শুদ্ধ বানান / ড. মোহাম্দ আমীন - শুবাচ

অশুদ্ধ =====শুদ্ধ
অগ্নি পরীক্ষা <অগ্নিপরীক্ষা
অতিথি পরায়ণ < অতিথিপরায়ণ
অপ্রাপ্ত বয়স্ক <অপ্রাপ্তবয়স্ক
অদ্ভুত দর্শন < অদ্ভুতদর্শন
অধর চুম্বন < অধরচুম্বন
অবকাশ যাপন < অবকাশযাপন
অভাব অভিযোগ< অভাবঅভিযোগ
অভাব মোচন< অভাবমোচন
অনন্য বৃত্তি< অনন্যবৃত্তি
অনন্য দৃষ্টি < অনন্যদৃষ্টি
অগ্নি নিরোধক< অগ্নিনিরোধক

চোখ বুলিয়ে নিই,
অনেক সময় ভুল হয়ে যায় বানানে :
================
অশুদ্ধ- - - - শুদ্ধ
অন্তঃস্থ - - - -অন্তস্থ;
অন্যমনষ্ক - - অন্যমনস্ক;
অপরাহ্ন - - অপরাহ্ণ;
অপেক্ষমান- -অপেক্ষমাণ;
অবিহিত- - -অভিহিত;
অভিপ্স- ----অভীপ্সা;
অর্থ বৎসর- অর্থবৎসর;
অর্ধন্মাদ- - - -অর্ধোন্মাদ;
অস্তমান- -- অস্তায়মান
আস্তাকুড়- - - আঁস্তাকুড়


অশুদ্ধ - - - - - - - - শুদ্ধ
অংশীদারিত্ব - - - - - - অংশীদারত্ব
অকালপক্ক - - - - - - অকালপক্ব;
অগ্রীম - - - - - - - - অগ্রিম
অতিষ্ট - - - - - - - - অতিষ্ঠ
অনু-পরমাণু - - - - - - অণু-পরমাণু
অচিন্ত্যনীয় - - - - - - - অচিন্তনীয়;
অঙ্গুলী - - - - - - - - - অঙ্গুলি (কিন্তু আঙুল, আঙুলি নয়)।
অধ্যায়ন - - - - - - - - অধ্যয়ন
অনিন্দসুন্দর - - - - - - - অনিন্দ্যসুন্দর;
অনুমান নির্ভর - - - - - - অনুমাননির্ভর;

বাম পাশে অশুদ্ধ ও ডান পাশে শুদ্ধ বানান দেওয়া হল:
অংশীদারিত্ব -অংশীদারত্ব
অগ্রহায়ন -অগ্রহায়ণ
অগ্রীম –অগ্রিম
রাজনৈতিক- রাজনীতিক
অর্থনৈতিক- আর্থিক


ভুল শুদ্ধ
মাধুর্যতা মাধুর্য
দৈন্যতা দৈন্য/দীনতা
সৌজন্যতা সৌজন্য
দারিদ্রতা দারিদ্র্য
সখ্যতা সখ্য
কার্পণ্যতা কার্পণ্য
সৌহৃদ্যতা সৌহৃদ্য


প্রচলিত ভুল-------------------- শুদ্ধ
আভ্যন্তরীন-------- -----------অভ্যন্তরীণ।
আধুনিকা ---------- -------- আধুনিকী
অগ্রসরমান------------------- অগ্রসর।
অধীনস্থ---------------------- অধীন
অস্তমান----------- ----------অস্তায়মান
আষ্টেপৃষ্ঠে------------------- অষ্টেপৃষ্ঠে


বানান ও অর্থে কয়েকটি সংশয়াবৃত শব্দ

অনুবাদিত: যা অন্যকে দিয়ে অনুবাদ করানো হয়েছে।
অনূদিত: যা নিজে অনুবাদ করা হয়েছে।

