দশচক্রে ভগবান ভূত / তাহের আলমাদি -শুবাচ


           ভগবানকে চিনি আমরা, তিনি ঈশ্বর না হলেও ক্ষমতায় কম যান না৷ কিন্তু ভূত হলেন কিভাবে সেটাই বলি৷
প্রথমে ভগবানের পরিচয় বলি৷ বিষ্ণুপুরাণে বলা হয়েছে, “যিনি পরম ঐশ্বর্য, বীর্য, যশ, শ্রী, জ্ঞান ও বৈরাগ্য গুনযুক্তা তিনিই ভগবান”৷ এখানে নির্গুনা-পরাব্রহ্মা, হিরণ্যগর্ভা, পরমাত্মা, ভগবান এছাড়া সচ্চিদানন্দ, পরমপুরুষ, ঈশ্বরের গুণ কে মানব কল্যাণের উপর ভিত্তি করে ৬ টি ভাগে ভাগ করা হয়েছে।
এছাড়া সংস্কৃত অভিধানে “ভগবান” এর “ভগ” শব্দের অর্থ – Fortune, Wealthy, Prosperity, Blessed. যেখানে-
Fortune= শ্রী;
Wealthy= ঐশ্বর্য;
Prosperity= বীর্য+যশ;
Blessed= জ্ঞান+বৈরাগ্য৷
অর্থ্যাৎ তিনিই ভগবান যিনি মানব কল্যাণের জন্য শ্রী দাতা, সকল ঐশ্বর্য দাতা, সকল প্রকার জ্ঞান দাতা, সকল প্রকার বীর্য ও যশ দাতা, যিনি সর্বদা ভোগ বিষয়ে অনাসক্ত (বৈরাগ্য) তিনিই ভগবান৷
ভূত মানে কী?
এক) উপাদান, উপকরণ৷ পৃথিবী পঞ্চভূতে তৈরি৷ 
ভগবানকে মানুষ কখনো দেখেন নি, কিন্তু সেই মানুষই ভগবানের মূর্তি গড়লেন, অর্থাৎ ভগবানকে ভূত (উপাদান) বানালেন৷ এরই নাম দশচক্রে ভগবান ভূত৷
দুই) প্রেতাত্মা৷ 
ভগবানের মতো আত্মাও আমরা দেখি না, কিন্তু অদৃশ্য বা অলৌকিক কর্মকাণ্ডকে আমরা আত্মা বা ভগবানের কাজ মনে করি৷ যে সকল আত্মা ভয়াল ও ক্ষতিকর কর্মকাণ্ড করে সে গুলোকে বলি প্রেতাত্মা৷ ভগবান আর প্রেতাত্মার কাজকে ঘুলিয়ে ফেলেই মানুষ ভগবানকে ভূত বানিয়েছে, অথচ বেচারা ভগবান কিছু সদ্গুন ব্যতিরেকে অসদ্গুন ধারণ করেন না৷ এই জন্যই বলি দশচক্রে ভগবান ভূত৷
[কাউকে আঘাত করা উদ্দেশ্য নয়]

Comments

Popular posts from this blog

উপলক্ষ ও উপলক্ষ্য

পার ও পাড় / ড. মোহাম্মদ আমীন

হিসাব আর হিসেবে / ড. মোহাম্মদ আমীন - শুবাচ