শব্দের অশুদ্ধ বানান কিন্তু এ বানানটি বহুল প্রচলিত। এরূপ অশুদ্ধ বানানের শব্দগুলো ‘অশুদ্ধ কিন্তু প্রচলিত’ শব্দ হিসেবে অভিধানে স্থান পেয়েছে।
Comments
Post a Comment