পরিণত: যা পরিণতি-প্রাপ্ত হয়েছে।
পরিণীত: যার পরিণয় অর্থাৎ বিয়ে হয়েছে।

লিখিত: যা লেখা হয়েছে।
লেখিত: যা লেখানো হয়েছে।

বিকৃত: বিকার ঘটেছে যার।
বিক্রিত: যা বিক্রি হয়ে গেছে।

কৃত: যা করা হয়েছে।
ক্রীত: যা ক্রয় করা হয়েছে।

অশুদ্ধ শুধ্ধ
অশ্রুজল অশ্রু/জল
অদ্যাপিও অদ্যাপি
সময়কাল সময়
সুস্বাগত স্বাগত
শুধুমাত্র শুধু/মাত্র
সর্বপ্রথম প্রথম
কেবলমাত্র কেবল/মাত্র
সুস্বাস্থ্য স্বাস্থ্য
আয়ত্তাধীন আয়ত্ত/অধীন
আরক্তিম আরক্ত/রক্তিম
বিবিধপ্রকার বিবিধ

কয়েকটি ভুল বাক্য শুদ্ধ করে দেখানো হল:

অশুদ্ধ: ভদ্র লোক আমাকে ভাল ভাবে চিনতে পারলেন না।
শুদ্ধ: ভদ্রলোক আমাকে ভালভাবে চিনতে পারলেন না।

অশুদ্ধ: সরকার স্বাধীনতা যুদ্ধে শহিদ বিমান কর্মীদের একটি তালিকা প্রস্তুত করেছেন।
শুদ্ধ: সরকার স্বাধীনতাযুদ্ধে শহিদ বিমানকর্মীদের একটি তালিক প্রস্তুত করেছেন।

অশুদ্ধ: আহমদ ছফা ১৯৪৩ সালের ৩০ জুন জন্ম গ্রহণ করেন।
শুদ্ধ: আহমদ ছফা ১৯৪৩ খ্রিস্টাব্দের ৩০ জুন জন্মগ্রহণ করেন।

অশুদ্ধ: বাংলাদেশী লেখক আহমদ ছফা ২০০১ খ্রিষ্টব্দের ২৮ জুলাই মৃত্যু বরণ করেন।
শুদ্ধ: বাংলাদেশি লেখক আহমদ ছফা ২০০১ খ্রিস্টাব্দের ২৮ জুলাই মৃত্যবরণ করেন।


অশুদ্ধতেও মুগ্ধ যখন, কী আর করা যাবে তখন!



বাংলা ভাষায় এমন কিছু শব্দ আছে যেগুলো সংস্কৃত ব্যাকরণের নিয়মানুসারে অশুদ্ধ। সংস্কৃত ব্যাকরণের ভুল প্রয়োগ, বাংলা ভাষার নিজস্ব বৈশিষ্ট্য, জীবন্ত ভাষার প্রয়োজন, অন্য শব্দের সাদৃশ্য বা প্রভাব অথবা লেখকগণের কারণে নানাভাবে শব্দগুলো গঠিত হয়েছে। যে সকল শব্দ কবি-সাহিত্যিক ও শিক্ষিত ব্যক্তিবর্গের লেখায় কিংবা মুদ্রিত পত্র-পত্রিকা ও গ্রন্থে স্থান করে নেয় সে সকল শব্দের ব্যবহার ব্যাপকভাবে বৃদ্ধি পায়। ব্যাকরণের স্বীকৃতি হয়ত শব্দগুলো পায় না কিন্তু জীবন্ত ভাষার সঙ্গে তাল মিলিয়ে চলতে গিয়ে অভিধানকারেরা শব্দগুলোকে স্বীকৃতি দিয়ে দেন। এরূপ শব্দগুলোকে অভিধানকারেরা অভিধানে অশুদ্ধ অথচ প্রচলিত হিসেবে স্থান দিতে কুণ্ঠিত হন না। এভাবে শব্দগুলো যে, শুধু অভিধানে স্থান করে নেয় তাই নয়; অনেক ক্ষেত্রে এগুলোর ব্যবহারের ব্যাপকতার কাছে ব্যাকরণসম্মত শুদ্ধ রূপটিও হারিয়ে যাবার শঙ্কায় থাকে। এমন কিছু অশুদ্ধ অথচ প্রচলিত শব্দের তালিকা এখানে দেয়া হল। প্রমিত বানানে শুদ্ধ রূপটি লেখা বিধেয়। শুদ্ধ রূপটি প্রথম বন্ধনীর মধ্যে দেয়া হয়েছে।
অগ্রসরমান (অগ্রসর), অতলস্পর্শী (অতলস্পর্শ), অধীনস্থ (অধীন), অশ্রুজল ( অশ্রু) আধুনিকা (আধুনিকী), আভ্যন্তরীন (অভ্যন্তরীন), আহরিত (আহৃত), ইতিপূর্বে ( ইতঃপূর্বে), ইতিমধ্যে (ইতোমধ্যে), উপরোক্ত (উপর্যুক্ত), একত্রিত (একত্র/ একত্রীভূত), কেবলমাত্র (কেবল/মাত্র), চলমান (চলৎ/ চলন্ত), দিবারাত্রি (দিবারাত্র), নিরপরাধী (নিরপরাধ), নিরহংকারী (নিরহংকার), নিরোগী (নিরোগ), নির্দোষী ( নির্দোষ), নির্বিরোধী (নির্বিরোধ), বাহ্যিক (বাহ্য), পাশবিক ( পাশব), মুহ্যমান (মোহ্যমান), সংস্কৃতিবান (সংস্কৃতিমান), সকাতরে (কাতরে), সকৃতজ্ঞ (কৃতজ্ঞ), সমতুল্য (সম/তুল্য), সমসাময়িক (সামসময়িক), সলজ্জিত (সলজ্জ) ইত্যাদি।
ইদানীং অনেকগুলো প্রচলিত-অশুদ্ধ শব্দের ব্যবহার কয়েক বছরে অনেক হ্রাস পেয়েছে। যেমন: অগ্রসরমান (অগ্রসর), অধীনস্থ (অধীন), অশ্রুজল ( অশ্রু), ইতিপূর্বে ( ইতঃপূর্বে), ইতিমধ্যে (ইতোমধ্যে), উপরোক্ত (উপর্যুক্ত),নিরপরাধী (নিরপরাধ), নিরহংকারী (নিরহংকার), নিরোগী (নিরোগ), নির্দোষী (নির্দোষ), সকৃতজ্ঞ (কৃতজ্ঞ) প্রভৃতি।

Comments

  1. শিরোনামে লেখকের নামের বানান ভুল!

    ReplyDelete
  2. ভালো লাগলো। উপকৃত পোস্ট।

    ReplyDelete
  3. খুবই ভালো একটি পোস্ট, জেনে উপকৃত হলাম!

    ReplyDelete
  4. ড. মোহাম্দ আমীন স্যার শুদ্ধ বানান সম্পর্কে বিস্তারিতভাবে আলোকপাত করেছেন বলে শিক্ষার্থীগণ সঠিকভাবে উপকৃত হয়েছে-এজন্য আমার পক্ষ থেকে অশেষ ধন্যবাদ। এছাড়াও বাংলা একাডেমীর শুদ্ধ বানান সমূহ আয়ত্ত করলে বাংলা শুদ্ধ বানানে পরিপূর্ণতা আসবে-তাহলে দেখুন্-http://bit.ly/2s7OcPj

    ReplyDelete

Post a Comment

Popular posts from this blog

উপলক্ষ ও উপলক্ষ্য

পার ও পাড় / ড. মোহাম্মদ আমীন

হিসাব আর হিসেবে / ড. মোহাম্মদ আমীন - শুবাচ